সিটি নির্বাচন: রাজশাহীতে বিএনপির লড়াই বুলবুল-মিলনে

বোরহান উদ্দিন, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৬ জুলাই ২০১৭, ১১:১৬ | প্রকাশিত : ২৬ জুলাই ২০১৭, ০৮:২৭
ছবিতে বায়ে বুলবুল ডানে মিলন

চার বছর আগে রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জয়ী বিএনপি নেতা মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল আবারও নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনকে প্রায় পঞ্চাশ হাজার ভোটে হারানো বুলবুল আশা করছেন তাকেই আবার প্রার্থী করবে বিএনপি। তবে অতটা নির্ভার হতে পারছেন না তিনি, কারণ নগর বিএনপিরই আরেকজন নেতা নির্বাচন করতে আগ্রহী।

রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিলনও ঢাকাটাইমসকে বলেছেন, তিনি আগামী নির্বাচনে ভোটে দাঁড়াতে চান। তবে শেষ পর্যন্ত দলের শীর্ষপর্যায় যাকে মনোনয়ন দেবে তাকে জয়ী করতে কাজ করার কথাও বলেছেন এই বিএনপি নেতা।

২০১৩ সালের ১৬ জুন রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটের পর ২১ জুলাই আরও তিন মেয়রের সঙ্গে শপথ নেন মেয়র বুলবুল। মেয়াদ শেষ হওয়ার তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন করতে হয় বিধায় আগামী বছরের ২১ এপ্রিল থেকে যে কোনো সময় হতে পারে এই ভোট। এই হিসাবে ভোটের আরও অন্তত নয় মাস বাকি থাকলেও এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে নির্বাচন নিয়ে আলোচনা।

এরই মধ্যে স্থানীয় আওয়ামী লীগ তাদের প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছে। গতবারে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী লিটন নির্বাচনী প্রস্তুতিতে মাঠেও নেমে গেছেন।

গত নির্বাচনেও বুলবুলের পাশাপাশি বিএনপিতে প্রার্থী হতে ইচ্ছুক ছিলেন শফিকুল ইসলাম মিলন। তিনি মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করলেও দলের নির্দেশে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন।

নগর বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা জানান, কেন্দ্র থেকে বুলবুল পছন্দের প্রর্থী হলেও নগরে দলের ভেতর তার বিরোধিতা রয়েছে। মহানগর বিএনপির সভাপতি হওয়ার পর তাকে দলের শক্তিশালী একটি অংশের বিরোধিতার মুখে পড়তে হয়েছিলো। এ নিয়ে দলীয় কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কেন্দ্রেও কমিটি বাতিলের দাবি জানানো হয়েছিল।

কমিটি করাকে কেন্দ্র করে সাবেক সভাপতি ও প্রভাবশালী নেতা মিজানুর রহমান মিনু ও শফিকুল হক মিলনের সঙ্গে বুলবুলের সম্পর্কে কিছুটা টানাপড়েন আছে বলেও শোনা যায়।

যদিও মিনু এবং মিলন দুজনই এমন গুঞ্জনের কথা অস্বীকার করেছেন। ঢাকাটাইমসকে বিএনপির এই দুই নেতা বলেন, রাজশাহী বিএনপিতে কোনো কোন্দল নেই।

আর মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘বিএনপির সব নেতা-কর্মী ঐক্যবদ্ধ। প্রার্থী ঘোষণার পর মাঠে এর প্রমাণ দেখা যাবে ।’

তবে মেয়র হিসেবে চার বছরের সময় সুখের হয়নি বুলবুলের। বিভিন্ন মামলার আসামি হওয়ার কারণে তাদে দুই বছরের বেশি থাকতে হয়েছে বহিষ্কার হয়ে। কারাগারেও তিনি ছিলেন বেশ কয়েক মাস। দুই বছর নগর ভবনের বাইরে থাকায় রাজশাহীর উন্নয়নেও তেমন কাজ করতে পারেননি বুলবুল। এ ছাড়া মেয়রের দায়িত্ব ফিরে পাওয়ার পর কর্মচারীদের আন্দোলনের মুখে পড়েছেন। বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে বুলবুলের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছেন কর্মচারীরা। আর নগরবাসীর মধ্যে অতিরিক্ত হোল্ডিং ট্যাক্স নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ রয়েছে।

মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর তাকে ঠিকভাবে কাজ করতে দেয়া হয়নি। অন্যায়ভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে, কারাগারে নেয়া হয়েছে। এসব রাজশাহীর মানুষ জানেন। ’

দলীয় কোন্দলের বিষয়ে মেয়র বলেন, ‘বিএনপির সব নেতা-কর্মী ঐক্যবদ্ধ। আগামী নির্বাচনে দলীয়ভাবে প্রার্থী ঘোষণা হওয়ার পর মাঠে সেটি দেখা যাবে। ’

অন্যদিকে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও মহানগরের সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান মিনু ঢাকাটাইমসকে বলেন,‘বিএনপিতে কোন্দল নয়, প্রতিযোগিতা আছে। এটা থাকতেই পারে। আগামী সিটি নির্বাচনে দল থেকে মনোনয়ন দেবে নেতা-কর্মীরা তার পক্ষেই মাঠে থাকবেন । ’

আগামী নির্বাচনে মেয়র হিসেবে নিজে মনোনয়ন চাইবেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে মিনু বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন মেয়র ছিলাম। কেন্দ্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছি। বর্তমানে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করছি। আবারো মেয়র হতে চাইলে জুনিয়ররা কি করবে। আমার মেয়র নির্বাচন করার কোনো শখ বা ইচ্ছা নেই।’

মেয়র নির্বাচন করার বিষয়ে জানতে চাইলে শফিকুল ইসলাম মিলন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘গত নির্বাচনে মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেও দলের সিদ্ধান্তে সরে দাঁড়িয়েছিলাম। মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের পক্ষে কাজ করে তাকে বিপুল ভোটি বিজয়ী করেছিলাম। আগামীতেও নির্বাচন করতে চাই তবে দল যে সিদ্ধান্ত দেবে তাই মেনে নেব।’

(ঢাকাটাইমস/২৬জুলাই/ডব্লিউবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :