টাঙ্গাইলে বিএনপির দুই পক্ষে সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৫ জুলাই ২০১৭, ০৯:০৭ | প্রকাশিত : ২৫ জুলাই ২০১৭, ০৮:৩৪

টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির দুই পক্ষে সংঘর্ষের ঘটনায় কেন্দ্রীয় যুবদলের কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, জেলা বিএনপির সভাপতি শামছুল আলম তোফা, সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবালসহ ২৬ নেতাকর্মীর নামে মামলা করেছে সদর থানা পুলিশ। সোমবার বিকালে টাঙ্গাইল সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আল মামুন বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলায় অজ্ঞাত আরও এক/দেড়শ’ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে যানবাহন ও বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙচুর এবং জনমনে আতঙ্ক ও ভয়ভীতি সৃষ্টির অভিযোগ আনা হয়।

গত রবিবার দুপুরে বিএনপির বর্তমান কমিটির নেতাকর্মী এবং কমিটিতে পদবঞ্চিতদের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। মামলায় বর্তমান কমিটির নেতাকর্মীদের আসামি করা হলেও পদবঞ্চিত অংশের কাউকে আসামি করা হয়নি।

মামলার বিবরণে বাদী উল্লেখ করেন, যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর নির্দেশে তার ভাই জেলা বিএনপির সভাপতি শামছুল আলম তোফা, সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবালের নেতৃত্বে রবিবার সকাল ১০টার দিকে ১০০/১৫০ নেতাকর্মী প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে সমবেত হয়। তারা টাঙ্গাইল শহরে কৃত্রিম সন্ত্রাস ও নাশকতা সৃষ্টির লক্ষ্যে দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোটা এবং ইটপাটকেল নিয়ে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত নিজেদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়াসহ ভাঙচুর ও জনমনে আতঙ্ক ও ভয়ভীতির সৃষ্টি করে।

মামলায় জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি সাদেকুল আলম খোকা ও আতাউর রমজান জিন্নাহ, যুগ্ম সম্পাদক খন্দকার আনিসুর রহমান ও আবুল কাশেম, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হামিদ তালুকদার, প্রচার সম্পাদক ও জেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক একেএম মনিরুল হক, জেলা তাঁতী দলের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি খন্দকার রাশেদুল আলম, ছাত্রদলের সহ-সভাপতি আবেদ হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক নুরুল ইসলাম, ক্রীড়া সম্পাদক রাশেদ খান, যুবদল কর্মী তানভির হোসেন, আমিনুল ইসলাম, মানিক মিয়া, রুবেলকে এবং রোববার সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া বিএনপি কর্মী রজব মিয়া, মনিরুজ্জামান তুষার, সিরাজুল ইসলাম, সিফাত মিয়া, শহিদুল ইসলাম, আবুল হোসেন, ইকবাল হোসেন, আমির হামজা সিকদারকে আসামি করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার হওয়া আট বিএনপি কর্মীকে সোমবার টাঙ্গাইল আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠিয়ে দেন।

মামলার বিষয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি শামছুল আলম তোফা জানান, সরকারি দলের সঙ্গে আঁতাত করে পদবঞ্চিতরা জেলা বিএনপিরকর্মী সংগ্রহ কর্মসূচিতে প্রশাসনের সহায়তায় হামলা করেছিল। হামলাকারী আলাল নামক একজনকে পুলিশ আটক করলেও পরে তাকে ছেড়ে দেয়।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল জানান, বিএনপির নেতাকর্মীদের হয়রানি করার জন্য সরকারি দল ও প্রশাসন দলের পদবঞ্চিত একটি অংশকে ব্যবহার করে এই হামলা ও মামলা সাজিয়েছে।

এদিকে পদবঞ্চিত অংশের নেতা এবং কমিটি থেকে পদত্যাগী সহ-সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহীন জানান, কমিটি গঠনে ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করা হয়নি। তাই তারা রবিবার সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচিতে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে অভিযোগ জানাতে যাচ্ছিলেন। এ সময় বর্তমান কমিটির নেতৃত্বে হামলার ঘটনা ঘটে। তারা যেহেতু হামলা ভাঙচুর করেছে মামলা তাদের বিরুদ্ধে হবে এটাই স্বাভাবিক।

উল্লেখ্য, গত ২৬ মে শামছুল আলম তোফাকে সভাপতি এবং ফরহাদ ইকবালকে সাধারণ সম্পাদক করে জেলা বিএনপি কমিটি ঘোষণা করা হয়। শামছুল আলম সাবেক উপমন্ত্রী ও ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় আসামি আব্দুস সালাম পিন্টু এবং কেন্দ্রীয় যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর ভাই। বিদ্রোহী পক্ষের অভিযোগ সুলতান সালাউদ্দিন টুকু কেন্দ্রে প্রভাব বিস্তার করে তার ভাইকে সভাপতি করেছেন ও তাদের অনুসারিদের কমিটিতে স্থান দিয়েছেন। পরে গত জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে এই কমিটি বাতিলের দাবিতে চারজন কমিটি থেকে পদত্যাগ করে। বাতিল না হওয়া পর্যন্ত এই কমিটি যে কর্মসূচি নেবে তা প্রতিহত করার ঘোষণা দেন বিদ্রোহী গ্রুপ।

ঢাকাটাইমস/২৫জুলাই/আরকে/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :