হবিগঞ্জে ৪ শিশু হত্যায় তিনজনের ফাঁসির আদেশ

সিলেট ব্যুরো, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৬ জুলাই ২০১৭, ১৩:৪৯ | প্রকাশিত : ২৬ জুলাই ২০১৭, ১১:৪৯

হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলায় চাঞ্চল্যকর চার শিশু হত্যা মামলায় তিনজনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল। এছাড়া রায়ে দুইজনকে সাত বছর করে কারাদণ্ড এবং তিনজনকে খালাস দেয়া হয়েছে।

বুধবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মকবুল আহসান এই রায় ঘোষণা করেন।

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- সুন্দ্রাটিকি গ্রামের আরজু মিয়া, রুবেল মিয়া ও উস্তার মিয়া। রায়ে তাদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ডও করা হয়েছে। এদের মধ্যে উস্তার মিয়া পলাতক রয়েছে।

এছাড়া রায়ে জুয়েল মিয়া ও শাহেদ মিয়াকে সাত বছর করে কারাদণ্ড দেয়ার পাশাপাশি পাঁচ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ডও করা হয়। অনাদায়ে তাদের আরো ছয় মাস কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। অপরাধ প্রমাণ না হওয়ায় খালাস পেয়েছেন আব্দুল আলী ওরফে বাগাল, বাবুল মিয়া ও বিল্লাল। অপর আসামি বাচ্চু মিয়া র‌্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বিশেষ পিপি আইনজীবী কিশোর কুমার কর জানান,‘‘মামলার রায়ে পুরোপুরি সন্তুষ্ট হতে পারিনি। এ রকম একটা নির্মম ঘটনায় সব আসামির মৃত্যুদণ্ড দেয়া হবে বলে আমরা আশা করেছিলাম।’

তিনি বলেন, এটি সিলেট বিভাগের সবচেয়ে চ্যাঞ্চল্যকর ঘটনা। পূর্ব পরিকল্পনা করে নিষ্পাপ চার শিশুকে হত্যা করা হয়। হত্যা পরিকল্পনায় আসামিদের সবাই জড়িত ছিল। সবার শাস্তি হওয়া উচিত ছিলো।’’

এদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. শফিউল আলম রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘‘এই রায় আইনেই দৃষ্টিতে ন্যায় বিচারের পরিপন্থী। আমরা রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবো।’’

২০১৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি বিকালে বাড়ির পাশের মাঠে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় চার শিশু। তারা হলেন সুন্দ্রাটিকি গ্রামের আবদাল মিয়া তালুকদারের ছেলে মনির মিয়া (৭), ওয়াহিদ মিয়ার ছেলে জাকারিয়া আহমেদ শুভ (৮), আব্দুল আজিজের ছেলে তাজেল মিয়া (১০) এবং আব্দুল কাদিরের ছেলে ইসমাইল হোসেন (১০)।

নিখোঁজের পাঁচ দিন পর ইছাবিল থেকে তাদের বালিচাপা দেয়া মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। বিষয়টি নিয়ে সারাদেশে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়। এ ঘটনায় মনির মিয়ার বাবা আবদাল মিয়া বাদী হয়ে বাহুবল থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় নয়জনকে আসামি করা হয়।

২০১৬ বছরের ২৯ এপ্রিল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির তৎকালীন ওসি মোক্তাদির হোসেন নয়জনের বিরুদ্ধেই আদালতে অভিযোগপত্র দেন। এরপর গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধান আব্দুল আলী বাগাল ও তার দুই ছেলেসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে মামলার অন্যতম আসামি বাচ্চু মিয়া র‌্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। কারাগারে আছেন আরজু মিয়া, শাহেদ, আব্দুল আলী বাগাল, তার দুই ছেলে জুয়েল মিয়া ও রুবেল মিয়া।

সুন্দ্রাটিকি গ্রামের দুই পঞ্চায়েত আবদাল মিয়া তালুকদার ও আব্দুল আলী বাগালের মধ্যে পারিবারিক বিরোধের জেরে এই হত্যাকান্ড ঘটানো হয় বলে মামলার তদন্ত ও আসামিদের দেয়া স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে জানায় পুলিশ।

হবিগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এ বছরের ৭ সেপ্টেম্বর মামলার বিচারকাজ শুরু হয়। হবিগঞ্জ আদালতে মামলার ৫৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।

গত ১৫ মার্চ মামলাটি সিলেট বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হলে আরও সাতজনের সাক্ষ্য নেয়া হয়। গত বৃহস্পতিবার মামলাটির যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। এরপর রায়ের জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়।

ঢাকাটাইমস/২৬জুলাই/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :