ভুয়া স্বাস্থ্যপণ্য বাজারে, দেখার কেউ নেই
দেশজুড়ে আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে অবৈধ এমএলএম ব্যবসা। বেশ কিছু পণ্যের গায়ে ভুয়া অনুমোদনের সিল লাগিয়ে ব্যবসা শুরু করেছে ‘এক্সিলেন্ট ওয়ার্ল্ড’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যেই প্রতিষ্ঠানটি ছড়িয়ে পড়েছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা ও গ্রামে।
দেশের দুর্গমতম এলাকাগুলোতেও নির্বিঘ্নে চলছে এ প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম। এক্সিলেন্ট ওয়ার্ল্ড ডিসটিউটর ডিলার রফিকুল ইসলাম রুমি জানান, বর্তমানে ৩১১টি কার্যালয়ের মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম চলছে।
অনুন্নত এলাকাগুলোতে স্বাস্থ্যবিষয়ক সভা আয়োজন করে এই এমএলএম ব্যবসা প্রসারিত করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্যবিষয়ক আলোচনার নিম্নবিত্তের মানুষকে তুলনামূলক বেশি আমন্ত্রণ জানানো হয়। সভায় প্রথমে প্রাকৃতিক উদ্ভিদের গুণাগুণ আলোচনা করা হয়। তারপর আলোচ্য উদ্ভিদ দিয়ে তৈরি এই প্রতিষ্ঠানের পণ্য সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। যারা পণ্য নিতে আগ্রহী, পরে তাদের স্থানীর অফিসে নিয়ে দেয়া হয় এমএলএমের দীক্ষা। ঠিক এমনটাই জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি। তিনি রাজধানীর মোহাম্মাদপুরের একটি সভায় অংশগ্রহণ করেছিলেন বলে জানান ঢাকাটাইমসকে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান অধিদপ্তরের নামে ভুয়া অনুমোদন ব্যবহার করছে এই প্রতিষ্ঠানটি। পণ্যের মোড়কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান অধিদপ্তরের অনুমোদনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, কোনো প্রকার বাণিজ্যিক পণ্যে তাদের লোগো বা নাম ব্যবহারের অনুমতি কাউকে দেয়া হয় না। যেকোনো খাদ্যদ্রব্য বাজারজাতকরণ অনুমতি বিএসটিআই দেবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান অধিদপ্তরের প্রাক্তন পরিচালক সাগরময় বড়ুয়া ঢাকাটাইমসকে জানান, ‘ইতিপূর্বে এমন ঘটনা একাধিকবার শোনা গেছে। তবে আমি জানিয়ে রাখবো, আমি দায়িত্বে থাকাকালী এমন কোনো নিয়ম ছিল না এবং এখনো নেই।’
একই কথা বলেন বর্তমান সহপরিচালক নজরুল ইসলাম। তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘বাণিজ্যিকভাবে আমাদের লোগো ব্যবহারের নিয়ম নেই। আমরা কোনো পণ্যে অনুমোদন দেই না। বিশেষ অবস্থায় কেবল পণ্যের মান পরীক্ষা করা হয়ে থাকে।’
বিষয়টি সম্পর্কে এক্সিলেন্ট ওয়ার্ল্ডের প্রতিষ্ঠান প্রধান আনোয়ার হোসেন রানা ওরফে রয়েল রানার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘আমাদের অনুমোদন আছে। যেখানে বিএসটিআই দরকার সেখানে বিএসটিআই এর অনুমোদন আছে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন আছে।’
এর আগেও দেশে বেশ কিছু এমএলএম প্রতিষ্ঠান ব্যবসা করেছে। ডেসটিনি টু থাউজ্যান্ড, ন্যাচারাল নিউট্রি ফুড এবং নেটওয়ার্ক টু থাউজ্যান্ড বিডির মত অনেক এমএলএম প্রতিষ্ঠান হাতিয়ে নিয়েছে মানুষের শত শত কোটি টাকা।
ঢাকাটাইমস/২০জুলাই/কারই/কেএস/ডব্লিউবি