স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে মন্দিরে অবস্থান

শামিম কাদির, জয়পুরহাট
 | প্রকাশিত : ১৩ জুলাই ২০১৭, ১৬:১৬

জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার উচনা গ্রামে স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে স্বামীর বাড়িতে গত দুই দিন থেকে বিউটি রানী অনশন পালন করছে। মেয়েটির শাশুড়ি ও দাদি শাশুড়ির বাধায় বাড়িতে প্রবেশ করতে না পেরে অবশেষে মেয়েটির ঠাঁই হয়েছে মন্দিরে।

সরেজমিনে বিউটির কাছ থেকে জানা গেছে, রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার মেনানগর বানিয়াপাড়া গ্রামের শ্রী রমেশ বাবু রায়ের মেয়ে শ্রীমতি বিউটি রানী তৃষা সাভার হেমায়েতপুরের একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করার সুবাদে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার উচনা গ্রামের শ্রী নিপেন চন্দ্রের পুত্র শ্রী অলক চন্দ্রের সাথে পরিচয় হয়। এই পরিচয়ের সুবাদে দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।

তাদের প্রেমের সর্স্পকে জোরালো করতে প্রায় দেড় বছর আগে রাজধানীর ঢাকেশ্বর মন্দিরে হিন্দুশাস্ত্র মতে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন এবং গত ২০/০৪/২০১৭ ইং তারিখে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে এফিডেভিট করেন।

সাম্প্রতিক ঈদুল ফিতরের ছুটি পেলে অলক বিউটি রানীকে সাভারে বাসায় রেখে তিন দিনের কথা বলে বাড়িতে আসেন। কিন্তু তিন দিন অতিক্রান্ত হওয়ায় অলক সাভারে ফিরে না যাওয়ায় চিন্তিত হয়ে পড়েন বিউটি। স্বামী অলক ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনের নিকট ফোনে যোগাযোগ করতে থাকে।

অলক ফোন ধরেই না আবার শ্বশুর বাড়ির লোকজন বিউটির সঙ্গে বিভিন্ন্ অজুহাত দেখিয়ে ব্যবহৃত ফোন বন্ধ করে দেন। উপান্তর না পেয়ে বিউটি চলে আসে অলকের বাড়িতে এসে অলককে না পেয়ে এবং তাদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে কোন সুরাহা না হলে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যানকে জানান। কিন্তু ছেলে বাড়িতে না থাকায় বিউটিকে সাত দিনের সময় চেয়ে রংপুরে পাঠিয়ে দেন চেয়ারম্যান।

সাত দিনের বেশি পার হওয়ায় বিউটি গত মঙ্গলবার আবার স্ত্রীর স্বীকৃতি আদায়ে স্বামীর বাড়িতে আসেন। বাঁধ সাধেন তার শাশুড়ি ও দাদি শাশুড়ী। গলা ধাক্কা দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেন। ফলে কোন কূল-কিনারা না পেয়ে মঙ্গলবার সকাল থেকে পাশের সালুয়া বারোয়ারী মন্দিরে আশ্রয় নিয়ে সেখানেই অর্ধাহারে-অনাহারে দিনাতিপাত করছেন বলে বিউটি জানান।

তিনি আরও জানান, সব কিছু ত্যাগ করে এখানে এসেছি, ঘরে না নিলে আত্মহত্যা ছাড়া আমার কোন উপায় নেই।

এ ব্যাপারে মোবাইলে অলকের ভাই শ্রী শ্যামল চন্দ্র নিকট জানতে চাইলে তিনি ঘটনা স্বীকার করে বলেন, মেয়েটি জোর করে আমার ভাইয়ের কাছ থেকে কাগজে স্বাক্ষর নিয়েছেন। তিনি স্বেচ্ছায় তাকে বিয়ে করেননি।

ধরঞ্জি ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আব্দুল গনি ঘটনার কথা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করাকালীন একটি কুচক্রী মহল ভিন্ন খাতে মীমাংসার চেষ্টা করছে।

অপর ইউপি সদস্য ফারায়েজ মণ্ডলের নিকট জানতে চাইলে তিনি এ সর্স্পকে কিছুই জানেন না বলে জানান।

এ বিষয়ে ধরঞ্জি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফার সংগে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

পাঁচবিবি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কিরণ চন্দ্র রায় জানান, ঘটনাটি আমরা শুনেছি- তবে মেয়েটি অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(ঢাকাটাইমস/১৩জুলাই/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :