যুদ্ধে জড়াতে পারে চীন-ভারত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৮ জুলাই ২০১৭, ১৮:১১ | প্রকাশিত : ১৮ জুলাই ২০১৭, ১৭:৪৮

হিমালয় পর্বতের কাছে দুর্গম একটি এলাকা নিয়ে পরমাণু শক্তিধর চীন ও ভারতের মধ্যে যে সামরিক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে তা শেষ পর্যন্ত যুদ্ধে রূপ নিতে পারে। পাকিস্তানের ইংরেজি দৈনিক এক্সপ্রেস ট্রিবিউন এ আশংকাজনক খবর দিয়েছে।

গত জুন মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে দুর্গম ডোকালাম মালভূমিতে চীন ও ভারতের সেনারা একে অপরের ‘চোখে চোখ’ রেখে চলছে এবং অত্যন্ত আগ্রাসী অবস্থান নিয়েছে। সম্প্রতি দুই দেশ আরো সেনা পাঠিয়েছে সেখানে এবং এলাকাটিতে এখন যুদ্ধের প্রায় সব উপাদান উপস্থিত। এমন জোরালো উপস্থিতির পরও সেখানে সেনা সংঘর্ষের কোনো ঘটেনি তবে চীনের বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, ‘সেখানে যুদ্ধ শুরু হতে পারে।’

ভারতের হাতে বর্তমানে ১০০’র বেশি পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। অন্যদিকে চীনের হাতে এ ধরনের ওয়ারহেড রয়েছে ২৫০টির বেশি। গতকাল সোমবার গোলযোগপূর্ণ ডোকালাম সীমান্তে চীন তাজা গুলির মহড়া চালিয়েছে। এ মহড়া সব আশংকাকে জোরদার করেছে। এছাড়া, নয়াদিল্লিতে চীনের রাষ্ট্রদূত বলেছেন, সীমান্তের গোলযোগপূর্ণ এলাকা থেকে ভারতকে নিঃশর্তভাবে তার সেনা সরিয়ে নিতে হবে।

ভারতের সিকিম প্রদেশের সীমান্তে যে ডোকালাম এলাকা নিয়ে দু’দেশ মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে সেখানে খুব কম সংখ্যক মানুষের বসবাস রয়েছে তবে কৌশলগত দিক দিয়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে ভারত, চীন ও ভূটানের সীমান্ত রয়েছে। ওই এলাকায় গতমাসে চীন একটি রাস্তা তৈরি করতে গেলে ভারত তাতে বাধা দেয় এবং সেখান থেকে চলমান উত্তেজনা শুরু হয়। চীন বলছে, নিজের সীমান্তে তারা রাস্তাটি তৈরির চেষ্টা করছিল।

দীর্ঘদিন ধরে ভারত দাবি করে আসছে- চীন তার আড়াই লাখ বর্গ কিলোমিটার এলাকা দখল করে রেখেছে। অনদিকে চীন বলছে, ভারতের দখলে তার সাড়ে পাঁচ লাখ বর্গ কিলোমিটার এলাকা রয়েছে।

২০১৫ সালে গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার (জিএফপি) বৈশ্বিক সামরিক সক্ষমতার একটি সূচক প্রকাশ করেছিল। পারমাণবিক অস্ত্র বাদ দিয়ে প্রচলিত যুদ্ধের সক্ষমতা নিয়ে করা এই সূচকে শীর্ষ পাঁচ দেশ হলো যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, ভারত ও যুক্তরাজ্য। দেশগুলোর সামরিক সক্ষমতা বিশ্লেষণে স্থল, নৌ ও বিমান শক্তির পাশাপাশি সম্পদ, অর্থ, ভৌগোলিক বিষয়াবলি প্রভৃতি বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। জিএফপির সূচক অনুযায়ী চীন ও ভারতের সামরিক ভান্ডার হলো—

চীন

সামরিক সক্ষমতায় তৃতীয় অবস্থানে আছে চীন। যুদ্ধের জন্য দেশটির সক্রিয় সদস্য ২৩ লাখ ৩৩ হাজার। সক্রিয় সংরক্ষিত সদস্য ২৩ লাখ।

স্থলযুদ্ধের জন্য চীনের ট্যাংক আছে ৯ হাজার ১৫০টি। অস্ত্রবাহী যুদ্ধযান (এএফভি) আছে ৪ হাজার ৭৮৮টি। সেলফ-প্রপেল্ড গান (এসপিজি) ১ হাজার ৭১০টি। টাওয়েড-আর্টিলারি ৬ হাজার ২৪৬টি। মাল্টিপেল লান্স রকেট সিস্টেমস (এমএলআরএস) ১ হাজার ৭৭০টি।

দেশটির মোট সামরিক বিমান ২ হাজার ৮৬০টি। যুদ্ধবিমান ১ হাজার ৬৬টি। ফিক্সড-উইং অ্যাটাক এয়ারক্র্যাফট ১ হাজার ৩১১টি। পরিবহন বিমান ৮৭৬টি। প্রশিক্ষণ বিমান ৩৫২টি। হেলিকপ্টার ৯০৮টি। অ্যাটাক হেলিকপ্টার ১৯৬টি।

মোট নৌ সক্ষমতা ৬৭৩টি। বিমান বহনে সক্ষম রণতরি একটি। ফ্রিগেট ৪৭টি। ডেস্ট্রয়ার ২৫টি, করভেট ২৩টি। সাবমেরিন ৬৭টি, কোস্টাল ডিফেন্স ক্র্যাফট ১১টি, মেরিন ওয়ারফেয়ার ছয়টি।

ভারত

সামরিক সক্ষমতায় ভারতের অবস্থান চতুর্থ। যুদ্ধের জন্য দেশটির সক্রিয় সদস্যসংখ্যা ১৩ লাখ ২৫ হাজার। সক্রিয় সংরক্ষিত সদস্য ২১ লাখ ৪৩ হাজার।

স্থলযুদ্ধের জন্য ভারতের ট্যাংক আছে ৬ হাজার ৪৬৪টি। অস্ত্রবাহী যুদ্ধযান (এএফভি) আছে ৬ হাজার ৭০৪টি। সেলফ-প্রপেল্ড গান (এসপিজি) ২৯০টি। টাওয়েড-আর্টিলারি ৭ হাজার ৪১৪টি। মাল্টিপেল লান্স রকেট সিস্টেমস (এমএলআরএস) ২৯২টি।

ভারতের মোট সামরিক বিমান ১ হাজার ৯০৫টি। যুদ্ধবিমান ৬২৯টি। ফিক্সড-উইং অ্যাটাক এয়ারক্র্যাফট ৭৬১টি। পরিবহন বিমান ৬৬৭টি। প্রশিক্ষণ বিমান ২৬৩টি। হেলিকপ্টার ৫৮৪টি। অ্যাটাক হেলিকপ্টার ২০টি।

মোট নৌ সক্ষমতা ২০২টি। বিমান বহনে সক্ষম রণতরি দুটি। ফ্রিগেট ১৫টি। ডেস্ট্রয়ার নয়টি, করভেট ২৫টি, সাবমেরিন ১৫টি, কোস্টাল ডিফেন্স ক্র্যাফট ৪৬টি, মেরিন ওয়ারফেয়ার সাতটি।

সূত্র: পার্স টুডে

(ঢাকাটাইমস/১৮জুলাই/এসআই)

সংবাদটি শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :