বৈধতার সুযোগ গ্রহণে মালয়েশিয়া প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান

শামছুজ্জামান নাঈম, মালয়েশিয়া থেকে
| আপডেট : ১৮ জুলাই ২০১৭, ২১:২৩ | প্রকাশিত : ১৮ জুলাই ২০১৭, ২১:২১

মালয়েশিয়ায় বসবাসকারী অবৈধ অভিবাসীদের (৩১ ডিসেম্বর) বেঁধে দেয়া সময়সীমার মধ্যে বৈধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার মুহা. শহিদুল ইসলাম।

মঙ্গলবার বিকালে বাংলাদেশ হাই কমিশনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান।

শহীদুল ইসলাম বলেন, মালয়েশীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অবৈধ বাংলাদেশিদের ভাগ্য নিয়ে সমঝোতার চেষ্টা চলছে। আশা করছি ভালো কিছু রেজাল্ট পাওয়া যাবে। তবে রি-হায়ারিংয়ের জন্য এখনো পাঁচ মাসের বেশি সময় রয়েছে। এই সময়ের মধ্যে তাদের সঙ্গে আরো বৈঠক হবে।

হাই কমিশনার বলেন, অবৈধ ব্যক্তিদের ধরপাকড় যেকোনো দেশের অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষার নিয়মিত, স্বাভাবিক ও চলমান প্রক্রিয়া। তবে মালিকপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে যেসব শ্রমিক রি-হায়ারিংয়ের আওতায় অংশ নিতে ইমিগ্রেশনে যাবে তাদের কোনো ধরনের হয়রানি করা হবে না বলে আশ্বাস দেয়া হয়েছে।

এর আগে সোমবার কুয়ালালামপুরে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে বাংলাদেশ দূতাবাসের ডেপুটি হাই কমিশনার ওয়াহিদা আহমেদ ও শ্রম শাখার প্রথম সচিব মো. হেদায়েতুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

সভায় অভিবাসন বিভাগের মহাপরিচালক মোস্তাফার আলী বলেন, চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় বসবাসরত অবৈধ বাংলাদেশিরা রি- হিয়ারিং প্রক্রিয়ার আওতায় বৈধ হবার সুযোগ পাবেন। ইমিগ্রেশন মহাপরিচালক এই সুযোগ গ্রহণের জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

গত ৩০ জুন শেষ হওয়া ই- কার্ড প্রক্রিয়ায় এক লাখ অবৈধ বাংলাদেশি নিবন্ধিত হয়েছেন এবং দুই লাখ ৯৩ হাজার অবৈধ বাংলাদেশি রি-হায়ারিংয়ের আওতায় নিবন্ধিত হয়েছে যা সর্বমোট আবেদনের যথাক্রমে ৫৭% এবং ৮৯% বাংলাদেশিদের।

অভিবাসন বিভাগের মহাপরিচালক এই অভূতপূর্ব সাড়ার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন এবং উভয় দেশের মধ্যে সহযোগিতার এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে বলেও জানান।

এদিকে বাংলাদেশ থেকে ট্যুরিস্ট, প্রফেশনাল বা ব্যবসায়িক ভিসা নিয়ে মালয়েশিয়ায় কাজ করার কোনো সুযোগ নেই উল্লেখ করে দেশটির অভিবাসন বিভাগের মহাপরিচালক অনুরোধ করেন যাতে সঠিক শ্রেণির ভিসা নিয়ে বাংলাদেশিরা মালয়েশিয়ায় আসেন যা এয়ারপোর্টে হয়রানির সম্ভাবনাকে হ্রাস করবে।

সাম্প্রতিককালের হিসাব অনুযায়ী সে দেশের বিভিন্ন ডিটেনশন ক্যাম্পে ৩-৬ মাস মেয়াদে ১৫ জন, ৬-১২ মাস মেয়াদে চারজন এবং এক বছর মেয়াদে সাতজন সম্ভাব্য বাংলাদেশি আটক রয়েছে।

এ দিকে বিপুল পরিমাণ প্রবাসীর সেবা প্রদানের গত এক সপ্তাহে ৩১ হাজার ৯৮৪ জনকে কন্স্যুলার সেবা প্রদান করেছে। এ ছাড়াও প্রতি সপ্তাহান্তে নিয়মিতভাবে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কন্স্যুলার ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টান্তে দূতাবাসে আগত সেবাগ্রহণকারীরা যাতে ওয়ান স্টপ সার্ভিসের আওতায় ব্যাংকিং সার্ভিসসহ অন্যান্য সেবা গ্রহণ করতে পারেন তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

এছাড়া ন্যূনতম মূল্যে দূতাবাসের সব সুবিধা গ্রহণে দূতাবাস থেকে প্রবাসীদের আহ্বান জানানো হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দূতাবাসের ডিফেন্স উইং প্রধান এয়ার কমডোর হুমায়ূন কবির, মিনিস্টার পলিটিক্যাল রাইস হাসান সারোয়ার, পাসপোর্ট ও ভিসা শাখার ফার্স্ট সেক্রেটারি মো. মশিউর রহমান তালুকদার, দ্বিতীয় সচিব তাহমিনা ইয়াছমিন, শ্রম শাখার দ্বিতীয় সচিব মো. ফরিদ আহমদ।

গত ৩০ জুন থেকে এ পর্যন্ত ব্যাপক পুলিশের সাড়াশি অভিযানে দেড় হাজারেরও অধিক বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই পটভূমিতে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে একাধিক বৈঠক হয়। এসব বৈঠকে অবৈধ বাংলাদেশিদের গ্রেপ্তার না করার সিদ্ধান্ত হয়।

(ঢাকাটাইমস/১৮জুলাই/প্রতিনিধি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

প্রবাসের খবর বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :