শোক দিবস: এতিমদের খাবার বিতরণ করল কাঞ্চন মুন্সি ফাউন্ডেশন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৪ আগস্ট ২০১৭, ২১:০৮ | প্রকাশিত : ১৪ আগস্ট ২০১৭, ১৯:১৫

একদিন বাদে আগস্টের কালরাত। ১৫ আগস্ট। জাতীয় শোক দিবস। দিনটিকে কেন্দ্র করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পরিবারের শাহাদাতবরণকারী সদস্যদের আত্মার মাগফিরাতের জন্য এতিমদের মধ্যে খাবার বিতরণ ও দোয়া করা হয়েছে।

সোমবার ফরিদপুর-১ আসনের আলফাডাঙ্গা, বোয়ালমারী ও মধুখালী উপজেলার বিভিন্ন এতিমখানায় এই আয়োজন করেছিল কাঞ্চন মুন্সি ফাউন্ডেশন। সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান দোলন মধুখালী ও বোয়ালমারীর বেশ কয়েকটি এতিমখানায় উপস্থিত হয়ে দোয়ায় অংশ নেন।

প্রথমেই দুপুর দুটার দিকে তিনি মধুখালী পৌর এলাকার গোন্দারদিয়া দারুসসালাম মাদরাসা ও এতিমখানায় যান। সেখানে জরো হয় একই উপজেলার গোন্দারদিয়া দারুল এহসান মাদরাসা ও এতিমখানা, মধুপুর এতিমখানা ও আসিয়া মাদরাসার বাবা-মা হারা কয়েকশ শিক্ষার্থী।

গোন্দারদিয়া দারুসসলাম মাদরাসায় দোয়ার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা করেন ঢাকাটাইমস ও সাপ্তাহিক এই সময় সম্পাদক আরিফুর রহমান দোলন। তিনি বলেন, ‘আজকে এমন একটা সময় আপনাদের সামনে দাঁড়িয়েছি, যে মাসটি শোকের। আমরা যার ডাকে, যার নেতৃত্বে স্বাধীনতা পেয়েছি; বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে-তিনি শেখ মুজিবুর রহমান। তাকে নির্মমভাবে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট স্বপরিবারে হত্যা করা হয়েছে। চক্রান্তকারীরা, খুনিরা শুধু বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করেনি, তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বকেও ধুলিস্যাৎ করতে চেয়েছিল। আমরা সবাই সেই মহান মানুষটির জন্য এবং তার সঙ্গে যারা শহিদ হয়েছেন তাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করব।’

স্বাধীনতা সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর ডাকের প্রসঙ্গটি তুলে ধরে তরুণ এই নেতা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু যদি স্বাধীনতার জন্য ডাক না দিতেন তাহলে এই অঞ্চল তথা সারা বাংলাদেশের যে উন্নয়ন, উন্নয়নের যে জোয়ার, যে সুফল ভোগ করছি সেটা পারতাম না। কারণ পশ্চিম পাকিস্তানিরা ১৯৪৭ সাল থেকে একাত্তর সাল পর্যন্ত নানাভাবে শুধু শোষণ করে গিয়েছে। কোনোভাবেই বাঙালিরা যেন তৎকালীন সময়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে সর্বাত্মকভাবে সেই চেষ্টায় করেছে। বঙ্গবন্ধু তাদের বিরুদ্ধে ছিলেন। বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন বাঙালিদের বিজয় যেন সারাবিশ্ব দেখতে পারে। সর্বত্র লেখা হয়।’

বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের গুরুত্ব সেদিন বঙ্গবন্ধু অনুধাবন করেছিলেন উল্লেখ করে আরিফুর রহমান দোলন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ডাকে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। পাকিস্তানি হায়েনারা এটা ভুলতে পারেনি। তাদের মদদে, তাদের সহযোগী খুনি চক্র বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করে। আমরা দোয়া করব তার দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানাকে আল্লাহ দীর্ঘদিন বাঁচিয়ে রাখুন। শেখ হাসিনা আমাদের প্রধানমন্ত্রী। তিনি নানাভাবে আমাদের সবাইকে, দেশবাসীকে কীভাবে স্বস্তিতে, শান্তিতে রাখা যায় সে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। সেই ভাবেই কাজ করছেন। তাকে অনেকবার হত্যার চেষ্টা হয়েছে। এই আগস্ট মাসেই তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলেও তার প্রাণনাশের চেষ্টা করা হয়েছে। তারপরেও মহান রাব্বুল আলামিন তাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন।’

কাঞ্চন মুন্সি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘ইসলামকে বঙ্গবন্ধু কতখানি ভালোবাসতেন, তার কন্যা শেখ হাসিনার কাজে তার প্রমাণ পাওয়া যায়। পিতার প্রতি ভালবাসার টানে তার স্বপ্ন বাস্তবায়নের কাজ তিনি শুরু করেছেন। সারাদেশে প্রত্যেকটি উপজেলায় একটি করে মডেল মসজিদ এই সরকার করছে। প্রকল্পটি একনেকে পাস হয়েছে। কয়েক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে এই মডেল মসজিদ নির্মাণে। পরে প্রতিটি ইউনিয়ন এবং গ্রামে এই মডেল মসজিদ নির্মাণ করা হবে। এইভাবে ইসলামের সেবায়, মানবতার সেবায় নিরলসভাবে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা কাজ করে যাচ্ছেন। আমাদের সবার উচিৎ তাকে সহযোগিতা করা। আগামীতেও যেন তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হন।’

সরকারের উন্নয়ন কাজের তথ্য তুলে ধরে আরিফুর রহমান বলেন, ‘সারাদেশে ব্যাপক উন্নয়ন হচ্ছে। আমাদের অঞ্চল যেন আরো সুন্দর হয়, সেভাবেই যেন আমরা তাকে সহযোগিতা দিই। পাশাপাশি যেন আমরা এমন জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারি যেই জনপ্রতিনিধি আপনাদের সমস্যা, আপনাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার কথা তার কাছে তুলে ধরতে পারে। আপনাদের কাছে এসে, আপনাদের পাশে থেকে সব দেখার, জানার সুযোগ পান এবং সেইভাবে সমাধানের চেষ্টা করেন।’

শেখ হাসিনার সরকারকে আগামীতে ক্ষমতায় আনতে জনগণকে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই অঞ্চলের অবকাঠামোগত উন্নয়নে আমরা কাজ করছি। ভাঙা রাস্তাঘাট মেরামত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। নতুন রাস্তা হচ্ছে। আরও বেশি কাজ করা যাবে, যদি শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাকেন। আমাদের এলজিআরডি মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন খুবই আন্তরিক। আমরা তার মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের দাবি-দাওয়া তুলে ধরব।’

পরে আরিফুর রহমান দোলন বোয়ালমারী উপজেলার ছোলনা সালামিয়া হাফেজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানায় যান। সেখানেও পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট কালরাতে শহিদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয়। এছাড়া আলফাডাঙ্গা উপজেলার চান্দরা নূরানী তালিমুর কোরআন মাদরাসা, গোপালপুর নূরানী হাফেজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানা, বাজড়া শামসুল উলুম কওমী মাদরাসা ও এতিমখানা, কামরগ্রাম কওমী মাদরাসা ও এতিমখানায় দোয়ার আয়োজন করেছিল কাঞ্চন মুন্সি ফাউন্ডেশন। দোয়া শেষে বাবা-মা হারা সন্তানদের মধ্যে খাবার খাবার বিতরণ করা হয়।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন- ফরিদপুর জেলা পরিষদ সদস্য শেখ শহীদুল ইসলাম, মির্জা আহসানুজ্জামান আজাউল, কৃষকলীগ কেন্দীয় কমিটির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক শেখ শওকত হোসেন, ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ইনামুল হাসান প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/ ১৪ আগস্ট/ প্রতিনিধি/ এইচএফ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

ফেসবুক আইডি ক্লোন করে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ, যুবক গ্রেপ্তার

ফরিদপুর প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দের সঙ্গে পুলিশ সুপারের মতবিনিময়

পতেঙ্গায় ফিশিং বোটের ইঞ্জিন বিস্ফোরণে ৪ জন দগ্ধ

চট্টগ্রামে ঈদকে সামনে রেখে জালনোট চক্রের ৩ সদস্য গ্রেপ্তার

বরিশালে নামাজের সময় মসজিদের এসি বিস্ফোরণ

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দ্রুতগতির লেনে যাত্রী নামানোর অপরাধে ৩৩ যানবাহনকে মামলা 

বরগুনা প্রেসক্লাব দখলের মামলায় ৭ জন কারাগারে  

পর্যটকদের আকৃষ্ট করছে তাহিরপুরের শহীদ সিরাজ লেক

ঝিনাইদহে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু

ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :