স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে গৃহবধূর আত্মহত্যা
প্রবাসী স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ির অমানুষিক নির্যাতন সইতে না পেরে মাদারীপুরের কালকিনিতে নারগিস বেগম (৩০) নামের এক গৃহবধূ গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তবে নিহতের পরিবারের অভিযোগ যৌতুকের দাবিতে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকেই ওই গৃবধূর শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছে।
শুক্রবার দিবাগত রাতে এ ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ নিহত গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে।
পুলিশ ও ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কয়ারিয়া এলাকার রামচন্দ্রপুর গ্রামের রহিম হাওলাদারের মেয়ে নারগিস বেগমের সাথে সাহেবরামপুর এলাকার আন্ডারচড় গ্রামের হাসেন চৌকিদারের ছেলে কাতার প্রবাসী আসলাম চৌকিদারের প্রায় ১০ বছর আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। কিছু দিন ভালোই চলে তাদের সংসার। এরপর তাদের সংসার জীবনে সজীব ও স্বজল নামের দুইটি পুত্র সন্তান জন্মগ্রহণ করে। দুইটি সন্তানকে লেখাপড়া করিয়ে মানুষ করার জন্য আসলামকে তার স্ত্রী নারগিস বেগম বাবা বাড়ি থেকে টাকা এনে কাতার পাঠান। কিন্তু তিনি কাতার থেকে ফেরত এসে পুনরায় নারগিস বেগমের কাছে দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। এ দাবিকৃত টাকা না দিতে চাইলে তাকে বিভিন্ন সময় মানুষিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করে আসছে স্বামী আসলাম ও শ্বশুর-শাশুড়ি। এ বিষয় নিয়ে উভয় পরিবারের মাঝে কলহের সৃষ্টি হয়। আর এ নিয়ে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা শালিস-মীমাংসা করেন। কিন্তু তাতে কোনো কাজ না হওয়ায় নিজের জীবন দিয়ে অবশেষে যৌতুকের বলি হন গৃহবধূ নারগিস বেগম।
ঘটনার পর থেকেই স্বামী আসলাম ও তার পরিবারের লোকজন পলাতক রয়েছেন।
নিহতের ভাই রফিকুল ইসলাম মিন্টু কাঁদতে কাঁদতে বলেন, বিভিন্ন সময় আসলাম আমার বোন নারগিসকে আমাদের বাড়িতে যৌতুকের টাকার জন্য পাঠাত। কিন্তু আমরা তার দাবিকৃত টাকা না দিতে পারায় আমার বোনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে আসলাম ও তার পরিবারের লোকজন। আমার বোন আত্মহত্যা করেনি।
অভিযুক্ত স্বামী আসলাম চৌকিদারের সাথে এ বিষয় একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে কালকিনি থানার উপপরিদর্শক রাজকুমার বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মাদারীপুর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছি। ময়না তদন্তের পর বলা যাবে তার কীভাবে মৃত্যু হয়েছে। তবে গলায় রশির চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
(ঢাকাটাইমস/২২জুলাই/প্রতিনিধি/জেবি)