বিলুপ্তির পথে হাওরের ৫০ প্রজাতির মাছ

আমিনুল ইসলাম, তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ)
 | প্রকাশিত : ১৫ জুলাই ২০১৭, ১০:০০

হাওরাঞ্চল খ্যাত সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে বিলুপ্তির পথে ৫০ প্রজাতির মাছ। এক যুগ আগেও এখানকার জলাশয়গুলোতে ১৪৬ প্রজাতির মাছ পাওয়া গেলেও প্রায় ৫০ প্রজাতির মাছ বিলুপ্তির পথে রয়েছে বলে জেলা মৎস্য অধিদপ্তদপ্তরের বিভিন্ন তথ্য জানা গেছে।

বর্তমানে হাওরে দেশি মাছের মধ্যে ’মহাবিপন্ন’ অবস্থায় রয়েছে বাগাইর, রিটা, রানী পাঙ্গাস, বামোস, চাকা, একটুটি, মহাশোল, চিতল, নাফতানী।‘সংকটাপন্ন’ অবস্থায় রয়েছে বাঁশপাতা, নাপতে আাইড়, ফলি, পাবদা, ছেপ ছেলা, নাপতে কই, বাচা। ’বিপন্ন’ অবস্থায় রয়েছে গুলসা, গনিয়া, বাইম, নান্দিনা, খলিশা, তিল খোশা, কালি বাউশ, শাল বাইম, ঘাং মাগুর, মেনি, এলং তিলা,তিতপুটি, নাম চান্দা ও মেনি মাছ উল্লেখযোগ্য।

তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নে টাঙ্গুয়া হাওরপাড়ের গোলাবাড়ি গ্রামের জেলে আব্দুল কাদির। তিনি বলেন, পৈত্রিক পেশার সূত্র ধরে তিনিও দীর্ঘদিন হাওরে মাছ ধরে আসছেন। এক যুগ আগেও তাঁরা যে সব মাছ হাওর থেকে ধরতেন এখন তা আর চোখেও দেখেন না।

হাওরে দিন দিন দেশি প্রজাতির মাছ বিলুপ্তির কারণ হিসেবে অনেকে দেখছেন বিল ও জলাশয়গুলোতে ‘পাইল ফিশিং’ (দু’বছর নির্দিষ্ট এলাকায় মাছ না ধরা) না হওয়া। হাওরে অসময়ে বেড়জাল, কারেন্ট জাল দিয়ে অবাধে পোনা মাছ, ডিমওয়ালা মাছ নিধন করা এবং শুষ্ক মৌসুমে বিল সেচ দিয়ে মাছ ধরার জন্য দেশি প্রজাতির অনেক মাছ এখন বিলুপ্তির পথে রয়েছে। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে কিছুদিন পর হাওরগুলো মাছশূন্য হয়ে পড়বে।

প্রাণবৈচিত্র্য ও প্রতিবেশ বিশেষজ্ঞ পাভেল পার্থ’র মতে হাওরের নল, নটার বন, মুক্তা, বনতুলসি, চালিয়াসহ বিভিন্ন জলজ বন ধ্বংসের কারণে হাওরে মাছের নিরাপদ আবাসস্থল নষ্ট হচ্ছে। হাওরের জলজ জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণ করলে দেশি মাছের বিলুপ্তি কিছুটা রোধ করা সম্ভব হবে।

সুনামগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শংকর রঞ্জন দাস বলেন, প্রজননকালে মাছ আহরণ একেবারে বন্ধ রাখতে পারলে দেশি মাছের বিলুপ্তি কিছুটা হলেও রোধ করা সম্ভব হবে। তাছাড়া শুকনো মৌসুমে আইন অমান্য করে বিল জলাশয় সেচে ইজারাদাররা মাছ আহরণ করে থাকেন। এটি বন্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিলে দেশি মাছের বিলুপ্তি কিছুটা কমবে।

ঢাকাটাইমস/১৫জুলাই/প্রতিনিধি/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :