বাগেরহাটে ভেসে গেছে পাঁচ শতাধিক মাছের ঘের

বাগেরহাট প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৫ জুলাই ২০১৭, ২০:৩১

জোয়ার ও টানা বৃষ্টির পানিতে বাগেরহাটের বিভিন্ন এলাকায় শতশত পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। রাস্তা উপচে জোয়ারের পানি ভেতরে ঢুকে অসংখ্য বাড়ি ঘর তলিয়ে গেছে। জোয়ার ও টানা বর্ষার পানিতে অন্তত পাঁচ শতাধিক চিংড়ি ঘের ভেসে গেছে। বৃষ্টি ও জোয়ারের পানি ঢুকে চিংড়ি ঘেরগুলোতে পানি থৈথৈ করছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে জেলার বিপুল পরিমাণ চিংড়ি ও সাদা মাছের ঘের ভেসে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ট ঘের মালিকরা।

টানা বর্ষণে জেলার প্রায় দেড় হাজার হেক্টর জমির আমন ধানের বীজতলা পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এই বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে আমনের বীজতলা নষ্ট হওয়ার আশংকা করছে কৃষি বিভাগ।

এদিকে নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তা রাস্তা উপচে বাগেরহাট সদরের হাড়িখালি ও পোলঘাট এলাকায় বাড়ি ঘরে পানি উঠে গেছে।

সদর উপজেলার কাড়াপাড়া, শিংড়াই, দেওয়ালবাটি, যাত্রাপুর, বারুইপাড়া, বিষ্ণুপুর, পাটরপাড়া, ষাটগুম্বুজ, বাগমারা এলাকায় শতশত পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এখানের ঘরের সামনে পানি জমে রয়েছে। ঘর থেকে মানুষজন বের হতে পারছে না। রান্নার চুলায় পানি উঠে যাওয়ায় রান্না করা যাচ্ছে না। এছাড়াও জেলার ফকিরহাট, কচুয়া, চিতলমারী উপজেলার বেশকিছু এলাকায় পান, সবজি ও মাছের ঘের তলিয়ে গেছে। এতে চাষিরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

পোলঘাট গ্রামের এমডি মুরাদ বলেন, ভৈরব নদীর জোয়ারের পানি রাস্তার উপচে আমাদের গ্রামের বাড়িঘর তলিয়ে গেছে। এছাড়া গত চার দিনের টানা বর্ষণে বসত ঘর ও বাগানে পানিতে তলিয়ে রয়েছে। নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় পানি নামতে পারছে না।

মাঝিডাঙ্গা গ্রামের জরিনা বেগম বলেন, বাড়ি উঠানে হাঁটু পানি জমে রয়েছে। ছেলেমেয়েরা পানির মধ্যে নামতে পারছে না। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।

কাড়াপাড়া ইউনিয়নের ওয়ার্ড সদস্য জাহিদুর রহমান বলেন, আমার ওয়ার্ডের কয়েকশ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। টানা বর্ষণ ও জোয়ারের পানিতে রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি বাগানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। পানি নামার ব্যবস্থা না থাকায় এই এলাকার বাসিন্দাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে জলবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে পান ও মাছের ঘের তলিয়ে গেছে। এতে তাদের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। তিনি তার এলাকার খালগুলো সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন।

বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মো. আফতাব উদ্দিন বলেন, গত এক সপ্তায় বাগেরহাট জেলায় প্রায় তিনশ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। টানা বৃষ্টির পানিতে কৃষি জমির বীজতলা ও সবজি এবং পানের বরাজ তলিয়ে গেছে। বাগেরহাটে প্রায় দেড় হাজার হেক্টর পানের বরজ ও আমন ধানের বীজতলা পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। এই বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে আমনের বীজতলা ও পান নষ্ট হওয়ার আশংকা করছেন তিনি।

বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জিয়া হায়দার বলেন, টানা বর্ষণ জোয়ারের পানিতে সদর উপজেলা ও চিতলমারিতে অন্তত পাঁচশ ঘের তলিয়ে গেছে। জেলার অধিকাংশ মাছের ঘেরে পানি ছুঁইছুঁই করছে। এই বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে মাছের ঘের তলিয়ে চাষিদের আর্থিক ক্ষতি হবে। তাই মাছ চাষিরা তাদের ঘেরের বাঁধ মেরামত করছেন আবার অনেকে বাঁধের উপর দিয়ে নেট দিয়ে মাছ আটকানোর চেষ্টা করছেন।

(ঢাকাটাইমস/২৫জুলাই/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :