অন্যায় করলে বিচার হোক: জঙ্গি রাশেদের বাবা

বুঝে-না বুঝে যেভাবেই হোক অন্যায় করে থাকলে ছেলের বিচার হোক তা চান জঙ্গি রাশেদুন্নবীর বাবা। আশুলিয়ায় জঙ্গি আস্তানা থেকে গ্রেপ্তার রাশেদুন্নবী (২১) গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার উদাখালি ইউনিয়নের দক্ষিণ উদাখালি গ্রামের রেজাউল করিমের ছেলে। বাবা হোমিও চিকিৎসক আর মা রিনা বেগম গৃহিণী। দুই ভাই তিন বোনের মধ্যে রাশেদুন্নবী চতুর্থ। বড় ভাই রানা ঢাকার একটি কলেজে মাস্টার্সে পড়েন।

সোমবার বিকালের দিকে রাশেদের বাড়িতে তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তারা জানান, রাশেদ উদাখালি মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি, ২০১৪ সালে একই উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের জমিলা আক্তার উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। পরে তিনি প্যাথলজি বিষয়ে বগুড়া সাইক ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল টেকনোলজিতে ভর্তি হন। বর্তমানে তিনি চতুর্থ সেমিস্টারের ছাত্র।

রাশেদুলের বাবা রেজাউল করিম জানান, তিনি ছেলের নিখোঁজের কথা প্রথম জানতে পারেন কলেজ থেকে। পরে খোঁজাখুজি করে ছেলেকে না পেয়ে থানায় জিডি করেন।

রাশেদের বাবা বলেন, ‘আমার ছেলে বগুড়ার একটি মেসে থেকে পড়ালেখা করত। সে গত ২৭ এপ্রিল বগুড়া থেকে বাড়ি আসে। বাড়িতে কয়েক দিন থাকার পর গত ১ মে আমার কাছে মেস ভাড়া বাবদ আড়াই হাজার টাকা নিয়ে বগুড়া যাবার কথা বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। পরদিন তার কলেজ থেকে ফোন আসে সে পরীক্ষায় অনুপস্থিত। এ খবর পেয়ে ওই দিনই আমি বগুড়া গিয়ে প্রথমে কলেজে ও পরে তার মেসে খোঁজ নিই। তার মেসের মালিক আমাকে জানায়, দুজন অপরিচিত ছেলে রাশেদের সঙ্গে কয়েক দিন ধরে মেসে থাকত। বাধা দেওয়ায় তারা অন্য মেসে চলে যায়। এরপর কিছু জানেন না মেস মালিক।’

তখন থেকে থানা-পুলিশসহ বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করা হয়। কিন্তু ছেলের সন্ধান পাইনি রেজাউল করিম। তিনি বলেন, ‘পরে ২২ মে বগুড়া সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করি। রোববার ফেসবুকের মারফত জানতে পারি আমার ছেলে ঢাকার আশুলিয়ায় র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে।’ ছেলে অন্যায় করে থাকলে তার বিচার হোক- সেটাই তিনি চান বলে জানান রাশেদের বাবা।

মা রিনা বেগম মনে করেন খারাপ মানুষ তাকে খারাপ পথে নিয়ে গেছে। তার ভাষ্য, ‘হামার ছোলটে ভালো আচিলো। কোনোদিন অন্যায় করে নাই। খারাপ মানসের পাল্লাত পড়ি খারাপ হচে।’

রাশেদুলের চলাফেরায় খারাপ কিছু দেখেননি বলে জানান এলাকার লোকজন। উদাখালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুল হামিদ বলেন, ‘এমনকি এলাকায় কোনো খারাপ কাজের সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।’ রাশেদুন নবীর বিষয়ে জানতে চাইলে ফুলছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু হায়দার মো. আশরাফুজ্জামান মুঠোফোনে বলেন, রাশেদুলের নামে থানায় কোনো মামলা নেই।

রোববার ঢাকার আশুলিয়ার চৌরাপাড়া গ্রামে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে একটি বাড়ি ১১ ঘণ্টা ঘিরে রাখার পর র‌্যাবের হাতে চারজন জঙ্গি আত্মসমর্পণ করেন। তারা জঙ্গি সংগঠন জেএমবির তামিম-সারোয়ার গ্রুপের সদস্য বলে পুলিশ জানায়।

(ঢাকাটাইমস/১৮জুলাই/মোআ)