ভাঙন ঠেকাতে গ্রামবাসীর আপ্রাণ চেষ্টা

আজহারুল হক, গফরগাঁও থেকে
 | প্রকাশিত : ২৫ জুলাই ২০১৭, ০৯:০৫

ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার সীমান্তবর্তী কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর ইউনিয়নের সিদলা ইউনিয়নের সাহেবের চর গ্রামের দেড় শতাধিক পরিবার ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনের কবলে পড়ে ভিটেমাটি হারানোর শঙ্কায় রয়েছেন। ভাঙন ঠেকাতে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে বালি এনে তা প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে নদের পাড়ে ফেলছেন গ্রামবাসী।

স্থানীয় সাহেবের চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ওই গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল আলম বলেন, গ্রামবাসী বালি ভর্তি বস্তা ফেলে নদের ভাঙন ঠেকাতে নিরন্তর চেষ্টা চালাচ্ছেন। গত কয়েক বছর ধরেই এ গ্রামের মানুষ ভাঙন ঠেকাতে বস্তা ফেলানোসহ নানা চেষ্টা করে বিফল হয়েছেন। নদের অব্যাহত ভাঙনে গত দুই বছরে অনেক পরিবার ভিটেমাটি হারিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। এছাড়া ভাঙনের কবলে পড়ে ব্রহ্মপুত্র নদে ধসে যায় সাহেবের চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) সুমন রঞ্জন সরকার জানান, গত ১৮ জুলাই মঙ্গলবার ভোরে আমাদের চার কক্ষ বিশিষ্ট একমাত্র বিদ্যালয় ভবনটি বিকট শব্দে ব্রহ্মপুত্র নদে ধসে পড়ে। এ সময় আশপাশের বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে ঘর থেকে বের হয়ে এসে দেখেন বিদ্যালয় ভবনটি বিধ্বস্ত হয়ে নদে ধসে পড়ে। এরপর থেকে নদের পাড়ের বাসিন্দাদের অনেক পরিবার তাদের তাদের বসতঘর নদী গর্ভে চলে যাওয়ার ভয়ে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।

গত সোমবার গফরগাঁওয়ের বেশ কয়েকজন সংবাদকর্মী ওই ধসে পড়া বিদ্যালয়ে পৌঁছে গাছতলায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছিল। সাংবাদিকদের দেখে সোলায়মান নামে পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী ছুটে এসে বলেন, ‘আমাদের স্কুল ঘরটাতো ভেঙে নদীতে পড়ে গেছে। এখন আমরা ক্লাস করবো কোথায়। আমাদের একটা স্কুল ঘরের ব্যবস্থা করে দেবেন।’

হোসেনপুর প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, ১৯৩৭ সালে ৫২ শতাংশ জমি নিয়ে সাহেবের চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপিত হয়। বর্তমানে এ বিদ্যালয়টিতে ২২৭ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। উপস্থিতিও বেশ ভাল। গত কয়েক বছর ধরে পাশের হার শতভাগ।

এদিকে গত মঙ্গলবার সকালে হোসেনপুর উপজেলা চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম মবিন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল ভাঙন কবলিত এলাকা ও ধসে পড়া বিদ্যালয় ভবন পরিদর্শন করেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান, সিদলা ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজ উদ্দিন, আ.লীগ নেতা বদরুল আলম প্রমুখ।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ভাঙন কবলিত এলাকার শতাধিক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ৩২ পরিবারকে তিন হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়েছে। এছাড়াও বিদ্যালয়ের অস্থায়ী ভবন নির্মাণের জন্য ২০ বান্ডিল টিন ও নগদ অর্থ চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর চিঠি পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও নদী ভাঙন কবলিত ১০০টি পরিবারের জন্য ২০ মেট্রিক টন চাল, প্রতিটি পরিবারের জন্য দুই বান্ডিল করে মোট ২০০ বান্ডিল ঢেউটিন ও গৃহ নির্মাণের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে নগদ অর্থ চাওয়া হয়েছে।

ঢাকাটাইমস/২৫জুলাই/প্রতিনিধি/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :