ভরা মৌসুমেও দেখা নেই ইলিশের, জেলেদের হাহাকার

ইকরামুল আলম, ভোলা
 | প্রকাশিত : ৩১ জুলাই ২০১৭, ০৮:১৮

ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়ায় ভরা মৌসুমেও দেখা মিলছে না রুপালি ইলিশের। ইলিশ শূন্যতায় হাহাকার চলছে এ অঞ্চলের জেলেপাড়াগুলোতে। অভাব অনটন আর চরম হতাশার মধ্যে দিন পর করছে এখানকার জেলে পরিবার। নদীতে জাল ফেলে দুই-একটা ইলিশের দেখা মিললেও তা হয়তো পরিবারের আহারেই চলে যায়। তবে আশানুরূপ ইলিশ ধরা না পড়ায় এনজিওর লোন আর মহাজনের দাদনের ভাবনাই যেন জেলেদের পরিবারে নেমে এসেছে হতাশা।

উপকূলীয় জেলা ভোলার প্রায় ৬০ ভাগ মানুষই কৃষি কাজ ও মৎস্য আহরণে জীবিকা নির্বাহ করে। সরকারি হিসাবে ইলিশ ধরার ওপর নির্ভরশীল জেলে রয়েছে এক লাখ ২৫ হাজার। তবে নিববন্ধনের বাইরের জেলেদের নিয়ে সর্বমোট জেলে রয়েছে দুই লাখের অধিক।

মেঘনা-তেঁতুলিয়ার ইলিশকে ঘিরেই এখানকার জেলেদের জীবন ও জীবিকার চাকা ঘুরছে। গত মার্চ-এপ্রিল এ দুই মাস নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হতেই দেখা দিয়েছে নদীগুলোতে ইলিশের আকাল। জেলেদের জালে আশানুরূপ ইলিশ না পড়ায় আড়ৎদারদের জীবনও প্রায় অসহনীয় হয়ে উঠেছে। বছরের বৈশাখের শেষের দিকে নদীগুলোতে ইলিশ পড়া শুরু হলেও জৈষ্ঠ্য মাস ইলিশের ভরা মৌসুম বলেই জেলেদের জানা রয়েছে। সেই হিসেবে ইলিশ মৌসুমের প্রায় দুই মাস অতিবাহিত হওয়ার পথে, তবুও মেঘনায় ইলিশের দেখা মিলছে না।

জেলেরা জানান, জ্যৈষ্ঠ থেকে ইলিশের ভরা মৌসুম। কিন্তু মৌসুমের দুই মাস পেরিয়ে গেলেও জালে ধরা পড়ছে না ইলিশ। সারাদিন জাল বেয়ে খরচের টাকা উঠছে না। অনেকেই এনজিও ও বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ইলিশ বিক্রির টাকা দিয়ে ঋণ পরিশোধ করবেন ভাবছিলেন, কিন্তু ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না, আবার দেনাও শোধ করতে পারছেন না জেলেরা। নদীতে জাল ফেলে ফিরছে খালি হাতে।

ভোলা সদরের অন্যতম মাছঘাট তুলাতুলি গিয়ে দেখা যায়, ঘাটে নোঙর দেয়া জেলেদের অর্ধশতাধিক ট্রলার। আড়তে অলস সময় পার করছেন আড়ৎদাররা। দুই-এক ঝুড়ি মাছ ঘাটে আনা হলেও নেই হাঁকডাক। কারণ, এ সময়ে যে পরিমাণ মাছ পাওয়ার কথা তার তিন ভাগের এক ভাগও ইলিশ কেনা-বেচা নেই।

নাছির মাঝি ঘাটের জেলে মহসিন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ইলিশের আয়ের ওপর নির্ভরশীল আমার পরিবারের পাঁচ সদস্য। মাছ হলে খাবার জোটে, না হলে অভাবে থাকি।

একই এলাকার জেলে আব্দুল কুদ্দুস মাঝি ঢাকাটাইমসকে বলেন, পরিবারের আট সদস্য নিয়ে চরম কষ্টের মধ্যে রয়েছি। এভাবে চলতে থাকলে না খেয়ে মরতে হবে।

এদিকে আড়ৎদাররা ইলিশের ওপর নির্ভর করে জেলেদের মাঝে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন। মেঘনায় মাছ পাওয়া গেলে তা বিক্রি করে একটা নিদিষ্ট অংকের মুনাফা অর্জন করবেন এ আশায় রয়েছেন তারা।

ভোলা সদরের তুলাতুলি ঘাটের আড়ৎদার ইউনুছ ও খালেক ঢাকাটাইমসকে বলেন, জ্যৈষ্ঠ মাস থেকে ইলিশের মৌসুম শুরু, কিন্তু সে তুলনায় নদীতে মাছ নেই।

নাছির মাঝি মৎস্যঘাটের আড়ৎদার মো. এরশাদ ঢাকাটাইমসকে বলেন, ইলিশের মৌসুমে প্রতিদিন এ ঘাট থেকে তিন/চার লাখ টাকার ইলিশ ঢাকায় পাঠানো হয়, কিন্তু এ মৌসুমে মাছ ধরা না পড়ায় মাত্র ৪০/৫০ হাজার টাকার মাছ যাচ্ছে।

এ ব্যাপারে ভোলা সদর উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান ঢাকাটাইমসকে বলেন, গত কয়েক বছর থেকে ইলিশ মৌসুমের সময়সীমা পরিবর্তন হয়েছে। এতে ভরা মৌসুমে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না। তবে আগস্ট মাসের মাঝামাঝি ইলিশ ধরা পড়তে পারে।

এই কর্মকর্তা বলেন, জলবায়ু পরির্তনের কারণে এমনটি হচ্ছে। তবুও এ বছর প্রচুর ইলিশ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/৩১জুলাই/প্রতিনিধি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

মির্জাপুরে তৈরি পোশাকের দোকানে আগুন, মালামাল পুড়ে ছাই

বাড়ি ফেরার পথে লাশ হলেন বৃদ্ধ সুরুজ আলী

জাজিরায় কৃষকদের দুই দিনব্যাপী কন্দাল ফসল চাষের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন

কালকিনিতে পুলিশের তাড়া খেয়ে বৃদ্ধের মৃত্যুর অভিযোগ

বাসর করেই স্বামী পলাতক! শ্বশুরবাড়িতে অবস্থান নববধূর

বগুড়ার তিন উপজেলা নির্বাচনে মনোয়‌নে বৈধতা পে‌লেন ৩৫ জন

মহেশপুর সীমান্তে ৪০টি স্বর্ণের বারসহ দুজন আটক

ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের খোঁজ নিলেন ঢাকা টাইমস সম্পাদক আরিফুর রহমান দোলন

রায় জালিয়াতি: শিবচরের প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গ্রেপ্তার

কেএনএফ চাইলে সমঝোতার মাধ্যমে স্বাভাবিক অবস্থায় আসতে পারে, বান্দরবানে র‌্যাব ডিজি

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :