ভুল চিকিৎসায় প্রবাসীর মৃত্যুর অভিযোগ
ব্রাহ্মণাবড়িয়ায় ভুল চিকিৎসায় মতিউর রহমান নামে শুক্রবার এক প্রবাসীর মৃত্যুর অভিযোগে বেসরকারি একটি ক্লিনিকে ভাঙচুর করা হয়েছে।
দুপুর আড়াইটার দিকে পৌরশহরের কুমারশীল মোড়স্থ গ্রামীণ জেনারেল হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ভাঙচুর চালায় রোগীর স্বজনরা।
মৃত মতিউর রহমান জেলার বিজয়নগর উপজেলার সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামের মৃত রেহান উদ্দিনের ছেলে। তিনি সৌদি আরব প্রবাসী। গত দুই মাস আগে ছুটিতে দেশে আসেন।
মৃত মতিউর রহমানের স্ত্রী রাবেয়া খাতুন জানান, সকালে গলায় টনসিলজনিত ব্যথা নিয়ে গ্রামীণ জেনারেল হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসা নিতে আসেন। পরে সেখানে ঢাকার মহাখালীর সাইফ হাসপাতালের নাক, কান ও গলা রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আসালম হাজারীকে দেখানো হলে তিনি মতিউরের টনসিল জরুরি ভিত্তিতে অস্ত্রোপচারের (অপারেশন) জন্য বলেন। এরপর দুই ঘণ্টা ধরে মতিউরের টনসিল অস্ত্রোপচারের পর তার অবস্থার অবনতির কথা জানিয়ে তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। এরপর মতিউরকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হলে তার মৃত্যু হয়।
নিহতের ভাই প্রবাসী লোকমান জানান, গত কয়েক দিন ধরে ডা. আসলাম হাজারীর কাছে ভাইয়ের টনসিলের চিকিৎসা হচ্ছিল। সকালে দেখানোর পর জরুরি ভিত্তিতে অপারেশন করতে হবে এবং ১৪ হাজার টাকা দাবি করেন ওই চিকিৎসক।
বিকাশের মাধ্যমে টাকা এনে ৮ হাজার টাকা দেই। পরে বাকি টাকা পরে দেব বলে জানায়।
সকাল সাড়ে ১১টার দিকে অস্ত্রোপচার (অপারেশন) কক্ষে নিয়ে যায়। দুপুর প্রায় ২টার দিকে আমাকে অস্ত্রোপচার (অপারেশন) কক্ষে নিয়ে জানায় আমার ভাইয়ের প্রেসার ফল্ট করেছে। তাকে জরুরি ভিত্তিতে ঢাকা নিতে হবে। কিন্তু চিকিৎসক আমাকে জানিয়েছিল অপারেশন করতে ১০ মিনিট সময় লাগবে। অ্যাম্বুলেন্সে তাকে উঠানো হলে মুখ দিয়ে রক্ত বের হতে থাকে। আমার ভাই আগেই মারা গেছে। চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় আমার ভাই মারা গেছে। আমি এর বিচার চাই।
ডা. আসলাম হাজারী এবং ক্লিনিকের মালিকসহ সকল স্টাফরা পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অভিযুক্ত ডা. আসলাম হাজারীর বক্তব্যের জন্য তার মুঠোফোনে চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নবীর হোসেন বলেন, ভুল চিবিৎসায় ওই রোগীর মৃত্যু হয়েছে কী না সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে ঘটনার পরপরই অভিযুক্ত চিকিৎসক ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ গা ঢাকা দিয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/২৮জলাই/প্রতিনিধি/এলএ)