মগবাজার ফ্লাইওভার: এবার ধীরগতির অজুহাত বৃষ্টি

মোসাদ্দেক বশির ও আশিক আহমেদ
 | প্রকাশিত : ১৯ জুলাই ২০১৭, ০৮:২০

প্রথম ঘোষণা অনুযায়ী ২০১৪ সালে শেষ হওয়ার কথা ছিল মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারের নির্মাণকাজ। কিন্তু সময় বাড়ানো হয় কয়েক দফা। শেষবার যখন সময় বাড়ানো হয়, তখন বলা হয়েছিল পুরো কাজ শেষ করে জুলাইয়ে উদ্বোধনের। কিন্তু জুলাইয়েরও অর্ধেক সময় শেষ হয়ে গেল, এখনো পুরো কাজ শেষ হয়নি। আর এই বিলম্বের জন্য অতিবৃষ্টিকে দায়ী করছেন প্রকল্প পরিচালক।

ফ্লাইওভারটি চালু না হওয়ায় ওই রাস্তায় চলাচলকারী মানুষে দুর্ভোগ আরও বাড়ছে। বর্ষা মৌসুমে তা বহু গুণে বেড়েছে।

২০১১ সালের ৮ মার্চ একনেক এই প্রকল্প অনুমোদন করে। প্রথমে প্রকল্পের আকার ছিল ৭৭২ কোটি ৭০ লাখ টাকা। পরে ২০১৬ সালের ১৯ জানুয়ারি প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়ে এক হাজার ২১৮ কোটি ৮৯ লাখ টাকা করা হয়। ধাপে ধাপে প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় বাড়িয়ে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত করা হয়।

কয়েক দফা সময় বাড়ানোর পর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হবে-আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই বলেছিলেন প্রকল্প পরিচালক। কিন্তু এবারও ব্যর্থতাই সম্বল হলো।

কাজ শেষ করে ফ্লাইওভারটি কবে চালু হতে পারে জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক সুশান্ত কুমার পাল ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘জুলাইয়ের মধ্যে আমরা কাজটি শেষ করব, এটা আমাদের টার্গেট। আশা করছি আগস্টের মধ্যেই যানচলাচলের জন্য খুলে দিতে পারব।’

নির্মাণকাজ শেষ হতে দেরি হওয়ার জন্য অতি বৃষ্টিকে কারণ বলছেন প্রকল্প পরিচালক। তিনি জানান, ‘ঢাকার বুকে এটি একটি মেগা প্রকল্প। চলতি বছর রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টির কারণে কাজ এগুনো যাচ্ছে না।’

এখন কতটুকু কাজ বাকি আছে জানতে চাইলে সুশান্ত কুমার পাল জানান, ‘মৌচাক থেকে হোসাফ কমপ্লেক্স পর্যন্ত একটু কাজ বাকি আছে। রামপুরা অংশটা শেষ। শুধু নামার দিকে একটু কাজ বাকি। সেটাও হয়ে যাবে।’

সাতরাস্তা থেকে মগবাজার হয়ে চলাচলে দীর্ঘ যানজটের ভোগান্তির সমাধা রাজধানীতে ফ্লাইওভার নিমার্ণের উদ্যেগ নেয়া হয়। এ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি ফ্লাইওভারও নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। সবচেয়ে বড় ফ্লাইওভারটি নির্মাণ করা হয় গুলিস্তান-যাত্রাবাড়ী মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার। এটির দৈর্ঘ্য ১০ কিলোমিটার। এরপরই মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার।

২০১৩ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় ৯ কিলোমিটার লম্বা ফ্লাইওভারটির নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন। এই ফ্লাইওভার প্রকল্পটি ঢাকা শহরের স্ট্রাটেজিক ট্রান্সপোর্ট প্ল্যানের (এসটিপি) অন্তর্ভুক্ত। ইতিমধ্যে ফ্লাইওভারটির কয়েকটি অংশ খুলে দেয়া হয়েছে। গত বছর মার্চে সাতরাস্তা থেকে শুরু হয়ে হলি ফ্যামিলির মোড় পর্যন্ত অংশটি খুলে দেয়া হয়। চলতি বছর এফডিসি মোড় থেকে কারওয়ান বাজারের অংশ যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়।

ফ্লাইওভারটি রিখটার স্কেলে ১০ মাত্রার ভূমিকম্প সহনীয় বলে প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে। প্রতিটি পিলার পাইলের গভীরতা প্রায় ৪০ মিটার গভীর। ফ্লাইওভারটি আটটি মোড় যথাক্রমে- সাতরাস্তা, এফডিসি, মগবাজার, মৌচাক, শান্তিনগর, মালিবাগ, চৌধুরীপাড়া ও রমনা থানা। ফ্লাইওভারটি মগবাজার, মালিবাগ ও সোনারগাঁসহ তিনটি রেলক্রসিং অতিক্রম করেছে।

চার লেনের এ ফ্লাইওভারে ওঠানামার জন্য ১৫টি র‌্যাম্প রয়েছে। তেজগাঁওয়ের সাতরাস্তা, এফডিসি, মগবাজার, হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল, বাংলামটর, মগবাজার, মালিবাগ, রাজারবাগ পুলিশ লাইন এবং শান্তিনগর মোড়ে ওঠানামা করার ব্যবস্থা রয়েছে।

তিনটি উৎস থেকে এই প্রকল্পে অর্থায়ন করা হয়েছে, এর মধ্যে সরকার অর্থায়ন করেছে ৪৪২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। ৭৭৬ কোটি ১৬ লাখ টাকা অর্থায়ন করছে সৌদি ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্ট (এসএফডি) এবং ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ওএফআইডি)।

(ঢাকাটাইমস/১৯জুলাই/এমএবি/মোআ/ডব্লিউবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :