‘রোগী ভালো করে ‘বাচ্চা’ দেন আমাকে: ওয়াসাকে আনিসুল

প্রকাশ | ১৬ জুলাই ২০১৭, ১৯:১১

নিজস্ব প্রতিবেদক, টাকাটাইমস

ঢাকার খাল রক্ষণাবেক্ষণের পুরো ক্ষমতা চান ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক। নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে এর বিকল্প নেই বলে মনে করেন তিনি। তবে এই দায়িত্ব হস্তান্তরের আগে খালগুলো পরিষ্কার হোক-এটা চান মেয়র আনিসুল।

রবিবার দুপুরে উত্তর সিটি করপোরেশনের নগরভবনে আন্তঃ বিভাগীয় সমন্বয় সভা অনুষ্ঠানে ডিএনসিসির মেয়র ও ওয়াসার এমডির সাথে এ কথোপকথন হয়। এ সময় মেয়র খালের বর্তমান অবস্থাকে রোগীর সঙ্গে তুলনা করেন। 

নগরীর জলবদ্ধতা নিরসনের সুবিধার্থে ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খান তার বক্তব্যের এক পর্যায়ে ঢাকা খালের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের হাতে দেয়া আগ্রহ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমার বাচ্চা (খাল) আপনি নেন।’

জবাবে মেয়র আনিসুল হক বলেন, ‘আপনার বাচ্চা তো রোগী।’

ওয়াসা এমডি বলেন, ‘রোগি হলেও নেন’।

জবাবে মেয়র হাসির ছলে বলেন, ‘বিকলাঙ্গ সন্তান নিয়ে আমি কী করব। একে আগে সুস্থ করুন, তারপর আমাকে দিন।’

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যের সময় এলজিআরডি মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন সিটি করপোরেশন, ডিসি ও ওয়াসাকে সমন্বিতভাবে নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। এ জন্য একটি নতুন মহাপরিকল্পনা করার তাগিদও দেন তিনি।

এমন সময় মেয়র আনিসুল হক ওয়াসার এমডিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘রোগী ভালো করে বাচ্চা দিয়া দেন আমারে। ...আমার ঢাল নাই, তলোয়ার নাই নিধিরাম সরদার।’

মেয়রের কথার পিঠে এলজিআরডি মন্ত্রী বলেন, ‘আগে রোগী গ্রহণ করেন, এটাকে ভালো করার দায়িত্ব আমার।’

 

মেয়র আনিসুল হক বলেন, ‘ডিসি সাহেব এটা আপনার জমি, আপনার খাল আমাকে বুঝায় দেন। আর ওয়াসা আমার খাল পরিষ্কার করে দেন। আমি কোন দায়িত্ব নেব না। সারা দেশ আমাকে গালি দেবে। এটার জন্য দায়িত্ব সরাসরি আমার না।’

ওয়াসার এমডি বলেন, ‘আগের জায়গায় যে খালগুলো বিদ্যমান আমরা সেই খালগুলো নিয়ে কাজ করি। এর মধ্যে যারা খাল দখল করেছেন, বাড়ি তৈরি করেছেন, তারা সিএস দাগে দেখাচ্ছে, কোর্টে গিয়ে বিশ ধারা দায়ের করে রাখে। আমরা চাইলেই তাদের কিছু করতে পারি না। আবার কিছু জায়গা অধিগ্রহণ করে খাল করেছে, এর মধ্যে অনেক অংশ দখল হয়ে গেছে।’

ভাসমান আবর্জনা দিয়ে খাল ভরাট রয়েছে এমন কয়েকটি খন্ড চিত্র প্রদর্শন করে ওয়াসার এমডি বলেন, ‘আমরা খাল পরিষ্কার করেছি, এখনো দখল উচ্ছেদ চলমান রয়েছে। আমরা যতই পরিষ্কার করি না কেন, ৫-৭ দিনে আবার ভরাট হয়ে যায়।’

এমন কথার জবাবে মেয়র বলেন, ‘কই আমার নজরে তো পড়ে না। আপনারা ভাসমান ময়লা পরিষ্কার করছেন, কিন্তু মাটি দিয়ে যে যে খালগুলো ভরাট হয়েছে সেগুলো খনন করছেন না।’

আনিসুল হক বলেন, ‘এক ধরণের অধিকার দেয়া হয় সিটি করপোরেশনকে, এক ধরণের দেয়া হয় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (রাজউক) একেক জনে একেকটা পরিধি আছে। এই কনসটিটিউশন মতে সব কিছুর মালিকই সরকার, কিন্তু ডিরেক্টলি মালিক হলো ডিসি। ওয়াসা বলছে, ড্রেনের খননের মালিক, রক্ষণাবেক্ষণের মালিক। গুছিয়ে দেয়ার মালিক ডিসি। সুতরাং এটা যেনো সিট করপোরেশন নিয়ে নেয়। আমিও বলেছি আমরা নিয়ে নেব। কিন্তু আমি কি নেব? চিকুনগুনিয়া হোক, জলজট হোক, অথবা যানজট হোক, সব কিছুর আক্রমণ মেয়রের ওপর আসে। যেখানে মেয়রের খুব বেশি কিছু করার থাকে না।’

(ঢাকাটাইমস/১৬জুলাই/এএকে/ডব্লিউবি)