মলমিশ্রিত হাঁটু পানিতে দুর্ভোগ চরমে

আউয়াল খাঁন, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১২ জুলাই ২০১৭, ১৩:৩৯

বৃষ্টির পানি নামতে পারছে না যেসব এলাকা থেকে তার একটি তেজগাঁওয়ের কুনিপাড়া। বৃষ্টি ঝরলেই পানি বাড়ে। এক পর্যায়ে রাস্তা, বাড়ির আঙ্গিনা, সবই এখন পানির নিচে, কারও কারও ঘরেও ঢুকেছে পানি।

নগরীর এই এলাকাটায় পয়ঃনিষ্কাষণ ব্যবস্থা অতটা আধুনিক নয়। ফলে সেখানে পানি জমা এক দুঃসহ যন্ত্রণার নাম। কারণ, চোখের সামনে দিয়ে মানুষের মল ভেসে যাওয়া দেখা কঠিন। অথচ কুনিপাড়ার মানুষদের এটা দেখতে হচ্ছে গত তিন দিন ধরেই।

কেবল মল মুত্র নয়, ওই এলাকায় বিভিন্ন লেদ কারখানা ও অন্যান্য নানা প্রতিষ্ঠানের বর্জ্যও মিশছে এই পানিতে। আর এদে দূষণ ছড়িয়ে যাচ্ছে লোকালয়ে।

মুদি দোকা‌নি সুলতান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘রাস্তা থেইকা দোকান এক ফুট উচা, তারপরেও গতকাল বৃ‌ষ্টির সময় দোকানে পা‌নি উঠছে। এই পানিতে আবার মানুষের মল ভাইস্যা যা। ঘেন্নায় গা গুলায়া উঠে।’

পানি জমে থাকায় ভাঙা রাস্তা দেখা যায় না। ফলে পথচারী বা রিকশা আরোহীরা গর্তে পড়ে নোংরা পানিতে ভিজে যাচ্ছে প্রায়ই। কেউ কেউ আবার পড়লে নালার ভেতর।

মধ্য কু‌নিপাড়া গ‌লিতে গিয়ে সবুজ বর্ণের দুর্গন্ধযুক্ত পানি দেখা যায়। সড়কের নালার খোলা মুখে বাঁশ বা লম্বা কাঠ দিয়ে সংকেত দেয়া আছে, যেন মানুষ এর পাশ কেটে যায়।

বা‌ড়িওয়ালা আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমার বা‌ড়ির নিচ তলায় পা‌নি উঠে। ময়লা পা‌নি তার উপ‌রে পাশের কারখানার বিষগুলা এই ড্রেন দিয়াই যায়। দেখসেন পা‌নি কত কালা আর পচা গন্ধ’।

‌স্থানীয়দের অভিযোগ, এই এলাকায় আগে পানি জমতো না। কিন্তু হাতিরঝিল হওয়ার পর থেকে এই দুর্ভোগ প্রতি বছর হয়। তবে এবার বৃষ্টি যেহেতু বেশি, সমস্যাও বেশি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই এলাকার নালাগুলো সিটি করপোরেশন নিজে থেকে পরিষ্কার করে না খুব একটা। এ কারণে পানি নামতে সময় লাগে বেশি।

স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘সি‌টি করপোরেশনরে ডাকলে পাওয়া যায় না। তাই বাধ্য হইয়া সি‌টি করপোরেশনের লোকেরেই টেকা দিয়া কন্টাক ক‌রি। ডেরেনডা পরিষ্কার না করলে পানি ১০ ‌দিনেও নামে না।’

তেজগাঁও এলাকায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের পরিচালনা করেন বাবলু নামে একজন। তিনি নিজেও কর্মীদের টাকার বিনিময়ে কাজ করার কথা স্বীকার করেন। ঢাকাটাইমসকে তিনি বলেন, ‘কন্টাকে কাজ বুঝে ৫০০ থাইক্যা এক হাজার টাকা দিবেন ক‌ইরা দিমু। এইটা করপোরেশন জানে না। নাইলে করপোরেশনে জানাইবেন তারা ব্যবস্থা কর‌ব। তখন আমাগো চা পানের য‌দি কিছু দেন ওইডা আপনার ইচ্ছা।’

মানুষের এই দুর্ভোগ আবার কারও কারও বাড়তি আয়ের পথ করে দিয়েছে। এদের একজন কবির হোসেন। তিনি ভ্যানে করে সব‌জি বি‌ক্রি করেন। তবে বৃষ্টিতে তিনি নতুন পেশা বেছে নিয়েছেন। সবজি বিক্রির চেয়ে সেখানে লাভ বেশি। কবির এখন মানুষকে পানির নিচে থাকা রাস্তা তার ভ্যানে করে পার করে দেন আর জনপ্রতি আদায় করেন ১০ টাকা করে। এভাবে দিনভর তার আয় অনেক।

ঢাকাটাইমস/১২জুলাই/এএকে/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজধানী বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :