গাজীপুরে সড়কে প্রাণ গেল তিন কলেজছাত্রীসহ পাঁচজনের

গাজীপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৭ আগস্ট ২০১৭, ১৮:৩২ | প্রকাশিত : ০৭ আগস্ট ২০১৭, ১৬:০০

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মাস্টারবাড়ি এলাকায় কাভার্ড ভ্যান ও লেগুনার সংঘর্ষে তিন কলেজছাত্রীসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এসময় আহত হন আরও সাতজন। হতাহতদের উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

একসঙ্গে তিন ছাত্রী মারা যাওয়ায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে ইকবাল সিদ্দিকী কলেজে। ভারাক্রান্ত মন নিয়ে নিহতদের দেখতে হাসপাতালে আসছেন কলেজের শিক্ষক ও সহপাঠীরা। স্বজনদের কান্না আর আহাজারিতে হাসপাতাল এলাকায় বইছে শোকের হাওয়া।

নিহতরা হলেন, রাজেন্দ্রপুর ইকবাল সিদ্দিকী কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরিন রিমি, জান্নাতুল ফেরদৌস খাদিজা, ফারহানা আক্তার শিখা। তাদের সবার বাড়ি মাস্টার বাড়ি এলাকায়। নিহত অপর দুই পুরুষের নাম পরিচয় জানা যায়নি।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সোমবার বিকাল চারটায় মাস্টারবাড়ি এলাকায় ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে আসা একটি কাভার্ডভানের পেছনে রাজেন্দ্রপুর থেকে ছেড়ে আসা লেগুনা সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে ইকবাল সিদ্দিকী কলেজের দুই কলেজ ছাত্রীসহ চারজন মারা যান। হতাহতদের উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে সেখানে সাদিয়া আফরিন রিমি নামের অপর এক ছাত্রী মারা যান। আহতদের মধ্যে গাজীপুর নগরীর ভুরুলিয়ার ছায়াতরু এলাকার শহীদুল ইসলাম, সদরের রাজেন্দ্রপুরের শরীফুল ইসলাম, হোতাপাড়া এলাকার মামুনসহ আরও অজ্ঞাতনামা দুইজনকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া আহতদের মধ্যে গিয়াস উদ্দিন, রেজাউল করিম ও সবুজ নামের তিন লেগুনা যাত্রীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

নিহতের স্বজন ও শিক্ষকরা জানান, নিহত তিন ছাত্রী সাদিয়া আফরিন রিমি, ফারহানা আক্তার শিখা এবং জান্নাতুল ফেরদৌস খাদিজা ইকবাল সিদ্দিকী কলেজের একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। তাদের সবার বাড়ি সালনা ও মাস্টারবাড়ি এলাকায়। তিন মেধাবী ছাত্রীকে অকালে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন স্বজনরা।

হাসপাতালের বারান্দায় বসে আহাজারি করছেন নিহত রিমির মামা ও তার কয়েকজন স্বজন।

রিমির মামা জানান, দুপুরে কলেজ ছুটির পর সহপাঠীদের সঙ্গে নিয়ে লেগুনায় করে বাড়ি ফিরছিলেন রিমি। কিন্তু দুর্ঘটনায় অকালে হারিয়ে গেছে তাদের প্রিয় রিমি। এই শোক কোথায় রাখবেন বলে ফের কান্নায় ভেঙে পড়েন।

একই অবস্থা হাসপাতাল মর্গের সামনে ও আশেপাশের এলাকায়। স্বজনদের আহাজারি আর কান্না নির্বাক করে দিচ্ছে হাসপাতালে আসা সাধারণ মানুষকে। এলাকাবাসী এবং পুলিশের সরব উপস্থিতিতে হাসপাতাল যেন লোকারণ্য।

শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক প্রণয় কুমার দাস ভূষণ ঢাকাটাইমসকে জানান, নিহতদের মরদেহ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের মধ্য থেকে গিয়াস উদ্দিন, রেজাউল করিম ও সবুজ নামের তিন লেগুনা যাত্রীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, অনুমোদনহীন লেগুনাগুলো বেপরোয়াভাবে চলাচলের কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। অনেক অল্প বয়েসী চালক যাদের কোনো লাইসেন্স নেই তারাই চালাচ্ছে এসব লেগুনা। এতে মহাসড়কে মৃত্যুর মিছিল থামছে না। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ প্রশাসনও নির্বিকার।

নাওজোড় হাইওয়ে থানার সহকারী উপপরিদর্শক বাবুল আক্তার ঢাকাটাইমসকে জানান, ময়মনসিংহ থেকে ঢাকাগামী কাভার্ড ভ্যানের সঙ্গে একইগামী লেগুনার সংঘর্ষে তিন কলেজ ছাত্রীসহ মোট ৫জন মারা গেছেন। নিহত দুইজন পুরুষের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। তাদের বয়স ৩০-৩৫ বছরের মধ্যে। তবে এদের মধ্যে লেগুনা চালক রয়েছে কী না তা বলা যাচ্ছে না। দুর্ঘটনায় কে দায়ী তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতিসহ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

এদিকে, পোড়াবাড়ি এলাকায় আলাদা দুর্ঘটনায় শাহ আলম নামে অপর এক ব্যক্তি মারা যান। নিহত শাহ আলম পিরোজালী এলাকার জিলহক আলীর ছেলে।

(ঢাকাটাইমস/০৭আগস্ট/প্রতিনিধি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :