আপনি ভণ্ড, স্বৈরাচার: ঢাবি উপাচার্যকে শিক্ষার্থীরা
‘আপনি বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও টকশোতে মুক্তিযুদ্ধের কথা বলেন। আপনি সবসময় মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বুকে ধারণ করেন। কিন্তু আপনি কতটুকু সেটি মান্য করেন? সেই বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। কারণ টানা দুইবার উপাচার্যের ক্ষমতায় থাকার পরেও আপনি ডাকসু নির্বাচন দিতে পারেননি। এর দ্বারা আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বৈরতন্ত্র কায়েম করেছেন। আপনি একজন ভণ্ড, স্বৈরাচার।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে উদ্দেশ্য করে এ কথা বলেছেন ডাকসু নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ক মাসুদ আল মাহদী। বুধবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পদদেশে এক মানববন্ধন এ কথা বলা হয়।
অবিলম্বে ডাকসু নির্বাচন ও ছাত্রদের উপর শিক্ষদের হামলার বিচারের দাবিতে এই কর্মসূচির ডাক দেয় অন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে উপাচার্যকে উদ্দেশ্য করে বলা হয়, ডাকসু নির্বাচন না দিয়ে হলে হলে দখলদার বাহিনী দ্বারা ছাত্রদের নির্যাতনের সুযোগ করে দেয়া হচ্ছে। আর শিক্ষার্থীরা হলে উঠলে তাকে তাদের বিভিন্ন কর্মসূচিতে নিতে বাধ্য করা হচ্ছে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী আসাদুল হক বলেন, ‘আপনি প্রথমবার উপাচার্য হওয়ার পর আপনার ডাকসু নির্বাচন দেওয়ার অঙ্গীকার পূরণ করেননি।’
১৯৯০ সালে এরশাদ সরকারের পতনের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়নি। প্রতিটি সরকারের আমলেই উপাচার্যরা দায়িত্ব নিয়ে নির্বাচন দেয়ার অঙ্গীকার করলেও নানা জটিলতায় আটকে যাচ্ছে তা। সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদও এই নির্বাচনের জন্য তাগাদা দেন। কিন্তু তারপরও কোনো অগ্রগতি হয়নি।
গত ২৯ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নির্বাচনে সিনেট অধিবেশনে ডাকসু নির্বাচনের দাবি জানাতে যাওয়া শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষকদের হাতাহাতি হয়। এ সময় কয়েকজন শিক্ষক শিক্ষার্থীদেরকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেন। আর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে হাতাহাতিতে এক শিক্ষকের আঙ্গুল ভেঙে যায় বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে।
এই ঘটনার পর থেকে আবারও ডাকসু নির্বাচনের প্রসঙ্গটি সামনে এসেছে। শিক্ষার্থীরা এখন ওই নির্বাচনের পাশাপাশি ২৯ জুলাইয়ের ঘটনার বিচারও দাবি করছেন।
মানববন্ধনে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ও আন্দোলনকারীদের অন্যতম রাকিবুল হাসান বলেন, ‘ছাত্র প্রতিনিধি থাকলে আজ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এতো অন্যায় করতে পারতো না। তারা আজ কিছু হলেই প্রশাসন দিয়ে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করে। ডাকসু থাকলে তারা শিক্ষার্থীদের অধিকার হনন করতে পারত না।’
ডাকসু নির্বাচন না হওয়ার বিষয়ে শিক্ষার্থীদের এসব অভিযোগের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘এই সমস্যা নিয়ে ফোনে কথা বলা কঠিন। আপনি এক সময় আসুন, বিষয়টি বিস্তারিত বুঝিয়ে বলব।’
কাটাইমস/০২আগস্ট/এসএইচ/ডব্লিউবি