বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অপসারণের আন্দোলনে ছাত্রলীগ

বরিশাল ব্যুরো, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৪ জুলাই ২০১৭, ১৯:৩৪

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ড. এস এম ইমামুল হকের অপসারণের দাবিতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। এ নিয়ে লাগাতার আন্দোলনও শুরু করেছে ছাত্রলীগ।

সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এ আন্দোলন চাঙা করে তুলছেন। শুধু ছাত্রলীগ নয় ভিসির অপসারণ দাবিতে ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি কর্মসূচি করেছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ থেকে শুরু করে সাংস্কৃতিক সংগঠন সমন্বয় পরিষদ।

ভিসি ড. ইমামুল হকের সরাসরি তত্ত্বাবধানে ৪১ কর্মকর্তা-কর্মচারীর নিয়োগে মুক্তিযোদ্ধা কোটা না থাকায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। তাদের দাবি মুক্তিযুদ্ধকে অপমান করেছেন এ ভিসি। তাই লাগাতার আন্দোলন করছেন তারা।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ নেতা ইমরান হোসেন নাইম জানান, ভিসি মুক্তিযুদ্ধকে অপমান করেছে তাই আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছি। একটা চক্র আমাদের এ আন্দোলনের মধ্যে নৈরাজ্য সৃষ্টি করার চেষ্টা করতে চাইছে।

ছাত্রলীগ নেতা রুম্মান হোসেন রুবেল বলেন, ‘অন্যায়কে প্রতিষ্ঠা করার জন্য ভিসি চেষ্টা করছেন। মুক্তিযুদ্ধকে অপমান করেছেন এ স্বাধীনতাবিরোধী ভিসি। আমরা তার অপসারণ চাই।’

রাজীন তাহমিদ নামে এক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘আমরা অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ভিসি দুর্নীতি করেছেন, মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তাই তার বিরুদ্ধে আমরা সাধারণ ছাত্ররা আন্দোলনে নেমেছি।’

এই নেতা বলেন, ‘ভিসি দুই বছরে আমাদের জন্য কিছুই করেননি। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি গ্রন্থাগার নেই, নেই একটি মসজিদও। আমাদের কোনো দাবিই মানেন না তিনি। তাই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে তার কোনো প্রয়োজন আমরা মনে করছি না।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা আবু তালহা তোহা জানান, সাধারণ শিক্ষার্থীদের চলমান শান্তিপূর্ণ আন্দোলন কর্মসূচির অংশ হিসেবে তারা আজ সকাল থেকে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মুক্তিযোদ্ধার কোঠা না রাখায় নিন্দা ও তা বহাল করার দাবি, ভিসির অপসারণের দাবির পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের আবাসন সমস্যাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরে একটি দাবিনামা প্রস্তুত করা হচ্ছে। যা আজই প্রকাশ করা হতে পারে। তাদের দাবি মানা না হলে ভিসির অপসারণের দাবি ও আন্দোলন বহাল থাকবে।

বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর শফিউল আলম বলেন, বিষয়টি আমরা অবজারভেশনে রেখেছি। ওরা কী চাচ্ছে সেটা আমার এখনো জানতে পারিনি। আর ওরা যে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির কথা বলছে, সেই নিয়োগ প্রক্রিয়া বিধি মোতাবেক হচ্ছে। ওদের আবেদন করতে বলেছি। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ব্যবস্থা নেব। আর সকালে একটি বিকট আওয়াজের কথা শুনেছি। তবে এটা কিসের সেটা এখনো জানতে পারিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মুক্তিযোদ্ধা কোঠা না থাকায় ১৭ জুলাই থেকে ভিসির বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হয়। সেদিন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের আয়োজনে ভিসির অপসারনের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। ১৯ জুলাই বরিশাল সাংস্কৃতিক সংগঠন সমন্বয় পরিষদের আয়োজনে ছয় সংগঠন একই দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে। পরে মুক্তিযোদ্ধা সংসদে সংবাদ সম্মেলন করে মুক্তিযোদ্ধারা। এরপরেই ২০ জুলাই ভিসির বিরুদ্ধে মানববন্ধনের প্রতিবাদে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার ব্যানারে শিক্ষক এবং কর্মকর্তারা মানববন্ধনের আয়োজন করলে ছাত্রলীগের বাধায় তা পণ্ড হয়ে যায়। এরপর থেকেই ২৩ জুলাই সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভিসির অপসারণের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে আন্দোলন শুরু করে ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের লাগাতার আন্দোলনের প্রথম দিনেই বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের তৃতীয় তলায় ককটেল বিস্ফোরণ হয়, তাতে ক্যাম্পাসে কিছুটা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তী সময়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে ছাত্রলীগ। সর্বশেষ আজ একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে ছাত্রলীগ।

একটি সূত্র জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষকও এ আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত।

(ঢাকাটাইমস/২৪জুলাই/টিটি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :