দেশীয় ফল রক্ষায় মেহেরপুরে গ্রামে গ্রামে চারা বিতরণ

দেশীয় বিভিন্ন ফলের জাত রক্ষায় মেহেরপুরের মুজিনগরে গ্রামে গ্রামে বিনামূল্যে চারা বিতরণ করছে উপজেলা কৃষি অফিস। তেতুল, বেল, আম, লিচু, কাঁচকলা, বড়ই, বারোমাসি সজিনাসহ এমন অনেক দেশীয় ফলের চারা বিনামূল্য বিতরণ করা হচ্ছে।

শুধু চারা নয় সাথে চারার নিরাপত্তার জন্য বাঁশের চাটাইয়ের তৈরি ঘেরা বেড়াও দেওয়া হচ্ছে ওই সব পরিবার গুলোর হাতে। বাড়ি বসে এমনই দেশীয় ফলের চারা ও বেড়া পেয়ে খুশি মুজিবনগর উপজেলার চাষি পরিবার গুলো। পাশাপাশি এমন সময়ে চারা গুলো বিতরণ করা হচ্ছে যে সময়টাই গাছ গুলো বাঁচার সম্ভবনা অনেক বেশি। বর্ষাকালে গাছের চারা রোপনের সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। এ সময় চারা দ্রুত মাটির সাথে লেগে যায় এবং বেঁচে থাকে। সময়ের সদ্ব্যব্যবহার করার জন্য কৃষি অফিস বাংলাদেশের ঐতিহাসিক উপজেলা মুজিবনগর থেকেই শুরু করেছে ফলের চারা বিতরণ।

বুধবার সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায় উপজেলা কৃষি অফিসার মুহা. মোফাক্খারুল ইসলাম নিজে উপস্থিত হয়ে গ্রামের সাধারণ কৃষক কৃষাণীদের মাঝে চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন ফলের চারা এবং ঘেরা বেড়া বিতরণ করছেন। সেই সাথে তিনি চারা গাছটি রোপন পরবর্তী বিভিন্ন পরিচর্যার বিষয়ে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন।

বল্লভপুর গ্রামের ইউপি সদস্য শংকর জানিয়েছেন, তাদের বল্লভপুর গ্রামে গত বছরের ন্যায় এ বছরেও প্রায় ২০০ বারোমাসি সজিনা এবং আপেল বড়ইয়ের চারা এবং শতাধিক আমের চারা পেয়ে তারা খুব খুশি। জয়পুর গ্রামের আব্দুস সামাদ জানিয়েছেন তাদের গ্রামে ৪০০ তেতুল চারা ছাড়াও শতাধিক আম ও লিচুর চারা দেয়া হয়েছে।

মহাজনপুর গ্রামের স্বপন মেম্বার এবং মোশারেফ হোসেন মিন্টু তাদের গ্রামের বিভিন্ন পাড়ায় বিতরণের জন্য মুজিবনগর কৃষি অফিস থেকে কাঁচকলার চারা, তেতুল, কুল, বেল, চালতা ও বারোমাসি সজিনার চারা পাওয়ার কথা জানিয়েছেন।

উপজেলা কৃষি অফিসার মুহ. মোফাক্খারুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে জানান, চলতি মৌসুমে কৃষি অফিস থেকে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কৃষকদের মাঝে প্রায় দশ হাজার দেশীয় বিলুপ্ত প্রায় ফল ও সবজির চারা বিতরণ করার প্রকল্প নেয়া হয়েছে। এ ছাড়া চারাকে গরু ছাগলের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য ঘেরা বেড়াও সরবরাহ করা হচ্ছে।

তিনি জানান, মাঠ পর্যায়ে প্রদর্শনী স্থাপনের জন্য আম্রপালি, হিমসাগর, ল্যাংড়া, হাড়িভাঙ্গা, বারিআম-৪ সহ বিভিন্ন জাতের আমের চারা, থাই পেয়ারা, বোম্বাই লিচুর চারা প্রদর্শনীভুক্ত কৃষকদের মাঝে বিতরণের কাজ চলমান রয়েছে।

মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, এর আগে গ্রাম অঞ্চলে বিভিন্ন রকম দেশি ফল গাছের সমাহার ছিল। দিনদিন সেগুলোর এখন প্রায় বিলুপ্তর পথে। বিলুপ্ত প্রায় এসব ফলের গাছ সম্প্রসারণ করাই মূল উদ্দেশ্য। তাছাড়া একটি গাছ একটি পরিবারের সম্পদ। একটি ফলের গাছ থেকে একটি পরিবারের যেমন পুষ্টি চাহিদা পূরণ হবে তেমনি অতিরিক্ত ফল বিক্রি করে পারিবারিকভাবে লাভবান হবে। এসব কার্যক্রম সারাদেশে সম্প্রসারিত হলে পুষ্টিচাহিদার পাশাপাশি খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।

(ঢাকাটাইমস/১২জুলাই/প্রতিনিধি/ইএস)