চট্টগ্রাম বোর্ডে এইচএসসিতে ফেল ৩২ হাজার ৬৭ জন

চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৩ জুলাই ২০১৭, ২০:৩৬

চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় ৩২ হাজার ৬৭ জন পরীক্ষার্থী ফেল করেছেন। ফলে চট্টগ্রামে কমেছে পাসের হার। জিপিএ ফাইভ নেমে এসেছে গতবছরের চেয়ে প্রায় অর্ধেকে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, সৃজনশীল ও বহু নির্বাচনে এবার নতুন করে মানবন্টন, উচ্চতর গণিত প্রথমবারের মতো এবার সৃজনশীল হওয়া ছাড়াও পদার্থ বিজ্ঞানে খারাপ করায় এবারের পাসের হার ও জিপিএ ফাইভ কমেছে বলে শিক্ষাবোর্ড কর্মকর্তাদের অভিমত।

চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে এবছর পাসের হার ৬১.০৯ শতাংশ। গতবছর এ পাসের হার ছিলো ৬৪.৬০ শতাংশ। এবছর জিপিএ পেয়েছেন ১ হাজার ৩৯১ জন ও গতবছর ছিলো ২ হাজার ২৫৩ জন। একইসাথে চট্টগ্রাম মহানগর, জেলা কক্সবাজারসহ তিন পাবর্ত্য জেলাসহ প্রত্যন্ত এলাকার কলেজগুলোর ফলাফল খারাপ করায় সার্বিক ফলাফলে এর প্রভাব পড়েছে।

আজ রবিবার বেলা ১ টায় চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড মিলনায়তনে এইচএসসির ফলাফল আনুষ্ঠানিক প্রকাশের আগে সংক্ষিপ্ত এক সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মাহবুব হাসান বলেন, যদিও গতবছরের তুলনায় চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে এসএসসিতে পাসের হার ৩ শতাংশ কমেছে। তারপরও সামগ্রিকভাবে ফলাফল বেশি খারাপ হয়েছে সেটা বলা ঠিক হবে না। কারণ অনান্য বোর্ডের চেয়ে চট্টগ্রাম এগিয়ে আছে।

পাসের হার খারাপ হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বা আইসিটিতে এবছর পাসের হার ৮২.৭৬ শতাংশ। গতবছর সেটি ছিলো ৮৯.১৪ শতাংশ। ইংরেজি ১ম পত্রে এবছর পাসের হার ৮৪.১১ শতাংশ । গতবছর ছিলো ৯০.৭৪ শতাংশ। পদার্থ বিজ্ঞান ১ম পত্রে এবছর পাসের হার ৬৪.৭৩ শতাংশ।

গতবছর এটি ছিলো ৮২.৫০ শতাংশ। উচ্চতর গণিত ১ম পত্রে এবছর পাসের হার ৭১.৪৪ শতাংশ। গতবছর এটি ছিলো ৯১.৪৭ শতাংশ। উচ্চতর গণিত ২য় পত্রে এবছর পাসের হার ৮৬.৫৭ শতাংশ। গতবছর এটি ছিলো ৮৯.২২ শতাংশ।

মাহবুব হাসান আরো বলেন, ফলাফল খারাপ হওয়ার পিছনে সৃজনশীল ও বহুনির্বাচনের মান বন্টন ও দায়ী। কারণ গতবছর সৃজনশীলের জন্য নির্ধারিত নম্বর ছিলো ৬০ ও বহুনির্বাচনের জন্য ছিলো ৪০। অন্যদিকে ব্যবহারিক পরীক্ষায় সৃজনশীলের জন্য ছিলো ৪০ ও বহুনির্বাচনের জন্য ছিলো ৩৫। এ বছর সৃজনশীলে নতুন করে হওয়া মানবণ্টনে বরাদ্দ ছিলো ৭০ নম্বর ও বহুনির্বাচনে ছিলো ৩০ নম্বর। ব্যবহারিক পরীক্ষায় সৃজনশীলের জন্য মানবণ্টন ছিলো ৫০ নম্বর ও বহুনির্বাচনের জন্য ছিলো ২৫ নম্বর।

আর বরাবরের মতোই মহানগর, মফস্বল ও তিন পাবর্ত্য জেলার কলেজগুলোতে আইসিটি বিষয়ে শিক্ষক না থাকাতেও এবছরের ফলাফল খারাপ হয়েছে। এছাড়া মফস্বলে পাঠদানের উপযোগী বিজ্ঞান বিভাগের দক্ষ শিক্ষক না থাকায়ও এইচএসসির খারাপ ফলাফলের কারণ বলে জানান মাহবুব হাসান।

সংবাদ সম্মেলনে অনান্যদের মধ্যে বোর্ডের সচিব অধ্যাপক মো. আদুল মুবিন, বোর্ডের সিনিয়র সিস্টেম এনালিস্ট কিবরিয়া মাসুদ খানসহ অন্যান্য কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

চট্টগ্রাম শিক্ষাবোডে ৯৮টি কেন্দ্রের অধীনে ২৩৮টি কলেজে অনুষ্ঠিত এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় মোট নিবন্ধিত ৮৩ হাজার ২২৭ জন। এর মধ্য থেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন ৮২ হাজার ৪১৪ জন। এ হিসেবে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে পাসের হার ৬১.০৯ শতাংশ ও জিপিএ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ হাজার ৩৯১ জন। ফেলের হিসাবে মোট ফেল করেছে ৩২ হাজার ৬৭ জন।

গতবছর ৯৭টি কেন্দ্র থেকে ২২৫টি কলেজের অধীনে নিবন্ধিত ৮৭ হাজার ৫৪২ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন ৮৬ হাজার ৭১৬ জন। গতবছর পাসের হার ছিলো ৬৪.৬০ শতাংশ ও জিপিএ ফাইভ পেয়েছিলেন ২ হাজার ২৫৩ জন। এবছর ছাত্র পাসের হার ৫৯.৫৫ শতাংশ ও ছাত্রী পাসের হার ৬২.৬৫ শতাংশ। গতবছর ছাত্র পাসের হার ছিলো ৬৩.৬৭ শতাংশ ও ছাত্রী পাসের হার ছিলো ৬৫.৫২ শতাংশ।

এদিকে গতবছরের তুলনায় মহানগর, জেলা ও কক্সবাজারসহ তিন পার্বত্য জেলাতেও পাসের হার কমেছে। এবছর মহানগরে পাসের হার ৭৬.৬৮ শতাংশ, মহানগর বাদে চট্টগ্রাম জেলায় পাসের হার ৫৫.৮১ শতাংশ ও মহানগরসহ চট্টগ্রাম জেলায় পাসের হার ৬৪.৯৮ শতাংশ। গতবছর মহানগরে পাসের হার ছিলো ৭৬.৯৬ শতাংশ, মহানগরবাদে চট্টগ্রাম জেলায় ৬০.২৩ শতাংশ ও মহানগরসহ চট্টগ্রাম জেলায় ৬৭.৫৮ শতাংশ।

এদিকে গতবছরের তুলনায় এছাড়াও কক্সবাজারসহ তিনপার্বত্য জেলাতেও পাসের হার কমেছে। কক্সবাজার জেলায় পাসের হার ৫৫.৩২ শতাংশ, রাঙ্গামাটি জেলায় পাসের হার ৪৫.৯৯ শতাংশ খাগড়াছড়ি জেলায় ৪৪.৬৩ শতাংশ ও বান্দরবান জেলায় পাসের হার ৫৫.২২ শতাংশ।

গতবছর কক্সবাজার জেলায় পাসের হার ছিলো ৬৩.৭৪ শতাংশ, রাঙ্গামাটি জেলায় পাসের হার ৪৭.১৪ শতাংশ, খাগড়াছড়ি জেলায় পাসের হার ৫১.৭০ শতাংশ ও বান্দরবান জেলায় পাসের হার ছিলো ৬১.৬৪ শতাংশ। এবার শতভাগ পাস করা কলেজের সংখ্যা ১টি ও গতবছর এ সংখ্যা ছিলো ৫টি। পাসের হার শূন্য এমন কলেজের সংখ্যা এবছর ও নেই। গতবছরও ছিলো না।

এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগেরর ফলাফল গতবছরের তুলনায় এগিয়ে থাকলে মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষায় পিছিয়ে আছে। এবার বিজ্ঞান বিভাগে পাসের হার ৭৭.৩৪ শতাংশ, মানবিক বিভাগে পাসের হার ৪৭.৪৯ শতাংশ ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে পাসের হার ৬৫.৩৬ শতাংশ। গতবছর বিজ্ঞান বিভাগে পাসের হার ছিলো ৭৬.৬৬ শতাংশ, মানবিক বিভাগে পাসের হার ৫১.৬২ শতাংশ ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে পাসের হার ছিলো ৭০.৮৫ শতাংশ।

(ঢাকাটাইমস/২৩জুলাই/আইকে/ইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

শিক্ষা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিক্ষা এর সর্বশেষ

বিএসএমএমইউর ১২৪ শিক্ষক-চিকিৎসক ‘গবেষণা অনুদান’ পেলেন সাড়ে ৪ কোটি টাকা

ঢাবির সুইমিংপুলে শিক্ষার্থীর মৃত্যু: তদন্ত কমিটি গঠন

বুয়েটে রাজনীতি: হাইকোর্টের আদেশ পাওয়ার পর আইনি পদক্ষেপের ঘোষণা

মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেওয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর

বিএসএমএমইউর উপ-উপাচার্য হলেন আতিকুর রহমান

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন ও দ্রুত সেবা প্রদানে নির্দেশ উপাচার্যের

বরিশালে ভিবিডির 'হিটস্ট্রোক প্রতিরোধ ও সচেতনতা' বিষয়ক ক্যাম্পেইন

সনদ জালিয়াতি: কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান আলী আকবর খানকে অব্যাহতি

প্রচণ্ড দাবদাহের কারণে অনলাইনে ক্লাস নেবে কুবি

প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: তৃতীয় ধাপের সংশোধিত ফল প্রকাশ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :