ডিএমপি কমিশনারের সন্দেহ, সিদ্দিকুরের আঘাত স্যাবোটাজ
পরীক্ষার রুটিনের দাবিতে আন্দোলনে নেমে চোখে সরকারি তিতুমীর কলেজের ছাত্র সিদ্দিকুর রহমানের চোখের আঘাত পুলিশের ছোড়া কাঁদানে গ্যাসে হয়েছে- এটা পুরোপুরি মানতে নারাজ ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। তার আশঙ্কা এখাতে স্যাবোটাজ (অন্তর্ঘাত) হতে পারে। কীভাবে এই আঘাত লাগল, তা খতিয়ে দেখার কথাও জানিয়েছেন তিনি।
সোমবার দুপুরে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে সিদ্দিকুরকে দেখে এসে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ডিএমপি কমিশনার।
এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘আহত সিদ্দিকুরের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেছি। আহত স্থানটি দেখেছি। একটি টিয়ার শেল বা একটি ঢিলের আঘাতে একই সঙ্গে দুই চোখে আঘাত লাগতে পারে না। যদি একটির আঘাত লেগে থাকে, তাহলে নাক বা কপাল ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কিন্তু তাঁর নাক বা কপালে কোনো আঘাত নেই।’
‘সিদ্দিকুরও বলেছে, সে একটি আঘাত পেয়েছে। তারপর সংজ্ঞা হারিয়েছে। কীভাবে আঘাত লাগল? এটা একটি বড় প্রশ্ন। অনুসন্ধান করে তদন্ত করে কারণ বের করা হবে। এখানে অন্য কোনো পক্ষ থেকে স্যাবোটাজ করা হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখব।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত সরকারি কলেজে পরীক্ষার রুটিন ঘোষণার দাবিতে গত বৃহস্পতিবার শাহবাগে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। এ সময় একটি মিছিলে পুলিশ কাছ থেকে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। ওই ঘটনার ধারণ করা ভিডিওতে দেখা গেছে, পুলিশের কাছাকাছি থাকা সিদ্দিকুর মাটিতে লুটিয়ে পড়ছেন।
সিদ্দিকুর বর্তমানে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন। সেখানে শনিবার তার চোখে অস্ত্রোপচার করা হয়। ইনস্টিটিউটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ইফতেখার মো. মুনির জানান, বাঁ চোখের এক পাশ থেকে আলো দেখছেন সিদ্দিকুর রহমান। তবে ডান চোখে তিনি দেখছেন না।
সিদ্দিকুরের ঘটনায় সরকারের শীর্ষ পর্যায়ও অস্বস্তিতে আছে। তার চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। আর সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, সিদ্দিকুরকে প্রয়োজনে বিদেশে চিকিৎসা করাবে সরকার।
এই ঘটনায় সমালোচনার মধ্যে ঢাকা মহানগর পুলিশ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। যুগ্ম কমিশনারের (অপারেশনস) নেতৃত্বে পুলিশের দুজন পরিদর্শককে (এসপি) এ নিয়ে কাজ করছে। তারা আশেপাশের ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজ ও ভিডিও ফুটেজগুলো সংগ্রহ করেছে বলে জানান ডিএমপি কমিশনার।
আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ‘তদন্তে পুলিশের যদি কোনো গাফিলতি থাকে, অতিরিক্ত বল প্রয়োগ বা অপেশাদার আচরণ করে থাকে, অবশ্যই তাকে শাস্তির আওতায় আনা হবে। তবে ঘটনা যা-ই হোক, সেটা অত্যন্ত দুঃখজনক, দুর্ভাগ্যজনক ও অনভিপ্রেত।’
ঢাকাটাইমস/২৪জুলাই/এএকে/ডব্লিউবি