নারীর পেটে গজ: সিভিল সার্জনসহ তিনজনকে তলব
অস্ত্রোপচারের সাড়ে তিন মাস পর বরিশালের এক নারীর পেট থেকে গজ বের করার ঘটনায় পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন, বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগের প্রধান ও বাউফলের নিরাময় ক্লিনিকের মালিককে তলব করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ১ আগস্ট এই তিনজনকে আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে।
বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই আদেশ দেন।
গত ২২ জুলাই একটি জাতীয় দৈনিকে ‘সাড়ে তিন মাস পর পেট থেকে বের হল গজ!’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. শহিদ উল্লা আদালতের নজরে আনার পর রুলসহ হাইকোর্ট আদেশ দেন। বিষয়টি শহিদ উল্লা সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ঘটনার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন, বরিশাল মেডিকেলের গাইনি বিভাগের প্রধান ও বাউফলের নিরাময় ক্লিনিকের মালিককে ১ আগস্ট আদালতে আসতে তলব করেছেন। পাশাপাশি ওই ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার কেন অভিযোগ আনা হবে না তা জানতে চেয়ে রুলেও দিয়েছেন। চার সপ্তাহের মধ্যে স্বাস্থ্যসচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ নয়জনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘অস্ত্রোপচারের সাড়ে তিন মাস পর বরিশালে মাকসুদা বেগম (২৫) নামে এক নারীর পেট থেকে গজ বের করা হয়েছে। মুমূর্ষু অবস্থায় ওই নারীকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে। চিকিৎসকেরা বলেন, দীর্ঘদিন পেটের ভেতর গজ থাকায় খাদ্যনালিতে অনেকগুলো ছিদ্র হয়ে গেছে।
গত বৃহস্পতিবার মাকসুদা বেগমের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় রাতে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। মাকসুদা পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার বিলবিলাস গ্রামের মো. রাসেল সরদারের স্ত্রী। গত মার্চে অস্ত্রোপচার করে মাকসুদা একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। তখন তাঁর পেটে গজ রেখে সেলাই করে দেন চিকিৎসক।
মাকসুদার মা রোকেয়া বেগম বলেন, গত মার্চে সন্তান প্রসবের জন্য মাকসুদাকে বাউফলের নিরাময় ক্লিনিকে নেয়া হয়। অস্ত্রোপচার করে মাকসুদার একটি মেয়ে হয়। কয়েক দিন ক্লিনিকে থাকার পর তাঁরা বাড়ি ফেরেন। এক মাস পর মাকসুদা পেটে তীব্র ব্যথা অনুভব করায় আবারও ওই ক্লিনিকে যান। চিকিৎসকেরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ওষুধ দিয়ে ব্যথা কমানোর চেষ্টা করেন। দুই মাস পর খিঁচুনি দিয়ে জ্বর ওঠে। তখন খাওয়াদাওয়াও বন্ধ হয়ে যায়।
গত জুনে বরিশাল মেডিকেলের বহির্বিভাগে দেখানো হয়। তখন আলট্রাসনোগ্রাফিতেও কিছু ধরা পড়ে না। এরপর পটুয়াখালীতে এক চিকিৎসককে দেখানোর পর তিনি বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরামর্শ দেন। ১২ জুলাই হাসপাতালে মাকসুদার অস্ত্রোপচার হয়। তখন তাঁর পেটের ভেতর থেকে গজ বের করা হয়।
ঢাকাটাইমস/২৩জুলাই/এমএবি/এমআর