ফরহাদ মজহারের অপহরণ মামলার প্রতিবেদন পেছাল
কবি, প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট ফরহাদ মজহারের অপহরণ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ১০ সেপ্টেম্বর নতুন তারিখ ধার্য করেছে আদালত।
বুধবার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য থাকলেও তদন্ত কর্মকর্তা তা দাখিল না করায় ঢাকা মহানগর হাকিম মাজহারুল ইসলাম নতুন তারিখ ধার্য করেন।
এর আগে মামলাটিতে গত ৬ জুলাই নাজমুস সাদাত সাদী হানিফ পরিবহনের এক কর্মচারী এবং গত ১০ জুলাই অর্চনা নামে এক নারী সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন।
গত ৩ জুলাই ভোরে রাজধানীর শ্যামলী এলাকার বাসা থেকে বের হওয়ার পর ফরহাদ মজহারকে অপহরণ করা হয়েছে মর্মে আদাবর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন তার স্ত্রী ফরিদা আখতার। এর আগেই এই অভিযোগ পেয়ে তাকে উদ্ধারে তৎপরতা শুরু করে আইনশৃঙ্খল বাহিনী।
ফরহাদ মজহারের মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে খুলনায় তার অবস্থান শনাক্ত করে পুলিশ। সেখানে তার দুটি সম্ভাব্য অবস্থানে অভিযান চালিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে খুলনার পরিচিত একটি রেস্টুরেন্টে তিনি খাবার খেয়েছিলেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। এরপর খুলনা থেকে ঢাকার পথে একটি বাসে মিস্টার গফুর নামে টিকিট কাটেন ফরহাদ মজহার। যশোরের অভয়নগর এলাকায় বাসে তল্লাশি চালিয়ে রাতেই তাকে উদ্ধার করা হয়। পরদিন সকালে ঢাকায় আনার পর তাকে নেয়া হয় মিন্টো রোডের গোয়েন্দা কার্যালয়ে।
সেখানে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন তিনি। এরপর আদালত তাকে নিজ জিম্মায় বাড়ি ফেরার অনুমতি দেন।
পরে পুলিশ প্রধান এ কে এম শহীদুল হক সংবাদ সম্মেলন করে জানান, অর্চনা নামে এক নারীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক ছিল ফরহাদ মজহারের। ওই নারীরে রাজধানীর একটি ক্লিনিকে গর্ভপাতও করার তিনি। এরপর ওই নারী আবার গর্ভবতী হন। আর তার জন্য স্ত্রীর কাছ থেকে টাকা যোগাড় করতেই বাসা থেকে বের হয়েছিলেন ফরহাদ মজহার। আর খুলনা থেকে ওই নারীর মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টে তিন ১৫ হাজার টাকা পাঠানও।
ওই দিন বাসা থেকে বের হওয়ার পর স্ত্রী ফরিদা আখতারকে ১০ বার এবং অর্চনাকে ছয় বার ফোন করেন ফরহাদ। এসব ফোনালাপের একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে এবং বাকিগুলো পুলিশের কাছে রয়েছে। আবার যেদিন ফরহাদ কথিত অপহৃত হয়েছিলেন বলে দাবি করা হচ্ছিল, সেদিন খুলনা নিউমার্কেটে তার স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়ানো এবং একটি দোকানে টাকা গুণে গুণে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে পাঠানোর ভিডিও প্রকাশ হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
ফরহাদ মজহারকে এসব ভিডিওর বিষয়ে সম্প্রতি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে। এ সময় তার স্ত্রী ফরিদা আখতারও উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু ফরহাদ কোনো জবাব দিতে পারেননি। আবার ৪ জুলাই বারডেম হাসপাতালে ভর্তির পর একটি বিদেশি গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ফরহাদ মজহার বলেছিলেন, তার সঙ্গে কী হয়েছে সেটা তিনি গণমাধ্যমকে বলবেন। তিনি চুপ থাকবেন না। কিন্তু সে কথাও রাখেননি তিনি। বাসায় যাওয়ার পর থেকে মোবাইল ফোন বন্ধ রেখেছেন তিনি। বা্ইরের কারও সঙ্গে কথাও বলছেন না ফরহাদ মজহার।
ঢাকাটাইমস/২আগস্ট/আরজে/এমআর