ইংরেজির দুর্বলতায় কুমিল্লায় ফল বিপর্যয়

মহিউদ্দিন মাহী, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৩ জুলাই ২০১৭, ১৮:৫২

দুই বছর আগে যশোর শিক্ষাবোর্ডে যা হয়েছিল, এবার তা হয়েছে কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডে। ২০১৫ সালে যশোর শিক্ষাবোর্ডে এইচএসসিতে পাসের হার ছিল ৪৬.৪৫ শতাংশ। আর এবার কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডে পাসের হার হয়েছে ৪৯.৫২ শতাংশ। মূলত শিক্ষার্থীরা ইংরেজিতে খারাপ করায় এই দশা হয়েছে দুই বোর্ডেই।

চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষায় আট বোর্ডের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ ফল করেছে কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড। শতকরা ৫০ শতাংশও পাস করতে পারেনি সেখানে। আবার যারা পাস করেছে, তাদের মধ্যে প্রতি ২০ জনের একজন জিপিএ ভাইভ পেলেও কুমিল্লায় তা দেড় জনের কিছুটা বেশি।

কেন কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে এবার সবচেয়ে খারাপ ফল এনিয়ে আলোচনা সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়েও। খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বিস্মিত হয়েছেন।

তবে ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, কুমিল্লা বোর্ডে সবচেয়ে খারাপ ফল হয়েছে ইংরেজিতে। এই বিষয়ে পাসের হার ৬২ শতাংশ। আর সব বিষয়ে পাসের হার ৮০ শতাংশের উপরে। বিজ্ঞানের বিষয়গুলোতে পাসের হার ৮০ শতাংশের উপরে।

জানতে চাইলে কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কায়সার আহমেদ ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমাদের বোর্ডে সব বিষয়েই ভাল ফল হয়েছে। কিন্তু ইংরেজিতে পাসের হার কমে যাওয়ার প্রভাব পড়েছে সার্বিক ফলে।’

কেন ইংরেজিতে কম পাস করল?

‘আসলে আমাদের ইংরেজিতে এখনো সেইভাবে দক্ষতা গড়ে উঠেনি। ইংরেজির শিক্ষক যেমন অভাব আছে, তেমনি শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইংরেজি ভীতি কাজ করছে। সবমিলিয়ে ইংরেজিতে পাসের হার কমেছে।’

আগে তো ইংরেজিতে পাসের হার কম ছিল না, এবার কেন?

‘এবার খাতা দেখা হয়েছে সঠিক মাফকাঠিতে। খাতা দেখায় কোনো গাফিলতি ছিল না। শিক্ষার্থীরা যেটা লিখেছে সেটার উপর নির্ভর করেই নম্বর দেয়া হয়েছে।’

কুমিল্লায় ইংরেজিতে প্রশ্ন বেশি কঠিন হয়েছে?

‘প্রশ্ন কঠিন হয়নি। প্রশ্নে কোনো ভুলও ছিল না এবার। কারণ আমরা প্রশ্ন হবার পর যখন মূল্যায়ন নিয়ে বসি তখন এসব নিয়ে কথা হয়। প্রতিবছরই কোনো না কোনো অভিযোগ আসে। এবার কোনো অভিযোগ আসেনি। প্রশ্ন সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্ট্যান্ডার্ড হয়েছে।’

তবে ২০১৫ সালে যশোর শিক্ষা বোর্ডে যা হয়েছিল, তার সঙ্গে কুমিল্লায় এবারকার সমস্যার পার্থক্য আছে বলে জানান পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক। তিনি বলেন, ‘যশোরে প্রশ্ন কঠিন ছিল। কিন্তু এখানে একজন সাধারণ শিক্ষার্থীর মান অনুযায়ী প্রশ্ন তৈরি করা হয়েছে। এখান প্রশ্নে কোনো সমস্যা ছিল না। সাধারণভাবেই সঠিকভাবে খাতা মূল্যায়নের কারণেই ফলাফল তুলনামূলক খারাপ হয়েছে।’

এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক ওয়াহেদুজ্জামান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘কোন বোর্ডই একজন পরীক্ষার্থীকে পাস করায় না। সে পাস করে। তার যে যোগ্যতা সে অনুযায়ী শিক্ষার্থী নম্বর পায়। বোর্ড এক্ষেত্রে কোনো প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে না। তবে ফলাফল খারাপের পেছনে বিভিন্ন কারণ থাকে। অন্যতম কারণ হচ্ছে শিক্ষার্থীদের মান উন্নয়নে যথেষ্ট সুযোগ না থাকা বা না পাওয়া। কুমিল্লায় হয়তো এমন ঘটনা ঘটতে পারে। সেটি আমরা তদন্ত করে দেখব।’

‘অনেক স্কুল থাকে যেখানে ভাল শিক্ষক নেই। শিক্ষক থাকলেও ইংরেজি বা ভাল সাবজেক্ট পড়ানোর মতো ভাল শিক্ষক নেই। এসব কিন্তু এখনো আমাদের বাস্তবতা’-বলেন মাউশি প্রধান।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি শিক্ষা বোর্ডের পদস্থ কর্মকর্তা ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আসলে ইংরেজিতে আমাদের সারাদেশের একই চিত্র। আমরা ইংরেজিতে এখনো কাঙিক্ষত সাফল্য অর্জন করতে পারিনি।’

(ঢাকাটাইমস/২৩জুলাই/এমএম/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

শিক্ষা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিক্ষা এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :