অতি সাধারণ এক সাংবাদিকের কথা-৩৪

আলম রায়হান
| আপডেট : ২৮ জুলাই ২০১৭, ১৮:৩৬ | প্রকাশিত : ২৭ জুলাই ২০১৭, ২৩:৩৬

আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর মামলার চাপ মোকাবিলা খুবই জটিল হয়ে পড়েছিল। চট্টগ্রামে মামলায় জামিন নেয়ার পর ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের অফিসে তার সঙ্গে দেখা করলাম। মতিঝিলের শরীফ ম্যানশনে সুগন্ধা অফিসের উল্টা দিকে ফেডারেশন ভবনে ছিল ইউসিবিএল-এর অফিস। তখন জনাব বাবু ছিলেন এ ব্যাংকের চেয়ারম্যান। এক সপ্তাহের মধ্যে তিনবার তার সঙ্গে দেখা করলাম। দেখা করতে গেলে অনেকক্ষণ বসিয়ে রাখতেন। তবু মজ্জাগত স্বভাবের বিরুদ্ধে গিয়ে ধৈর্য ধরে রেখেছি। কিন্তু তিনি কিছুতেই নরম হচ্ছিলেন না। তার একই প্রশ্ন, তার বিরুদ্ধে কেন লিখেছি। আমি যতই বিনয়ের পিছলানো ব্যাখ্যা দেই না কেন; তার মোটেই পছন্দ হয় না। ভাঙ্গা রেকর্ডের মতোর তার একই প্রশ্ন। সে এক বিরক্তিকর যন্ত্রণা!

তবে এ যন্ত্রণা আমাদের অজান্তেই ইউটার্ন নিলো ইউসিবিএল ও জনতা ইন্সুরেন্সে অভ্যন্তরীণ বিরোধ ঘনীভূত হওয়ায়। ইউসিবিএল-এর চেয়ারম্যান পদ নিয়ে আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু বেশ চাপে পড়লেন। এদিকে জনতা ইন্সুরেন্স-এর পরিস্থিতি এতোটাই জটিল হয়েছিল যে, এক পর্যায়ে এ সংস্থার চেয়ারম্যান হুমায়ুন জহির আততায়ীর গুলিতে নিহত হন। এ হত্যাকাণ্ডের হুকুমের আসামি করা হয়েছিল আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুকে। রটনা আছে, হুমায়ুন জহির খুন হবার সংবাদ জনাব বাবুকে প্রথম দিয়েছেন বিএনপি নেতা বরকত উল্লাহ বুলু; তিনি নাকি তাকে পালাবারও পরামর্শ দিয়েছেন। জনাব বুলুর এ ভূমিকার সত্য-মিথ্যা নিরূপন অথবা রহস্য উম্মোচনের এখন আর কোনো সুযোগ নেই। তবে ১৯৯৬ সালের মার্চ মাসে আমার ১৮ দিনের কারাবাসের সময় হুমায়ুন জহির হত্যা মামলার অন্যতম আসামি মালিবাগের আলমের কাছে যা শুনেছি তা সিনেমার কাহিনিকেও হার মানায়।

ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক ও জনতা ইন্সুরেন্সের মালিকদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ঘনীভূত হলে একদিন আখারুজ্জামান চৌধুরী বাবু ফোন করলেন। কুশল জিজ্ঞেস করাসহ নানান কথার পর লাঞ্চের দাওয়াত দিলেন। কিন্তু তার এ দাওয়াতে আমার মোটেই আগ্রহ ছিল না। কারণ ততদিনে দেড় মাসের বেশি সময় কেটে গেছে; এক তারিখে আদালতে গরহাজির ছিলাম চট্টগ্রামে নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে। সবমিলিয়ে মামলায় সমঝোতার আশা ছেড়ে দিয়ে আমরা হাইকোর্টে যাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি; প্রস্তুতিও এগিছে। উকিল খান সাইফুর রহমান। সুগন্ধার মালিক মোয়াজ্জেম সাহেব তাকে বরিশালের লোক হিসেবে চিনতেন। আমি চিনতাম বাম নেতা হিসেবেও। সিদ্দিকুর রহমানের নেতৃত্বে একটি বাম দলের নেতা ছিলেন অ্যাডভোকেট খান সাইফুর রহমান, পলিট ব্যুরের সদস্য সম্ভবত; ছোট দলের বড় নেতা। কিন্তু নেতা হিসেবে তার তেমন পরিচিতি ছিল না। তবে আইনজীবী হিসেবে খান সাইফুর রহমান ছিলেন খুবই উচ্চমানের ও দাপটের। তিনি মামলার দায়িত্ব নেয়ায় আমরা অনেকটাই নিশ্চিত হলাম। ফলে আখতারুজ্জামান বাবুর লাঞ্চের দাওয়াতে আমি মোটেই আগ্রহ দেখালাম না। বরং সাবেক প্রেমিকের মতো খুবই নির্লিপ্তভাবে বললাম, ঠিক আছে বাবু ভাই; আসবো একদিন।

আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু সম্ভবত আমার মনোভাব বুঝতে পেরেছিলেন। অবশ্য না পারার কোনো কারণও ছিল না। রাজনীতিকদের এ এক অদ্ভূত দক্ষতা। পরিস্থিতি রিড করার ক্ষেত্রে সম্ভবত তারা অদ্বিতীয়। অবশ্য আখতারুজ্জান বাবুর দক্ষতা নিয়ে গবেষণা করার তখন আমার মোটেই আগ্রহ ছিল না। তার সঙ্গে সমঝোতার প্রক্রিয়া ত্যাগ করলাম। কিন্তু সমঝোতার চেষ্টা শুরু হলো জনাব বাবুর দিক থেকে।

এদিন সুগন্ধা অফিসে এলেন সে সময় তরুণ সাংবাদিক কাঞ্চন কুমার দে এলেন। খুবই হাসিখুশি প্রবণতার মানুষ। অনেক কথার পর আসলেন আসল বিষয়ে। বললেন, গুরু বাবু ভাইয়ের কাছে একটু যেতে হবে। তার প্রস্তাবে আমি বেশ চটে গেলাম। জনাব বাবুর মামলায় চরম হয়রানি হওয়া, তার অফিসে একাধিক বার যাওয়া এবং চাটগাইয়া রুঢ় ব্যবহারে আমার বিরক্তির বিষয়টি বললাম কাঞ্চনকে। এরপও ‘হাসিখুশি’কাঞ্চন কুমার দে হাল ছাড়ল না। হাত চেপে ধরে বললো, গুরু একটু যেতেই হবে; আমি বড় মুখে কথা দিয়েছি! শেষতক কাঞ্চনের অনুরোধ উপেক্ষা করা যায়নি। এর ফলে অবশ্য নতুন করে চিনলাম আখতারুজ্জান চৌধুরী বাবুকে। বুঝলাম, নিজের প্রয়োজনে রাজনৈতিক নেতারা কতটা পাল্টে যেতে পারেন; হয়ে যেতে পারেন মাটির মানুষ; একেবারে আপনজন। এ বিষয়টি বিএনপি নেতা কর্নেল আকবর হোসেন ছাড়া কমবেশি অনেকের মধ্যে আমি দেখেছি।

‘বিনয়ী’ আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর দুর্বিনীত মামলা পর্ব শেষ হবার পর বেশ কয়েক মাস আমরা মামলামুক্ত ছিলাম। এর নানান কারণ ছিল। প্রধান কারণ হতে পারে, আমাদের পেছনে লেগে থাকা ওপেন সিক্রেট কুশীলব সম্ভবত হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। সে সময় ইলেকট্রিক বাল্বের একটি বিজ্ঞাপনে কই মাছ ব্যবহার করা হতো। সম্ভবত আমাদেরকেও কৈ মাছ ভেবে আমার শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিটি রণে ভঙ্গ দিয়েছিলেন। এদিকে আমরাও অধিকতর সতর্ক ও কৌশলী হয়েছিলাম। কিন্তু এরপরও অবিভক্ত ঢাকার মেয়র মির্জা আব্বাসের মামলা থেকে রেহাই পাওয়া গেলো না। তিনি মামলাটি করেছিলেন খুবই বালখিল্য একটি বিষয় নিয়ে।

সুগন্ধার পাশাপাশি সে সময় আমি নিয়মিত লিখি সাপ্তাহিক রোববারে; নিয়মিত কাজ করি দৈনিক সকালের খবরে। মালিক লে. জেনারেল মীর শওকত আলী মহানগর বিএনপির সভাপতি ও পরে খাদ্যমন্ত্রী। পত্রিকার দায়িত্বে আ.ক.ম রুহুল আমিন, রুহুল ভাই। খুবই ক্ষুরধার লেখা তার। সকালের খবরে প্রকাশিত রুহুল ভাইয়ের লেখা সুগন্ধায় রিপ্রিন্ট করতাম; কলামের নাম ‘সদরে-অন্দরে’।

মন্ত্রীর মালিকানায় হওয়ায় দৈনিক সকালের খবরের প্রচার সংখ্যা ছিল খুবই কম। আর তিনি মন্ত্রী হবার পর এ ‘কম’আরো কমলো! ফলে এ পত্রিকায় ছাপা হওয়া কলাম আমরা রিপ্রিন্ট করলে পাঠক আমাদেরটাই বিবেচনা করতো মৌলিক হিসেবে। মন্ত্রীর মালিকানা পত্রিকার ক্ষেত্রে কেবল নয়; সুগন্ধার সঙ্গে এ ঘটনা আওয়ামী লীগ ঘরানার দৈনিক ভোরের কাগজের বেলায়ও ঘটেছে। আর এটা ঘটেছে, আবদুল গাফফার চৌধুরীর লেখা নিয়ে। একবার এক পাঠক চরম বিরক্ত হয়ে চিঠি লিখেছিলেন, সুগন্ধার কলাম কেন ভোরের কাগজ চুরি করে ছাপে! এ বিষয় ভোরের কাগজের বিরুদ্ধে মামলা করারও পরামর্শ দিয়েছিলেন সুগন্ধা ভক্ত পাঠক! সে সময় স্বল্প প্রচারিত দৈনিকের কলাম রিপ্রিন্ট করার একটি নির্দোষ রেওয়াজ ছিল। কেবল নীচে ‘সৌজন্য..’ শব্দটি লিখে দিলেই হতো। এতে কোনো জটিলতা ছিল না। কিন্তু জটিলতা সৃষ্টি হলো মশা প্রশ্নে মেয়র আব্বাস মাথা গরম করে ফেলায়। ঢাকা মহানগরীতে মশার উপদ্রব নিয়ে লেখায় আ.ক.ম রুহুল আমিনের কলামে একটি বাক্য ছিলেন, ‘মশার কামড়ে অতিষ্ঠ নগরবাসী গালি দেয় মেয়রকে।’ ব্যাস! এতেই ঢাকার তরুণ মেয়র মাথা চরম গরম করে ফেললেন। তিনি মানহানির মামলা করলেন; ম্যাজিস্ট্রেট ওয়ারেন্ট দিলেন। আর পুরো বিষয়টি গোপন রাখা হলো। সময়টা ১৯৯৩ সাল।

অন্যান্য সময় মামলায় ওয়ারেন্ট হলে পুলিশ আদালতের আদেশ তামিল করার পরিবর্তে ফোন করে মামলার কথা জানিয়ে জামিন নেয়ার অনুরোধ করতো। কিন্তু মেয়র আব্বাসের মামলায় পুলিশ উল্টোটা করলো। রাতভর বাসা ঘেরাও করে রেখে ভোর বেলা আমাকে গ্রেপ্তার করেছিল উত্তরা থানা পুলিশ, আজকের দিনে জঙ্গি আটকের ফর্মেটে। তখন আমি উত্তরার পাঁচ নম্বর সেক্টরে থাকতাম। এদিকে উত্তরা থানায় যোগ দিয়েছিলেন ট্রাফিক সার্জেন্ট থেকে সদ্য ওসি হওয়া মনোয়ার। ফলে মেয়র আব্বাসের আদেশ পালনে তার উৎসাহ একটু বেশিই ছিল। এক সময় রাস্তায় দাঁড়িয়ে মন্ত্রী-মেয়রদের সালাম দিতে দিতে তার যে মাইন্ডসেট হয়ে গিয়েছিল তাতে সম্ভবত বেশি মাত্রায় প্রভাবিত হয়েছিলেন ওসি মনোয়ার। যে কারণে মানহানির মামলার আসামি ধরতে একরাত টেনশনে রেখেছেন পুরো থানার পুলিশকে।

থানায় নিয়ে আমাকে হাজতখানায় ঢুকানো হলো। নতুন এ অভিজ্ঞতায় আমি বেশ মজা পাচ্ছিলাম। আর ভাবছিলাম, অতি উৎসাহী পুলিশ কি-না করে! এ বিষয়ে পুলিশের একাল-সেকাল মিলেমিশে একাকার। উপরের আদেশ পালনে পুলিশের উৎসাহ একেবারে উথলে উথলে পড়ে। নব্য ওসি মনোয়ারের উৎসাহ ছিল আর একটু বেশি। অবশ্য, তার এ উৎসাহে ভাটা পড়তে বেশি সময় লাগেনি। সকাল সাড়ে সাতটার দিকে ফোন আসে মুজিবুর রহমান সরোয়ারের; তিনি তখন বরিশাল সদর আসনের সংসদ সদস্য। আবদুর রহমান বিশ্বাস স্পিকার থেকে প্রেসিডেন্ট হওয়ায় উপ-নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মুজিবুর রহমান সরোয়ার; দলের কেন্দ্রীয় এ নেতার অবস্থান বরিশালে সব সময়ই শক্তিশালী। তার ফোনেই উত্তরা থানা প্রায় কম্পমান। ভাড়া বাড়িতে উত্তরা থানার হাজতখানা ছিল ডিউটি অফিসারের টেবিলের পাশেই। ডিউটি অফিসারের ফোনেই আমার সঙ্গে কথা বললেন সরোয়ার ভাই। বললেন, ‘আপনারে হাজতে ডুকাইছে, দেখতাছি!’ পরে শুনেছি, সরোয়ার ভাইয়ের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন বিএনপির অনেক নেতাই আমার বিষয়টি জেনেছিলেন। এদের মধ্যে ফোন করেছেন আবদুল্লাহ আল নোমান, কর্নেল আকবর হোসেন ও অধ্যক্ষ ইউনুস খান। থানায়ও এসেছিলেন কয়েকজন। এদের মধ্যে বরিশালের একজন চিৎকার করে পুরো থানা গরম করে ফেললেন। তার বক্তব্য, সাংবাদিক বড় কথা না; গেদুচাচাকে পুলিশ ধরে কোন সাহসে!

সরোয়ার ভাইয়ের ফোন আসার দুই মিনিটের মধ্যে আমাকে হাজত থেকে বের করে ওসির রুমে নেয়া হয়। ওসি হিসেবে প্রথম পোস্টিং পাওয়া ঘুমে ঢুলু ঢুল মনোয়ার অতি আপনজনের মতো বললেন, নাস্তা করেছেন? আমি বললাম, ‘কীভাবে ভাই; আপনি তো ঘুম দিয়া তুইলা আনছেন!’ ওসি চুপ থাকলো। ডিউটি অফিসারকে বললো দুই জনের নাস্তার ব্যবস্থা করতে। নাস্তা আসতে প্রায় আধা ঘণ্টা লাগলো। তবে অয়োজন ছিল এলাহী; পুরান ঢাকার স্টাইলে। ভাবলাম, এ নিশ্চয়ই পয়সা দিয়ে আনেনি!

নাস্তা শেষ করতে না করতেই একটা ফোন এলো ওসির কাছে। ‘স্যার স্যার’করতে করতে ফ্লোরে শুয়ে পড়ার অবস্থা তার; সে এক দেখার মতো দৃশ্য। ওসি খুবই বিনয়ের সঙ্গে বললো, ভাই ফোন তো বোঝেনই, একটু হাজতে ঢোকেন। আমি খুশি মনে হাজতে ঢুকলাম। মিনিট পনেরো পর আমাকে হাজত থেকে বের করে আবার ওসির রুমে নেয়া হলো; কার ফোনে জানি না। কিন্তু দশ মিনেটের মধ্যে আবার ফোন; আমি আবার হাজতে। এবার হাজতে একটা চেয়ার দেয়া হলো। কিছুক্ষণ পর আমাকে আবার বের করা হলো। কিন্তু ফোন আবার। ওসি বললো, ভাই আবার একটু ঢুকতে হয় যে! আমি বললাম শোনেন, এবার ঢুকলে আমি কিন্তু আর বের হব না! নব্য ওসি পড়লো বেকায়দায়। একটু চিন্তা করার পর রেগেমেগে রুম থেকে বেরিয়ে গিয়ে বললো, কোনো ফোন ধরবা না! সম্ভবত তার ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গিয়েছিল। রেচারা! আমাকে বললো, আপনে সোফায় একটু ঘুমান; এগারোটার আগে ভ্যান আসবে না, এর আগে আমি চলে আসব। আমি একটু বাসায় যাই; সারা রাত থানায় ছিলাম।

আহারে পুলিশ! কাজ করার চেয়ে ঠেলায় পড়ে বেফজুল পরিশ্রম করতে হয় বেশি। তার জন্য আসলে মায়াই হলো। ওসি চলে যাবার পর প্রাতঃকালীন কাজ সেরে সোফায় গভীর ঘুম দিলাম। সোফায় ঘুমানো আমার প্রিয় অভ্যাসগুলোর একটি। যে কারণে আমার স্ত্রীর কমন অভিযোগের একটি হচ্ছে, আমার কারণে সোফা নষ্ট হয়। কিন্তু তার ছেলে যে একই কম্ম করে তাতে মহাভারত মোটেই অশুদ্ধ হয় না! স্বামীদের প্রতি স্ত্রীদের এ প্রবণতা বিবেচনায় নিয়েই সম্ভবত প্রবচন চালু হয়েছে, যত দোষ নন্দ ঘোষ!

লেখক: জেষ্ঠ্য সাংবাদিক; ইমেইল: [email protected]

সংবাদটি শেয়ার করুন

মতামত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :