‘পূর্ণিমা’ নামে একটি সিনেমা হল ছিল

আলী আকবর
 | প্রকাশিত : ১০ আগস্ট ২০১৭, ১৬:১৬

একটা সময় চিত্তবিনোদনের অন্যতম উপকরণ ছিল সিনেমা। পরিবারের সবাই মিলে হলে গিয়ে সিনেমা দেখে আনন্দ উপভোগ করতো। ঈদ উপলক্ষে নতুন ছবি মুক্তি পাওয়ার প্রতিযোগিতা ছিল লক্ষণীয়। রেডিওতে নতুন ছবির বিজ্ঞাপন শুনতাম একজন সিরিয়াস শ্রোতা হিসাবে। সে সময়ের সিনেমাগুলো ছিল পরিবারের সবাইকে নিয়ে উপভোগ করার মত। আনন্দের পাশাপাশি কিছু শিক্ষণীয় বিষয় থাকতো। অনেককে দেখেছি হলে সিনেমা দেখে আবেগে কেঁদে ফেলছে।

এক পর্যায়ে গুণী নির্মাতার সংখ্যা কমে যায়। ঢাকাই চলচ্চিত্র তার ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলে। ফলে আনন্দের অন্যতম উপকরণ সিনেমা দর্শকপ্রিয়তা হারায়। সিনেমা হলগুলো হয়ে পড়ে দর্শকশূণ্য। হল মালিক ব্যবসায় ক্ষতি গুণতে থাকেন। তাই সিনেমাহল একসময় পরিণত হয় মার্কেট বা অন্যকিছুতে।

শিক্ষা ও সংস্কৃতির কেন্দ্র ঢাকাতে অনেক সিনেমা হল ছিল। কালক্রমে হলগুলোর অধিকাংশই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। পরিণত হয়েছে মার্কেট বা অন্যকিছুতে। এরই ধারাবাহিকতায় কারওয়ান বাজার এলাকায় অবস্থিত পূর্ণিমা সিনেমাহলটি ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে। হয়তো সেখানে গড়ে উঠবে সুরম্য অট্টালিকা। একসময় মানুষ বলবে এখানে একটি সিনেমা হল ছিল। নাম ছিল ‘পূর্ণিমা’ যা শুধুই স্মৃতি হয়ে থাকবে।

পাদটীকা: প্রায় তিন দশক আগে চালু হয়েছিল পূর্ণিমা হল। গত ৩০ মার্চ বিকেলে ‘প্রেমী ও প্রেমী’ সিনেমা প্রদর্শনের পর বন্ধ করে দেওয়া হয় এই হল। সিনেমা হলের মালিকেরা তখন জানিয়েছেন, সিনেমা হলের জায়গায় নির্মাণ করা হবে দুটি ২০ তলা ভবন। আগামী বছরের শুরুতে নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করার ইচ্ছা তাঁদের। ৩১ মার্চ হলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হয়েছে। বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাস-সংযোগ। এখন পুরো ভবন ভাঙা হচ্ছে। বাংলা সিনেমার জৌলুশময় সময়ে পূর্ণিমা সিনেমা হল চালু হয়। ১৯৮৮ সালে শাবানা, আলমগীর ও জসিম অভিনীত ‘বিশ্বাসঘাতক’ চলচ্চিত্র প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে তার যাত্রা হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে হল ভেঙ্গে বহুতল ভবন করার পর তার কিছু অংশে নতুন করে প্রেক্ষাগৃহ করা হচ্ছে। কিন্তু ‘পূর্ণিমা’ হলের এমন ভাগ্য নেয়। সাংবাদিকদের এই তথ্যই দিয়েছে মালিকপক্ষ।

আলী আকবর: আরকাইভিস্ট

সংবাদটি শেয়ার করুন

মতামত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :