জনস্রোতে মুখরিত রবীন্দ্র সরোবর

​ইয়াকুব ভুইয়া, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৯ জুলাই ২০১৭, ১০:১৩

রাজধানীর শত ব্যস্ততার ফাঁকে কিছু সময় স্বস্তিতে কাটানোর স্থানগুলোর একটি ধানমন্ডি লেক। লেকটির ঠিক কোল ঘেঁষেই উন্মুক্ত মঞ্চ রবীন্দ্র সরোবর। দেখে মনে হবে সে যেন তার সমস্ত বুক ছড়িয়ে রেখেছে দর্শনার্থীদের জন্য। সরোবরের গাছ ও জলের মেলবন্ধনের এমন দৃশ্য কদাচিত চোখে পড়ে শহরে। নগরবাসী এখানে আসেই যেন কিছুটা সময় প্রকৃতির মাঝে নিজেকে হারাতে।

ভোরের আলো ফোটার সাথে সাথে মানুষের আগমন হতে থাকে সরোবরটিতে। বেলা যতই বাড়ে মানুষের সংখ্যাও তত বাড়তে থাকে। কেউ আসে সকালের শরীরচর্চা শেষে বিশ্রাম নিতে, আর নীরবে প্রকৃতির এমন নয়নাভিরাম দৃশ দেখতে। কেউ বা আসে ক্লাসের ফাঁকে বন্ধুদের নিয়ে কিছু সময় কাটাতে আর কিছু খাওয়া-দাওয়া করতে। আবার কেউ কেউ আসে বিকেলের সময়টা বন্ধুদের সাথে গল্প, আড্ডা, গান করতে।

সরোবরটির পাশেই দৃষ্টিনন্দন এক সেতু যেন এপার-ওপারের জনস্রোত যোগ করেছে। কি ফুসকা, কি চটপটি, কি মুড়িমাখা, চিড়াভাজা, অথবা ধোঁয়া ওঠা কাবাব, নয়তো প্রশান্তির এক গ্লাস শরবত! শুনেই যেন আড্ডার কথা মনে পড়ে। আর কোনো এক বিকেলে যদি হাজির হওয়া যায় এখানটায়, যে কারোই মুগ্ধতায় কেটে যাবে অনেকটা সময়। সময় করে প্রিয়জনকে বা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আসা হলে উপভোগ্যই হবে সময়টা।

লেকটির আধুনিকায়ন হওয়ার সময়টাতেই রবীন্দ্র সরোবর ও পাশের জায়গাগুলো নতুন রূপে সাজানো হয়। পাশেই ডিঙ্গি, রেস্তোরাঁ! সেই সাথে ঘাট ধরে নৌকা সারি সারি, একটায় চেপে বসতে পারেন, কিছু সময়ের জন্য স্তব্ধ জলে আপনার ঘুরে বেড়ানো আনন্দময়ই হবে।

মূলমঞ্চে প্রায়ই থাকে উৎসব, কবিতা বা গানের আসর। সরোবরের চারপাশের মঞ্চ জুড়েই ছিল কবিতা শুনতে আসা মানুষের ভিড়। আসন না পেয়ে অনেকে দাঁড়িয়ে থেকেই শুনেছেন শিমুল মুস্তাফার ভরাট কণ্ঠের কবিতা আবৃত্তি। নিমজ্জিত হয়েছেন শব্দের পরে শব্দ দিয়ে গাঁথা অনন্য সুন্দর সব কাব্যের নান্দনিক শব্দমালার স্ফূরণে। এ দৃশ্য এখানে কোনো এক বিকেলে আপনারও চোখে পড়বে গেলে।

রবীন্দ্র সরোবরের আরেক আকর্ষণ অবশ্যই আশপাশের সব খাবারদাবার। আড্ডার আদর্শ খাবারদাবার বলতে যা বুঝায় আর কি! বাদাম থেকে শুরু করে কাবাব, চটপটি ফুসকা, পুরি, সিঙ্গারা, ধোঁয়া ওড়ানো চা, কফি, ঠান্ডা শরবত অথবা আইসক্রিম। সবকিছুই এখানে মিলবে না চাইতেই! না চাইতেই মানে তারাই আপনার কাছে এসে ঘুরঘুর করবে! তাতে খানিকটা অস্বস্তি লাগলেও উন্মুক্ত জায়গাতে ঘুরে বেড়ানোর মজাই তো এটা।

রাস্তা পেরোলেই ওপারে রয়েছে জলে চলাচলের জন্য ডিঙ্গি। জলের বুকে সারা বেলাই রয়েছে পায়ে চালিত প্যাডেলের ছোট ছোট নৌকার বিচরণ। পাশেই অবস্থিত ঢাকা আর্ট সেন্টার, দুই তলা মিলিয়ে সবসময়ই চলে কোনো না কোনো শিল্পকর্মের প্রদর্শনী। আর্ট সেন্টার লাগোয়া গ্রাম্য আবহের এক রেস্তোরাঁ অজো। লেকে ঘুরে এখানে এসেও উপভোগ করে যেতে পারেন নিরিবিলি কিছুটা সময়। সব মিলিয়ে রবীন্দ্র সরোবর একসাথে সাংস্কৃতিক চর্চার উন্মুক্ত মঞ্চ যেমন, তেমনি নগরীর ব্যস্ততা থেকে একখণ্ড অবসরের আড্ডার দারুণ সঙ্গী।

ঢাকাটাইমস/২৯জুলাই/ইভি/কেএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :