মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে জাবিতে ‘বামপন্থী’ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বামপন্থী সংগঠনের আয়োজনে এতে বিভিন্ন বিভাগের দুই শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।
প্রতœতত্ত্ব বিভাগের ৪২তম আবর্তনের শিক্ষার্থী কাব্য কৃত্তিকার সঞ্চালনায় সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সহ-সভাপতি অলিউর রহমান সান বলেন, ‘প্রথম দিকে উপাচার্য বলেছিলেন আমরা মামলা প্রত্যাহার করব। কিন্তু পরবর্তীতে বলতে থাকেন মামলা আমরা দেইনি, পুলিশ দিয়েছে। আমাদের হাতে কিছু নেই। অথচ মামলার বাদী বিশ^বিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার। সুতরাং, মামলা প্রত্যাহার নিয়ে যে প্রশাসন মিথ্যাচার করতে পারে সেই প্রশাসনের কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ অংশীদার শিক্ষার্থীরা নিরাপদ নয়।’
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট জাবি শাখার সদস্য মোহাম্মদ দিদার বলেন, ‘গত চার বছরে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ জন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। এজন্যই আমরা সেদিন নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাস্তায় নেমেছিলাম। কিন্তু উপাচার্য সেদিন দাবি মানার নামে মিথ্যাচার করে পুলিশ দিয়ে অমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এর জবাব চাইতে গেলে তিনি আমাদের সাথে বার বার সময় দিয়েও দেখা করেননি। উল্টো তার মতাদর্শের শিক্ষকদের দিয়ে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের বিক্ষুব্ধ করে তুলেছিলেন। আর এখন মামলা প্রত্যাহার নিয়ে মিথ্যাচার করছেন। দুর্বার আন্দোলনের মাধ্যমে মামলা প্রত্যাহারে বাধ্য করা হবে।’
দর্শন বিভাগের ৪৩ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী আয়েশা বলেন, ‘আমি সেদিন হলে ছিলাম। কিন্তু ঘটনাস্থলে না থেকেও হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি হয়েছি। উপাচার্যের কাছে জানতে চাই, আমি হলে বসে কিভাবে তার শিক্ষকদের হত্যা করার চেষ্টা করেছি। তিনি কোন সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে আমাকে চিহ্নিত করলেন।’
উল্লেখ্য, গত ২৬ মে ভোরে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সিঅ্যান্ডবি এলাকায় বাসচাপায় নাজমুল হাসান রানা ও মেহেদী হাসান আরাফাত নামের দুই শিক্ষার্থী নিহত হন। নিহতের প্রতিবাদে পরদিন ২৭ মে নিরাপদ সড়কসহ সাত দফা দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।সড়ক অবরোধকালে বিকালে পুলিশী হামলার জেরে উপাচার্যের বাসভবন ভাঙচুর করে শিক্ষার্থীরা। এসময় কয়েকজন শিক্ষক লাঞ্ছিত হন বলে অভিযোগ উঠে। পরে ৩১ শিক্ষার্থীর নাম উল্লেখপূর্বক অজ্ঞাতনামা অন্তত ৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ওই রাতেই ১০ ছাত্রীসহ ৪২ শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরদিন বিকালে জামিনে মুক্তি পান তারা।
(ঢাকাটাইমস/১৩জুলাই/প্রতিনিধি/ইএস)