সুত্রাপুরের শাহীদ হত্যা মামলার একমাত্র আসামি খালাস
রাজধানীর সুত্রাপুরের জাস্টিস লালমোহন দাস লেনে শেখ মনির হোসেন ওরফে শাহীদের নৃশংস হত্যা মামলায় একমাত্র আসামি নিহতের চাচাত ভাই শেখ ওয়াহিদ হোসেন বাদ্দুকে খালাস দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।
সোমবার ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক সাঈদ আহমেদ এ খালাসের রায় ঘোষণা করেন।
বিচারক একমাত্র আসামিকে খালাস দেয়ার কারণ হিসেবে রায় ঘোষণার সময় বলেন, এটা একটা হত্যাকাণ্ড। অনেকগুলো বিষয় মারাত্মক সন্দেহজনক। আসামিকে ছুরি হাতে পালাতে দেখেন সাক্ষীরা। একথায় তাকে সাজা দিতে হবে। কিন্তু সেই ছুরি উদ্ধার হয়নি। ঘটনার সাথে সাক্ষ্য প্রমাণের মাধ্যমে আসামিকে সম্পৃক্ত করা সম্ভব হয়নি। হত্যার ঘটনা ঘটলেও রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়। তাই তাকে খালাসের আদেশ দিচ্ছে ট্রাইব্যুনাল।
তবে রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে মামলার বাদী শেখ শামসুদ্দিন বলেন, আমরা সন্তুষ্ট না। কী নৃশংসভাবে একজনকে মেরে ফেলল আর সে খালাস পেল। তাকে দশবারও যদি ফাঁসি দেয়া হয়, তবুও কম হবে। রায়ের বিরুদ্ধে তারা উচ্চ আদালতে যাবেন বলে জানান।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, নিহত শেখ মনির হোসেন শাহীদ এবং আসামি শেখ ওয়াহিদ হোসেন বাদ্দু সম্পর্কে আপন চাচাত ভাই। শাহীদের তার বাবার প্রথম পক্ষের একমাত্র সন্তান। শাহীদের মা মারা যাওয়ার পর তার বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করে স্ত্রীকে নিয়ে পাকিস্তানে চলে যান। সেখানেই স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন তিনি। শহীদের পাকিস্তানে থাকা সৎবোন মেরীকে ২০০৫ সালে আসামি বাদ্দু তার পিতার অমতে পাকিস্তানে গিয়ে বিয়ে করে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন।
ওই কারণে আসামি বাদ্দুকে তার পিতা সম্পত্তি না দিয়ে মেয়ের নামে লিখে দেন। বাদ্দু পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হওয়ায় তার শ্বশুরের আড়াই কাঠা জমি পাওয়ার জন্য ২০১৫ সালের ২৫ মে রাতে বাদ্দু শাহীদকে তার নিজ কক্ষে ধারালো ছোড়া দিয়ে আঘাত ও গলা কেটে খুন করে পালিয়ে যান। ওই ঘটনায় শাহীদের চাচা শেখ শামসুদ্দিন বাদী হয়ে সুত্রাপুর থানায় বাদ্দুকে একমাত্র আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলাটি তদন্ত করে সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক আকরাম হোসেন ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ওই বছরের ৩০ অক্টোবর আদালত বাদ্দুর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করেন। মামলাটির বিচারকাজ চলাকালে ২০ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত।
(ঢাকাটাইমস/২৪জুলাই/আরজেড/জেবি)