শাহবাগে কলেজছাত্রদের ওপর পুলিশের টিয়ারসেল

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২০ জুলাই ২০১৭, ১২:২২ | প্রকাশিত : ২০ জুলাই ২০১৭, ১১:৫৫

সাত দফা দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে বিক্ষোভরত কলেজছাত্রদের ওপর টিয়ারসেল ও কাঁদানে গ্যাস মেরেছে পুলিশ। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

পুলিশের ছোড়া কাঁদানে গ্যাসে ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েছেন বিক্ষোভকারীরা। পরে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে সাতজন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গেছেন স্মারকলিপি দিতে।

বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার পর শাহবাগে অবস্থান নেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত রাজধানীর সাতটি কলেজের শিক্ষার্থীরা। সহস্রাধিক শিক্ষার্থী এই বিক্ষোভে অংশ নেন।

আহত কয়েকজন হলেন ঢাকা কলেজের আতিকুল ইসলাম, তিতুমীর কলেজের রাশেদ আহমদ, কবি নজরুল কলেজের আবু হানিফ, বাঙলা কলেজের মিরাজ, ইডেন কলেজের হাজেরা কেয়া, বেগম বদরুন্নেসা কলেজের মালিহা ইরাত।

বিক্ষোভকালে ১৩ জনকে আটক করা হয়েছে। তারা হলেন ঢাকা কলেজের আতিক হাসান, মিজানুর রহমান, সিফাত, ইয়াসিন, হাসানুর রহমান, আসাদুজ্জামান, রফিকুল ইসলাম, ওহিদ, রায়হান, শেখ কামাল, শফিউল ও মিশন এবং বাঙলা কলেজের সাইমুম।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করতে চাইলে এক পর্যায়ে পুলিশ তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারসেল ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে মারে। এ সময় এক শিক্ষার্থীকে আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে তার নাম-পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

রমনা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার আহসানুল ফেরদাউস ঢাকাটাইমসকে জানান, শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি থেকে হঠাৎ পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল ছোড়া হয়। এছাড়া এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করতে চাইলে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস মেরে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সাতটি সরকারি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। কলেজগুলো হচ্ছে, ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি কলেজ, মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ। এই সাত কলেজের প্রত্যেকটিতে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ৩০টি বিষয়ে পড়ানো হয়। প্রথম বর্ষ থেকে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা দুই লক্ষাধিক।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত হওয়ার পাঁচ মাসেও তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমন কোনো নির্দেশনা পায়নি যার মাধ্যমে তারা জানতে পারে, তাদের পরীক্ষা কবে হবে, একাডেমিক সিলেবাস কী হবে, পরীক্ষাপদ্ধতি কেমন হবে, প্রশ্নের ধরণই বা কেমন হবে বা কেমন হবে প্রশ্নের মানবন্টন?

বিক্ষোভকালে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন পোস্টার ও প্লে-কার্ড বহন করেন। একটি প্লে-কার্ডে লেখা ছিল, ‘সেশনজটের প্রহসন, করতে হবে নিরসন।’ আরেকটিতে লেখা ছিল, ‘হইছে অনেক সময় ক্ষেপণ, শীঘ্রই করতে হবে দাবি পূরণ।’

সরকারি তিতুমীর কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী বর্ষা আক্তার বলেন, ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে যাওয়ার পর আমরা খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু বেশ কয়েক মাস চলে গেলেও এখনো আমাদের কোনো পরীক্ষা নেয়া হয়নি। এখনো নাকি কোনো নীতিমালাই করা হয়নি। কবে পরীক্ষা হবে সেটাও আমরা জানি না। আমাদের সঙ্গে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে যারা ছিলেন তারা ইতোমধ্যে পরীক্ষা দিয়ে ফলাফলের অপেক্ষা করছেন।’

এই শিক্ষার্থী ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘কোনো নীতিমালা না করে হুট করে এভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আমাদেরকে দিয়ে দেয়া প্রহসন ছাড়া আর কিছু নয়। আমরা যে সেশনজটে পড়লাম এর দায় কে নেবে?’

শিক্ষার্থীদের সাত দফা দাবি

১. অধিভুক্ত হওয়া কলেজসমূহের ব্যাপারে নীতিমালা প্রণয়ন এবং প্রকাশ (একাডেমিক সিলেবাস, পরীক্ষা পদ্ধতি, প্রশ্নের ধরণ, প্রশ্নের মানবন্টন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে কলেজসমূহের সম্পর্ক ইত্যাদি)।

২. সম্মান ২য় ও ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের ভাইভা/ব্যবহারিক পরীক্ষা অতি অল্প সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে ফলাফল প্রকাশ করা।

৩. সম্মান তৃতীয় বর্ষের এবং মাস্টার্স শেষ পর্বের পরীক্ষা দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রহণ।

৪. ২০১৪-২০১৫ শিক্ষাবর্ষের মাস্টার্স শেষ পর্বের ভর্তি কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করা।

৫ ডিগ্রির আটকে থাকা সব বর্ষের পরীক্ষা দ্রুত সম্পন্ন করা।

৬. অধিভুক্ত কলেজসমূহের সব তথ্য সংবলিত একটি ওয়েবসাইট তৈরি।

৭. শিক্ষার মান উন্নয়ন এবং সেশনজট নিরসনে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ।

(ঢাকাটাইমস/২০জুলাই/এমএম/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজধানী বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজধানী এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :