৫৭ ধারা নাগরিক নিরাপত্তা, নারীর সম্মানের জন্য: ইনু

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১২ জুলাই ২০১৭, ১৯:৪০ | প্রকাশিত : ১২ জুলাই ২০১৭, ১৯:২৪

তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা করার উদ্দেশ্য সাংবাদিকদের বা গণমাধ্যমের জন্য করা হয়নি বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। তিনি বলেন, ‘এটা ডিজিটাল নিরাপত্তার জন্য করা হয়েছে, নাগরিক নিরাপত্তার জন্য করা হয়েছে, নারীর সম্মানের জন্য করা হয়েছে, শিশুর নিরাপত্তার জন্য করা হয়েছে, রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য করা হয়েছে এবং ডিজিটাল প্লেসের নিরাপত্তার জন্য করা হয়েছে।’

বুধবার জাতীয় সংসদে মন্ত্রীদের জন্য প্রশ্নোত্তর পর্বে তথ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন। এই আইনে ব্যাপকভাবে সাংবাদিকরা নিগৃহীত হচ্ছে, এমন অভিযোগও উড়িয়ে দেন তিনি। বলেন, এই ধারার অপব্যবহার রোধে তার এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভীষণভাবে সতর্ক।

গত কয়েক বছর ধরেই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা নিয়ে সমালোচনায় মুখর গণমাধ্যম কর্মী এবং মানবাধিকার কর্মীরা। তারা এই ধারাটিকে দেখছেন স্বাধীন মত প্রকাশের একটি বাধা হিসেবে।

২০০৬ সালে করা আইটিসি আইনের ৫৭ ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোন ব্যক্তি যদি ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়েবসাইটে বা অন্য কোন ইলেকট্রনিক বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ বা সম্প্রচার করেন, যাহা মিথ্যা ও অশ্লীল বা সংশ্লিষ্ট অবস্থা বিবেচনায় কেহ পড়িলে, দেখিলে বা শুনিলে নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ হইতে উদ্বুদ্ধ হইতে পারেন অথবা যাহার দ্বারা মানহানি ঘটে, আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটে বা ঘটার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়, রাষ্ট্র ও ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে বা করিতে পারে বা এ ধরনের তথ্যাদির মাধ্যমে কোন ব্যক্তি বা সংগঠনের বিরুদ্ধে উসকানি প্রদান করা হয়, তাহা হইলে তাহার এই কার্য হইবে একটি অপরাধ।’

সমালোচকরা বলেন, এই ধারা অনেক বেশি বিস্তৃত এবং এর সুযোগ নেয়া সহজ। গত কয়েক মাসেও দেশের বিভিন্ন এলাকায় সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে বেশ কিছু মামলা হয়েছে এবং এ কারণে এই ধারা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীতে সমাবেশও ডেকেছেন গণমাধ্যমকর্মীরা।

সংসদে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘৫৭ ধারা জামিনযোগ্য না। কিন্তু প্রত্যেকটা জায়গায় উচ্চ আদালতে গেলে বিচারক যদি মনে করেন তিনি জামিন দিতে পারেন। তারপরও যে অভিযোগ সাংবাদিকদের কাছে এসেছে, আমরা প্রত্যেকটা ঘটনা তলিয়ে দেখেছি, কোনো জায়গায় আইনে যদি কোনো বরখেলাপ হয় বা কোনো হয়রানির ব্যাপার হয়, সেটা তথ্য মন্ত্রণালয় হস্তক্ষেপ করে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হস্তক্ষেপ করে, যদি কোনো মিথ্যাচার হয়ে থাকে, বিচারকরা এটা দেখে জামিন দিয়ে দিচ্ছে। সুতরাং অনেক সাংবাদিক নিগৃহীত হচ্ছে-এটা কথাটা ঠিক না।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে ২৮০০ এর অধিক নিবন্ধিত পত্রপত্রিকা, মাসিক আছে। ১৮০০ এর অধিক অনলাইন পত্রিকা এবং পোর্টাল চলছে। প্রতি জায়গায় ১০ জন সাংবাদিকও যদি হিসাব করেন, তাহলে দেখবেন কত হাজার সাংবাদিক বাংলাদেশে কাজ করছে। সুতরাং সেদিক থেকে যদি দেখেন, খুবই নগণ্য দুই একজন এই আইনে গ্রেপ্তার হয়েছেন এবং আদালতে যাওয়ার পরে দুই এক দিনের মধ্যে জামিন পেয়েছেন।’

‘তারপরও আমাদের সরকার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সমস্ত ডিজিটাল অপরাধ মোকাবেলা করার জন্য ব্যবস্থাপনা করার জন্য সমন্বিত ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট, ডিজিটাল অপরাধ মোকাবেলার খসড়া চলছে। সে আইনটা আসার পর আইনমন্ত্রী এবং সরকার বিচার বিশ্লেষণ করে দেখবে ৫৭ ধারার এই আইনটা রাখার দরকার আছে কি নাই। তবে এই আইনটা মানবাধিকারবিরোধী-এটা আমি মনে করি না।’

ইনু বলেন, ‘বাংলাদেশের সংবিধানের সঙ্গে যদি সাংঘর্ষিক হয়, তাহলে এতদিন কেউ উচ্চ আদালতে গেলেই এটা বাতিল হয়ে যেত। আজ পর্যন্ত কেউ উচ্চ আদালতে গিয়ে এই আইনটাকে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক প্রমাণ করতে পারেনি।’

ঢাকাটাইমস/১২জুলাই/এসও/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :