পিনাক-৬ লঞ্চ দুর্ঘটনার তিন বছর কাল: স্বজনদের ক্ষোভ

সাগর হোসেন তামিম, মাদারীপুর
 | প্রকাশিত : ০৩ আগস্ট ২০১৭, ২২:০০

উত্তাল পদ্মা। এর মাঝে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই লঞ্চ। আর সেই খাম-খেয়ালির বলি হয়ে পদ্মায় সলিল সমাধি হতে হয় শতাধিক যাত্রীকে। তিন বছর আগে ৪ আগস্ট এই দিনে কাওরাকান্দি ঘাট থেকে মাওয়ার উদ্দেশে ছেড়ে আসা পিনাক-৬ লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাইয়ের কারণে পদ্মার বুকে তলিয়ে যায়। সরকারিভাবে ৪৯ যাত্রীর লাশ উদ্ধার করা হলেও কার্যত এখনো শতাধিক যাত্রীর খোঁজ মিলেনি। আর স্বজনদের ক্ষোভ, এতো কিছুর পরেও থেমে নেই লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই। আর নৌ-কর্তৃপক্ষ বলছে, আরো জনবল বাড়ালে নৌ-দুর্ঘটনা রোধ সম্ভব।

ঈদের ছুটিতে বাড়িতে এসেছিল মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার পৌরসভার বাসিন্দা মেধাবী ছাত্রী হিরা, স্বর্ণা আর লাকী। আনন্দ-উল্লাসে পরিবারকে মাতিয়েও রেখেছিল। কিন্তু ২০১৪ সালের ৪ আগস্ট পদ্মার বুকে পিনাক-৬ কেড়ে নিল তাদের তরতাজা প্রাণ। এক মেয়ের মৃতদেহ পেলেও বাকি দুজনের খোঁজ আজোও পাইনি। তাই তো তাদের পরিবারে যেন শোকের পাহাড়। লঞ্চ ডুবির তিন বছর পেরিয়ে গেলেও তাদের খোঁজ নেইনি কেউই। এই পরিবারের ক্ষোভ, এখনো কি বন্ধ হয়েছে লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই?

নিহত স্বর্ণার পিতা নূরুল হক হাওলাদার জানান, প্রতি বছর ৪ আগস্ট আসবে, তবে আমার সন্তানরা আর আসবে না। আমি চাই, আগামীতে আর যেন আমার মতো সন্তানহারা কেউ না হয়। অতিরিক্ত লঞ্চ বোঝাই বন্ধ করতে হবে।

জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুল ইসলাম জানান, সরকারিভাবে ওই ঘটনায় ৪৯ জন যাত্রীর লাশ উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে ২৮টি লাশ পরিবারকে বুঝিয়ে দেয়া হয় আর ২১ জনের পরিচয় নিশ্চিত না হওয়ায় শিবচর পৌরকবর স্থানে বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে দাফন করা হয়। নিখোঁজ থাকে আরো ৫৩ জন। অন্যদের হদিস মেলেনি।

তবে একাধিক নিখোঁজ যাত্রীর পবিবার দাবি করেছে, এখনো নিখোঁজের তালিকায় রয়েছে অন্তত শতাধিক যাত্রী। তারা সরকারি উদাসীনতাকেই এর জন্যে দায়ী করছেন।

জেলার কালকিনি উপজেলার ডাসার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাজী সবুজের পরিবারে এই দুঘর্টনায় নিহত হয় চার জন। দুজনের মৃতদেহ পাওয়া গেলেও বাকি দুজন পাইনি।

কাজী সবুজ বলেন, সরকার আমাদের স্বজনদের মৃতদেহ উদ্ধারে কোন ভূমিকা রাখেনি।

আর নৌযান চলাচল ও যাত্রীসেবা যাদের উপর ন্যাস্ত, তারাই সরকারের জনবলের দুর্বলতাকে দুষছেন। এমনই এক কর্মকর্তা, নৌপথে আরো পুলিশ বাড়ানোর দাবি করেন।

মাদারীপুরের কাঠালবাড়ি ফেরি ঘাটের বিআইডব্লিউটিসির সহকারী ম্যানেজার মোমিন উদ্দিন জানান, আমাদের সার্ভিস আরো সুন্দর করতে নৌ-পুলিশের পরিমাণ আরো বাড়াতে হবে। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের আরো যত্নবান হতে হবে।

কাঠালবাড়ি লঞ্চ মালিক সমিতির নেতা বাদশা চৌকিদার বলেন, লঞ্চ সংখ্যা বাড়ানো হয়নি। আগের চেয়ে লঞ্চ আরো বড় করা হয়েছে। লঞ্চের ফিটনেসসহ সব ধরনের যাত্রীসেবা নিশ্চয় করি থাকি।

নৌপথে আরো বেশি কঠোর নজরদারির দাবি, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যাতায়াতকারী ২১ জেলার যাত্রীদের।

(ঢাকাটাইমস/৩আগস্ট/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :