‘দাদির নির্দেশে শিশু ইভাকে হত্যা করে চাচা’

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৪ জুলাই ২০১৭, ১৯:৫৭

মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার ইসলামনগর গ্রামের শিশু ইভাকে (পাঁচ মাস) তার আপন চাচা হত্যা করে বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুত্রবধূকে ঘায়েল করতে মায়ের নির্দেশে নিজ ভাতিজিকে হত্যা করেন চাচা।

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেসস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত করে হত্যার এ রহস্য উদঘাটন করেছে। প্রায় পাঁচ বছর আগে ২০১২ সালের ১৪ আগস্টে ইভাকে হত্যা করা হয়।

পিবিআই জানায়, ইতিমধ্যে প্রধান আসামি ইভার আপন চাচা আবুল মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। আবুল মিয়া বলেছে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে মা (ইভার দাদী) এর নির্দেশে ইভাকে গলায় কোপ দিয়ে হত্যা করে।

আজ শুক্রবার পিবিআই মৌলভীবাজার কার্যালয়ে এক প্রেসব্রিফিং এ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আসলাম উদ্দিন এসব তথ্য জানান।

এই সময় উপস্থিত ছিলেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পিবিআই মৌলভীবাজার ইউনিটের পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম।

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) মৌলভীবাজার কার্যালয়ে প্রেসব্রিফিং এ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লিখিত বক্তব্যে জানান, কুলাউড়া উপজেলার ভাটেরা ইউনিয়নের ইসলামনগর গ্রামের মুক্তার মিয়ার ছেলে নিজাম মিয়া (৩৭) ও তার ভাইদের সাথে একই গ্রামের মৃত রহমত আলীর ছেলে মাসুক মিয়া (৪৫) ও তার ভাইদের সাথে জমিজমা নিয়ে বিরোধ ছিল।

২০১২ সালের ১৪ আগস্ট মাসুক মিয়া দলবল নিয়ে বিরোধীয় জমিতে গেলে নিজাম মিয়ার স্ত্রী রুবিনা বেগম তার কন্যা মীমকে কোলে নিয়ে বিরোধিয় জমিতে গিয়ে বাধাদানসহ হল্লা চিৎকার করলে মাসুক মিয়া ও তার লোকজন রুবিনা বেগম কে মারপিট করে। এই সময় নিজামের মা বিরু বেগম শিশু ইভা (০৫) র লাশ হাতে নিয়ে বিরোধীয় জমির দিকে এসে বলেন মাসুক ও তার লোকজন শিশু ইভাকে হত্যা করেছে। এই ঘটনায় নিজাম মিয়া বাদী হয়ে কুলাউড়া থানায় মামলা হয়। কুলাউড়া থানার দুইজন এসআই মামলা তদন্ত করে উক্ত হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে না পেরে ১৭/১/১৩ চূড়ান্ত রিপোর্ট আদালতে দাখিল করেন। বাদী না-রাজির প্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে কুলাউড়া থানা পুনরায় তদন্ত করে এবং চূড়ান্ত রিপোর্ট দেয়। বাদী আবার না-রাজি দিলে আবেদন মঞ্জুর করে আদালত অধিকতর তদন্তের জন্য জেলা গোয়েন্দা শাখাকে নির্দেশ দেয়। জেলা গেয়েন্দা শাখার এইসআই মোবারক হোসেন এক বছর তদন্ত করে কে বা কারা জড়িত তা বের করতে না পেরে ২১ এপ্রিল ২০১৫ আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করেন। বাদী আবার না-রাজি আবেদন করলে আদালতের নির্দেশে ১/২/১৭ ইং পিবিআই মৌলভীবাজার কার্যালয়ের পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম মামলার তদন্ত শুরু করেন। গত ১১ জুলাই সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার আলমপুর গ্রাম থেকে বাদীর আপন ভাই নিহত শিশু ইভার চাচা আবুল মিয়া ওরপে আব্দুল্লা (৩৩) কে গ্রেপ্তার করে মৌলভীবাজার কার্য়ালয়ে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে ঘটনার সাথে জড়িত বলে স্বীকার করে এবং পরবর্তীতে ১২ জুলাই আদালতে সোপর্দ করলে ফৌজিদারি কারাবিধি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।

প্রেস ব্রিফিং এ লিখিত বক্তব্যে বলা হয় আসামি আবু মিয়া আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেছেন, প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্যই তার মা (শিশু ইভার দাদী) বিরু বেগম তার ভাতিজি ইভাকে ঘুমন্ত অবস্থায় উঠানে রেখে তার (আবুল) হাতে বটি দা দিয়ে কোপ দিতে বলে। তখন উঠানে তার ভাই নিজাম ও রাশেদ ছিল। সে (আবুল) শিশু ইভার গলায় কোপ দিলে শিশু ইভা ঘটনাস্থলেই মারা যায়। তার মা বিরু বেগম পানি ঢেলে ঘটনাস্থলের রক্ত পরিষ্কার করেন।

পিবিআই এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসলাম উদ্দিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে মামলার একজন অন্যতম স্বাক্ষী আব্দুল আজিজ ও ইভার দাদী বিরু বেগম মৃত্যু বরণ করেছেন। ইভার মা ও পিতা পলাতক রয়েছেন। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। এই মামলার রহস্য উদঘাটনে প্রযুক্তির সহায়তা নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

(ঢাকাটাইমস/১৪জুলাই/প্রতিনিধি/ইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :