সিটি নির্বাচন

বরিশালে নৌকার প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় চাচা-ভাতিজা

তানিম আহমেদ, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২০ জুলাই ২০১৭, ১২:০৭ | প্রকাশিত : ২০ জুলাই ২০১৭, ০৮:২২
ছবিতে বায়ে আবুল খায়ের আবদুল্লাহ, ডানে সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই হবে ছয় সিটি নির্বাচন। এরই মধ্যে প্রার্থী বাছাই শুরু করে দিয়েছে প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। কিন্তু বরিশালে প্রার্থিতা চূড়ান্ত করতে পারেনি ক্ষমতাসীন দল। সেখানে সাবেক মেয়র শওকত হোসেন হিরনের মৃত্যুর পর রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ হয়েছে এবং এ নিয়ে হিসাব-নিকাশ করতে হচ্ছে সরকারি দলকে।

আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, দলের কেন্দ্রীয় নেতা আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর পরিবারের কাউকেই দলীয় মনোনয়ন দেয়া হতে পারে। এ ক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে দুজনকে ঘিরে চলছে আলোচনা। তারা হলেন কেন্দ্রীয় নেতা আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর ছেলে সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ অথবা আবুল হাসানাতের ভাই আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ওরফে খোকন।

তবে চাচা-ভাতিজার মধ্যে কে পাবেন দলীয় মনোনয়ন, তা নির্ভর করবে নির্বাচনের আগ মুহূর্তের সিদ্ধান্তের ওপর।

গত দুই বছর ধরেই নির্বাচনী প্রস্তুতিতে আছেন সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ। তিনি বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হয়েছেন।

তবে এ বিষয়ে জানতে সাদিক আব্দুল্লাহর ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।

আরেক সম্ভাব্য প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ ওরফে খোকন সেরনিয়াবাতের সঙ্গে কথা হয়েছে ঢাকাটাইমসকে। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের এখনও অনেক সময় রয়েছে। আর প্রার্থী কে হবেন সেটা আওয়ামী লীগ সভাপতিই জানেন।’

আপনি কি মনোনয়ন প্রত্যাশা করেন এমন প্রশ্নের জবাবে খোকন সেরনিয়াবাত বলেন, ‘এটা প্রধানমন্ত্রীই ভালো জানেন। তাই এখানে আমি আগাম কিছু বলতে পারি না।’

মনোনয়ন নিয়ে ভাতিজার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পরিবার কোনো বিরোধ হতে পারে কি না-জানতে চাইলে খোকন বলেন, ‘তাঁর সাথে আমার কোন দ্বন্দ্ব-বিবাদ নাই। সে রাজনীতি করে, তাই মনোনয়ন চাইতেও পারে সে। আর মনোনয়নের বিষয়টা নেত্রীর উপর নির্ভর করবে।’

বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল বলেন, ‘দলগতভাবে সাদিক আব্দুল্লাহকে মনোনয়ন দেয়ার জন্য আমরা কেন্দ্রীয় কমিটি ও জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে অনুরোধ করেছি।’ তিনি বলেন, ‘খোকন সেরনিয়াবাত শেখ পরিবারের সন্তান। আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ সাহেবের ভাই। তিনি যে নির্বাচন করবেন এ জন্য বরিশালে তাঁর কোন কার্যক্রম দেখি না। যেটা সাদিক আব্দুল্লাহ গত তিন চার বছর ধরে করে আসছেন। তিনি পাড়ায় পাড়ায় গণসংযোগ করছেন। দলের সাংগঠনিক কার্যক্রমের নিয়মিত উপস্থিত থাকেন।’

বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম জাহাঙ্গীর ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘মহানগরের যে জায়গায় আমরা কর্মীসভা করেছি সেখানে সাদিক আব্দুল্লাহর নাম উঠে এসেছে। তাই নেতাকর্মীদের পছন্দ অনুযায়ী বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদিক আব্দুল্লাহ।’

খোকন সেরনিয়াবাত প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীর বলেন, ‘ইদানীং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও কিছু পত্রিকায় তাঁর আমরা দেখছি। আমিতো মনে করি তিনি প্রার্থী না, কারণ তাদের পরিবারের মধ্যে কোন দ্বন্দ্ব নেই। আমাদের প্রতিপক্ষ তাকে প্রার্থী হিসাবে দাঁড় করাচ্ছে।’

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ একজন নেতা ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে আমাদের প্রার্থী যাচাই-বাচাইয়ের কাজ চলছে। সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ও জনপ্রিয় ব্যক্তিকে জননেত্রী শেখ হাসিনা মনোনয়ন দেবেন।’

বরিশাল শহরে আওয়ামী লীগের অবস্থান বরাবর কিছুটা দুর্বল। কিন্তু হিরনের হাত ধরে এই দুর্বলতা অনেকটাই কাটিয়ে উঠেছে আওয়ামী লীগ। ২০০৮ সালের ৪ আগস্ট অনুষ্ঠিত প্রথম সিটি নির্বাচনে দল নিরপেক্ষ সরদার সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টু এবং বিএনপির দুই নেতা এবায়েদুল হক চান ও আহসান হাবিব কামালকে হারিয়ে তিনি মেয়র নির্বাচিত হন। পাঁচ বছর দায়িত্বে থাকাকালে তিনি বরিশালের ব্যাপক উন্নয়নও করেন। কিন্তু ২০১৩ সালের নির্বাচনে তিনি হেরে যান।

ওই বছরের ১৫ জুনের ভোটে বিএনপি জোট সমর্থিত প্রার্থী আহসান হাবীব কামাল হিরণকে হারিয়ে দেন ১৭ হাজার ভোটে। কামাল পেয়েছিলেন ৮৩ হাজার ৭৫১ ভোট আর হিরণ পান ৬৬ হাজার ৭৪১ ভোট।

সিটি নির্বাচনে হারার পর হিরণ দশম জাতীয় বরিশাল সদর আসন থেকে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিটিটে সংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু নির্বাচনের তিনমাস পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এরপর ওই আসনে উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী করে হিরনের স্ত্রী জেবুন্নেছা আফরোজ।

আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, হিরণ বেঁচে থাকলেও এই করপোরেশনে প্রার্থী খুঁজতে হতো আওয়ামী লীগকে। কারণ সংসদ সদস্যের পক্ষে মেয়র পদে নির্বাচন করা সম্ভব নয় আইনি বাধ্যবাধকতার কারণে।

সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী নিয়ে এরই মধ্যে দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেছেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। বিভিন্ন জনমত জরিপের ভিত্তিতেই দলের মনোনয়ন দেবেন তিনি।

ঢাকাটাইমস/২০জুলাই/টিএ/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

সাকিবের বিএনএমে যোগ দেওয়ার ছবি প্রসঙ্গে যা বললেন মেজর হাফিজ

পৃথিবীতে কোনো দেশের গণতন্ত্র পারফেক্ট না: ওবায়দুল কাদের

সাকিবের বিএনএমে যোগ দেওয়ার বিষয়ে কিছু জানি না: ওবায়দুল কাদের

বিএনপির কেন্দ্রীয় তিন নেতার পদোন্নতি

দুর্নীতি ও ভোটাধিকার হরণ ছাড়া আ.লীগের আর কোনো অর্জন নেই : এবি পার্টি

‘দেশে ইসলামবিদ্বেষী অপতৎপরতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে’

ক্ষমতাসীনদের কেউ ভালো নেই: গয়েশ্বর

সিন্ডিকেটকে কোলে বসিয়ে বিরোধীদলের ওপর দায় চাপাচ্ছে সরকার: গণতন্ত্র মঞ্চ

ইফতার পার্টিতে আল্লাহ-রাসুলের নাম না নিয়ে আ.লীগের গিবত গায়: প্রধানমন্ত্রী

বাংলার মাটি থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলার সাধ্য কারো নেই: ওবায়দুল কাদের

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :