মক্কার কাছে ইয়েমেনী ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত
সৌদি আরবের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের ছোড়া একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তারা মক্কা নগরীর ৭০ কিলোমিটার দক্ষিণে ভূপাতিত করেছে। খবর বিবিসির।
সৌদি বাহিনী বলছে, ক্ষেপণাস্ত্রটি পবিত্র শহর মক্কাকে লক্ষ্য করে ছোড়া হয়েছিল। তবে হুতিরা জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্রটি মক্কা নয়, তায়েফ শহরে অবস্থিত সৌদি বিমানঘাঁটি লক্ষ্য করে ছোড়া হয়েছিল। তায়েফ বিমান ঘাঁটি মক্কা নগরী থেকে ১১৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
মুসলমানদের কাছে সবচেয়ে পবিত্র এই শহরে এখন হজ উপলক্ষে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হতে শুরু করেছেন। হুতিরা এখন ইয়েমেনে সৌদি নেতৃত্বাধীন বাহিনীর হামলার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, সৌদি নেতৃত্বাধীন বাহিনীর পক্ষ থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হজ বানচাল করার লক্ষ্যে শিয়া হুতিদের একটি মরিয়া চেষ্টার অংশ হিসেবে ক্ষেপণাস্ত্রটি ছোড়া হয়েছে। আগামী মাসের শেষের দিকে বাৎসরিক হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে।
হুতি বিদ্রোহীরা এর আগেও সৌদি আরবের ভেতরে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছিল। হুতিরা অন্য শহর লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়লেও সৌদিরা সব সময় বলে আসছে, এসব মক্কার দিকে তাক করেই ছোড়া হয়েছিল।
গত অক্টোবর মাসে হুতিরা একটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে, যা মক্কার কাছে ভূপাতিত করা হয়। সৌদি আরবের উপসাগরীয় মিত্ররা ঐ হামলার নিন্দা জানিয়েছিল।
কিন্তু নতুন হামলাটি হজের আগে একটি হুমকি হিসেবে মনে করা হচ্ছে, কারণ বিশ লাখের মতো মানুষ এ সময় মক্কা নগরীতে জমায়েত হওয়ার কথা রয়েছে।
হুতি বিদ্রোহী এবং তাদের সহযোগী - যারা সাবেক প্রেসিডেন্ট আলি আবদুল্লাহ সালেহ'র প্রতি অনুগত ইয়েমেনী সেনাবাহিনীর প্রাক্তন সদস্য - তারা দুই বছর আগে সৌদি আরবের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক হামলা শুরু করে।
২০১৫ সালের মার্চে প্রেসিডেন্ট আব্দেরাব্বো মনসুর হাদির সমর্থনে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট ইয়েমেনে অভিযান শুরু করে। হাদির অভিযোগ যে বিদ্রোহীদের সমর্থন দিচ্ছে ইরান।
সৌদি আরব ও তার মিত্ররা এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার পর এখন পর্যন্ত আট হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে, আহত হয়েছে ৪৪ হাজার ৫০০।
জাতিসংঘ বলছে, বিশ লাখেরও বেশি ইয়েমেনী শিশু 'চরম পুষ্টিহীনতায়' ভুগছে, আর যুদ্ধ, ক্ষুধা ও কলেরার কারণে দেশটিতে ত্রাণের ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়েছে।
সৌদি আরবের মিত্ররা বলছে, সর্বশেষ ক্ষেপণাস্ত্র আক্রমণ প্রমাণ করছে যে হোদেইদা বন্দরে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়েছে এবং ঐ বন্দর দিয়ে মানবিক সাহায্য ও বাণিজ্যিক কার্গো আনার যে অনুমতি দেয়া হয়েছিল, তার অপব্যবহার হচ্ছে।
সৌদিরা প্রাই অভিযোগ করে যে হুতি বিদ্রোহীরা অস্ত্র চোরাচালান করছে, তবে হুতিদের পক্ষ থেকে ঐসব অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/২৮জুলাই/এসআই)