দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি কাল, আনন্দে মেতেছে সাবেক ছিটবাসী

লালমনিরহাট প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ৩১ জুলাই ২০১৭, ১৮:৪৫

ছিটমহল বিনিময়ের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি মঙ্গলবার (১ আগস্ট)। ২০১৫ সালের ঐতিহাসিক এই দিনে ৬৮ বছরের বন্দিদশা থেকে মুক্তি পায় বর্তমান বিলুপ্ত ছিটমহলের নব্য বাংলাদেশিরা।

গত বছরের মত এবারও নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে দিবসটি উদযাপন করার প্রস্ততি নিয়েছে বিলুপ্ত ছিটমহলবাসী।

সোমবার দুপুরে লালমনিরহাট সদর উপজেলার ভিতরকুটি বিলুপ্ত ছিটমহলে গেলে চোখে পড়ে সাজানো বিশাল প্যান্ডেল। সবার চোখে-মুখে আনন্দ। ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা মেতেছে হৈ হুল্লোরে।

তারা জানায়, সোমবার ৩১ জুলাই রাত ১২টার পর জাতীয় সঙ্গিত গেয়ে মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের মধ্যদিয়ে শুরু হবে তাদের অনুষ্ঠানমালা।

মঙ্গলবার ১ আগস্ট সকালে জাতীয় সংগীতের তালে তালে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করবে নব্য বাংলাদেশিরা। পরে বেলা ১১টায় একটি বিজয় র‌্যালি বের হয়ে বিলুপ্ত ছিটমহলের আঁকা-বাঁকা পথ প্রদক্ষিণ করবে।

বিলুপ্ত ছিটের মানুষদের সাথে এ আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে র‌্যালিতে সরকার দলীয় স্থানীয় নেতৃবৃন্দসহ সমাজের সর্বস্তরের লোকজন অংশ গ্রহণ করবে। এছাড়া আনন্দ র‌্যালিতে বিলুপ্ত ছিটের শিশু-কিশোর ও বয়স্ক শত শত নারী পুরুষ অংশ নেবে। র‌্যালি শেষে শুরু হবে দেশীয় নৃত্ব। এতে সব বয়সের নারী-পুরুষ যে যার মত নেচে গেয়ে আনন্দ-উল্লাস করবে।

পরে দুপুর গড়িয়ে গেলে বিতরণ করা হবে খিচুরি। এভাবে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলবে তাদের আনন্দ-উল্লাস।

অপরদিকে ছিটলমহল বিনিময়ের ২য় বছরপূর্তিতে জেলার হাতিবান্ধা উপজেলার বাঁশকাটা বিলুপ্ত ছিটমহলের অনুষ্ঠানে যোগ হচ্ছে ভিন্ন মাত্রা। এখানে দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলবে হা-ডু-ডু, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলাসহ বিভিন্ন শিশুতোষ খেলাধুলা।

সন্ধ্যার পর আয়োজন করা হয়েছে দেশীয় পালাগানের আসরসহ মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

এদিকে গত দুই বছরে পাল্টে গেছে বিলুপ্ত ছিটমহলের দৃশ্যপট। যেদিকে চোখ যায় উন্নয়নের চিহ্ন চোখে পড়ে। সন্ধ্যা হলে জ্বলে উঠছে বৈদ্যুতিক বাতি। এখানকার বাসিন্দরা পেতে শুরু করেছে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা, কৃষিঋণসহ সরকারি সকল সুযোগ-সুবিধা। পেয়েছে জাতীয় পরিচয়পত্র। এছাড়া রাস্তা পাকাকরণসহ তৈরি হয়েছে নতুন রাস্তা, কালভাট ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ৩১ জুলাই মধ্যরাতে ছিটমহল বিনিময়ের মাধ্যমে ৬৮ বছরের বন্দিজীবনের অবসান ঘটে ভারত-বাংলাদেশের ১৬২টি ছিটমহলের কয়েক হাজার মানুষের। এরমধ্যে ১১১টি বাংলাদেশের এবং ৫১টি ভারতের ভূ-খণ্ডের সাথে যুক্ত হয়। বাংলাদেশের ১১১টির মধ্যে কুড়িগ্রাম জেলায় ১২টি, লালমনিরহাটে ৫৯টি, পঞ্চগ্রাম জেলায় ৩৬টি এবং নীলফামারী জেলায় রয়েছে ৪টি বিলুপ্ত ছিটমহল। লালমনিরহাট জেলার ৫৯টি বিলুপ্ত ছিটমহলের মধ্যে সদর উপজেলায় ২টি, হাতিবান্ধা উপজেলায় ২টি ও বাকি ৫৫টির অবস্থান পাটগ্রাম উপজেলায়। তবে পাটগ্রামে ৫৫টি বিলুপ্ত ছিটমহলের মধ্যে ১৭টিতে কোন জনবসতি না থাকায় এগুলোকে আবাদি জমি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

(ঢাকাটাইমস/৩১জুলাই/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :