তেঁতুলিয়ায় টানা বর্ষণে ১৫ গ্রাম প্লাবিত
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়েছে ১৫টি গ্রাম। এর সাথে দুর্ভোগে পোহাচ্ছে উপজেলার সর্বস্তরের মানুষ। ২৪ ঘণ্টায় ৩২৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার অফিস।
গত বৃহস্পতিবার বৃষ্টিপাত রেকর্ড ছিল ১৮২.৯ মিলিমিটার এবং শুক্রবারে ২১৩.৯ মিলি মিটার। গতকাল আকাশে বাতাসে আদ্রর্তা ছিল ১০০% । ফলে আরো বৃষ্টিপাত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে টানা প্রবল বর্ষণে উপজেলার ডোবা-নালা, পুকুর ও নদীগুলো জলসীমা অতিক্রম করছে। শ্রাবণের শেষ সময়ে ভারী বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে বিপদসীমায় অবস্থান করছে সীমান্তবর্তী নদী মহানন্দার পানি। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও পানি উঠেছে। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। প্লাবিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সাময়িক ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। গত চার দিনের অবিরাম বর্ষণে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ভাসমান, দিনমজুর খেটে খাওয়া মানুষও।
শনিবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার সীমান্তবর্তী ধামনাগছ, খয়খাটপাড়া, দরগাসিং, ভক্তিডাংগী, পিঠাখাওয়া, ব্রহ্মতোল, রনচন্ডী, সর্দারপাড়া, বুড়িমুটকী, মহল্লাল জোত, বাবুয়ানী জোত, কালারাম জোত ও সাহেবজোতসহ আরও কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হতে দেখা যায়। এই গ্রামগুলো সীমান্তবর্তী হওয়ায় টানা বর্ষণ আর নদী মহানন্দার উজানের ঢলে প্লাবিত হয়ে পড়ে। মহানন্দার পানি বৃদ্ধির কারণে স্র্রোতে সরকারিপাড়া, কালারামজোত, ইসলামপুর, কাশিমগঞ্জ এলাকার অনেক ফসলের ক্ষেত ভেঙে নদীগর্ভে চলে গেছে। আর মহানন্দা ও করতোয়া নদীর পানিতে তলিয়ে গেছে বসতবাড়ি, আমন ক্ষেত, রাস্তাঘাট।
এদিকে জেলার তেতুলিয়া উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের ভেরসা নদীর ওপর নির্মিত ভেরসা প্রকল্পের একটি গেট ভেঙে গেছে। গেটগুলো না খোলায় আশপাশের এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
তবে বিপদসীমার অনেক নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এ প্লাবন। ভারী এই বর্ষণে উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকায় ফসলের ক্ষয়ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিড়ালীজোত হতে তফাজ্জল হোসেন জানান, টানা এই বর্র্ষণে রাস্তা অতিক্রম করে পানি প্রবেশ করে আমারসহ চারটি গ্রামের প্রায় চারশ একর জমিতে রোপা লাগানো আউস ও আমন ধানের ক্ষতি হলো। এর সাথে ক্ষষতিগ্রস্ত হয়েছে মাছচাষিরা। উপজেলা দর্জিপাড়া গ্রামে বড় বিল্লায় তাজিরুল ইসলাম তাজু মাছ ছেড়েছিলেন বেশ কয়েক মণ। এদিকে কাজী ডাংগীতে সদর ইউপি চেয়ারম্যান কাজী আনিছুর রহমান ও ইউনুস মাছ ছেড়ে ছিলেন প্রায় ২০০ মণ। গতকাল থেকে ভারী বর্ষণে পুকুর ডুবে স্রোতের সাথে মাছ পুকুর হতে চলে গেছে বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে এসব প্লাবিত এলাকাগুলো পরিদর্শন উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল করিম শাহীন ও নির্বাহী অফিসার মো.সানিউল ফেরদৌস। নির্বাহী অফিসার সানিউল ফেরদৌস জানান, উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের সম্ভাবনাময়ন জলাবদ্ধতা এলাকা পরিদর্শন করেছি। এখনো আশ্রয় কেন্দ্রে গ্রামবাসীদের নেয়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। এছাড়া আমার কাছে পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী আছে। তবে মহানন্দা নদীর পানি আরও দেড় ফিট বাড়লে বাংলাবান্ধা-তেঁতুলিয়া মহাসড়কের পশ্চিমপাশের বেশ কিছু বাড়িঘরের মানুষকে সরতে হতে পারে। উপজেলা প্রশাসন বন্যা মোকাবেলায় যথেষ্ট তৎপর আছে।
(ঢাকাটাইমস/১২আগস্ট/প্রতিনিধি/জেবি)