এইচএসসিতে সাত দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীর সাফল্য

খাইরুল ইসলাম বাসিদ, পাবনা
 | প্রকাশিত : ২৫ জুলাই ২০১৭, ২২:৪৫

পাবনায় সাত জন্মঅন্ধ শিক্ষার্থী এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল অর্জন করেছেন। চোখের আলো না থাকলেও শ্রুতি লেখকের সহায়তায় অন্য সব শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তারা এই সফলতা অর্জন করেন।

পাবনার মানবকল্যাণ টাস্ট্রের সহায়তায় পাবনা সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজ এবং সেন্ট্রাল গার্লস হাইস্কুল এবং পাবনা কলেজ কেন্দ্র থেকে তারা পরীক্ষা দিয়েছিলেন।

পাবনার বিশিষ্টজনেরা অন্ধ সাত শিক্ষার্থীর সফলতাকে অভিনন্দন জানিয়ে তাদের সহায়তা করতে সামর্থ্যবানদের এগিয়ে আসার আহবান জানান।

সেই কৃতি শিক্ষার্থীরা হলেন- পাবনা জেলার সাঁথিয়া উপজেলার মাহমুদপুর গ্রামের মো. জামিল হোসেন। তিনি পেয়েছেন ৪ দশমিক ১৭ পয়েন্ট। সুজানগর উপজেলার দুর্গাপুরের মো. মুনসুর আলী। তিনি পেয়েছেন ৪ দশমিক ৫০ পয়েন্ট। চাটমোহর উপজেলার গৌরনগর গ্রামের মাহবুবুল আলম পেয়েছেন ৪ দশমিক ২০ পয়েন্ট। চট্টগ্রাম জেলার রবিউল ইসলাম, তিনি পেয়েছেন ৪ দশমিক ৫০ পয়েন্ট। নরসিংদী জেলার পেতিপলাশি গ্রামের মো. আবদুল্লাহ, তিনি পেয়েছেন ৪ দশমিক ৫০ পয়েন্ট। ঢাকা জেলার সাভার উপজেলার ভবানিপুর গ্রামের মো. রবিউল করিম রবি, তিনি পেয়েছেন ৪ দশমিক ৫০ পয়েন্ট। মাদারীপুরের বাগমাড়া গ্রামের সুমন আহম্মেদ চৌধুরী, তিনি পেয়েছেন ৪ দশমিক ২৫ পয়েন্ট।

এই সাত মেধাবী জন্ম থেকেই অন্ধ। তারা মানব কল্যাণ ট্রাস্ট্রের আশ্রয়ে থেকে বিনা খরচে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলেন।

অন্ধ শিক্ষার্থী মাহবুব আলম জানান, অন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শ্রুতি লেখকের সহায়তায় একই প্রশ্নে তাদের পরীক্ষা দিতে হয়। অনেক সময় আমরা সঠিক বলে দিলেও শ্রুতি লেখক লেখতে ভুল করে বসেন। এতে মার্ক কমে যায়।

তিনি জানান, শিক্ষার আলোয় আলোকিত হয়ে দেশের সমস্ত অন্ধের সাহায্য করাই তার মূল লক্ষ্য।

পাবনা মানব কল্যাণ ট্রাস্ট্রের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. আবুল হোসেন জানান, অন্ধদের লেখপড়ার জন্য প্রয়োজন ব্রেইল পদ্ধতি। অথচ দেশের অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ সুযোগ নেই। এখন পরীক্ষার জন্য প্রয়োজন শ্রুতি লেখকের। দরিদ্র এসব অন্ধদের শ্রুতি লেখক সম্মানী তো দূরের কথা- লেখাপড়ার করার নুন্যতম আর্থিক ব্যয় নির্বাহ করারও সক্ষমতা নেই। তারপরেও থেমে থাকেনি এসব সংগ্রামী দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর শিক্ষাজীবন।

তিনি আরও বলেন, এই সাতজন পরীক্ষার্থীর মত আরো প্রায় ৫২ জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী পাবনার মানব কল্যাণ ট্রাস্ট্র থেকে ব্রেইল পদ্ধতিতে লেখাপড়া করছেন।

পাবনার জেলা প্রশাসক রেখা রানী বালো বলেন, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অন্ধ শিক্ষার্থীদের ফলাফল আশাব্যাঞ্জক। এদের সহায়তা করতে সরকার সম্ভাব্য সহায়তা করবে।

পাবনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউর রহিম লাল পাবনা মানব কল্যাণ ট্রাস্ট্রের প্রশংসা করে বলেন, মানবকল্যাণ ট্রাস্টকে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে পৃষ্ঠপোষকতা করা হবে, সরকার প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে কাজ করছে। সাত অন্ধ শিক্ষার্থীর ফলাফল প্রশংসাযোগ্য।

(ঢাকাটাইমস/২৫জুলাই/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :