ছয় মাস আটকে রেখে ‘ধর্ষণ’: চাচার বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, টাঙ্গাইল
 | প্রকাশিত : ০৩ আগস্ট ২০১৭, ১১:৫৪

টাঙ্গাইলের সখিপুরে কলেজ ছাত্রীকে পরিত্যক্ত বাড়িতে ৬ মাস ১৭দিন আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগে চাচার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আটকে রাখার সময় মেয়েটিকে প্রায়ই নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে অচেতন রাখা হতো বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে। আসামির নাম বাদল মিয়া। তিনি ‘জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু পরিষদ’ নামে একটি সংগঠনের নেতা।

গত মঙ্গলবার মেয়েটির ভাই বাদল মিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করেন বলে জানিয়েছে সখীপুর থানা পুলিশ। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাকছুদুল আলম বলেন, ‘কলেজছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। মেয়েটিকে উদ্ধারের পর থেকেই বাদল মিয়া পলাতক রয়েছে।’

টাঙ্গাইল পুলিশ সুপার মাহবুব আলম বলেন, ‘এ ঘটনায় অভিযুক্ত বাদলের বিরুদ্ধে সখিপুর থানায় ধর্ষিতার ভাই বাদী হয়ে একটি মামলা করেছে। ঘটনার পক্ষে-বিপক্ষে নানান তথ্য উপাত্ত আমাদের হাতে এসেছে। ধর্ষককে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’

তরুণীটি ঢাকাটাইমসকে বলেন, একটি ছেলের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ওই ছেলেকে বিয়ে করতে তিনি চাচা বাদল মিয়ার সাহায্য চান। আর বাদল মিয়া তাকে বিয়ে করিয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। গত ১১ জানুয়ারি প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে সকালের দিকে তিনি আমাকে তার জঙ্গলের একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে যেতে বলেন।

‘তার কথা মতো আমি ওই বাড়িতে গেলে আমাকে ঘরে আটকে রেখে সন্ধ্যায় ছেলেটিকে সাথে নিয়ে আসবেন বলে চলে যায়। পরে সন্ধ্যার দিকে কিছু খাবার নিয়ে এসে আমাকে জানায় অর্ধেক কাজ হয়েছে, বাকি কাজ কাল হবে, তাই আজ রাত এখানেই থাকতে হবে। তার কথামতো আমি থেকে যাই এবং তার আনা খাবার খাই। ওই খাবার খাওয়ার পর আমার আর কিছু মনে নেই। পরের দিনও একই কথা বলে রাতে এসে খাবারের সাথে নেশা জাতীয় জিনিস মিশেয়ে আমাকে অচেতন করে রাখতো। আমার কথা বলা ও নড়াচড়া করার কোন শক্তি থাকতো না। প্রথম দিকে নিয়মিত আসলেও পরে কয়েকদিন পর পর খাবার দিতো আর খাবারের সাথে নেশা জাতিয় দ্রব্য মিশিয়ে অচেতন করে ধর্ষণ করতো’- মেয়েটির বর্ণনা ছিল এমন।

মেয়েটি বলেন, ‘সবশেষ পাঁচ দিন না খেয়ে থাকার পর কিছুটা চেতনা ফিরে আসে। এসময় প্রতিবেশীরা ঘরের তালা ভেঙে আমাকে উদ্ধার করে। পরে স্বজনদের জানালে তারা আমাকে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।’

মেয়েটির মামা মামা বলেন, তার ভাগ্ন নিখোঁজের পর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে তিনি আসামি বাদলের সহযোগিতাও নিয়েছিলেন। পরে বাদল তাদেরকে সখিপুর থানার সামনে বসিয়ে রেখে ভেতর থেকে ফিরে এসে জানায় জিডি করতে হবে না।

বাদল মিয়া তখন মেয়েটির মামাকে বলেন, ‘তোমার ভাগ্নি কোথায় আছে আমি তা জানি। এখন জিডি করলে তার ক্ষতি হতে পারে এবং নতুন সংসার ভেঙে মেয়েটি কলঙ্কিত হতে পারে।’

মেয়েটির মামা বলেন, ‘আমার ভাগ্নির মা না থাকায় আর সে পালিয়ে বিয়ে করে ভাল আছে জেনে আর জিডি করা হয়নি। অথচ তাকে ঘরে আটকে রেখে সে (বাদল) দিনের পর দিন নাটক করেছে।’

টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক জাকিয়া রশিদ (শাফি) বলেন, ‘ওই ছাত্রীকে হাসপাতালে আনার পর তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। শারীরিক পরীক্ষা করা হয়েছে। রিপোর্ট পেলে আরো বিস্তারিত জানা যাবে।’

ঢাকাটাইমস/০৩আগস্ট/আরকে/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :