সিনহার উপস্থিতিতে বঙ্গভবনে কাদের কেন: রিজভী

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বঙ্গভবনে থাকার সময় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কীভাবে সেখানে যান সে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী।

মঙ্গলবার দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন বিএনপি নেতা। তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রপতির সঙ্গে প্রধান বিচারপতির বৈঠক হতেই পারে, কিন্তু একটি রাজনৈতিক দলের সাধারণ সম্পাদক কীভাবে সেই বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারেন?’।

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণার রায় প্রকাশের পর উদ্ভুত পরিস্থিতিতে শনিবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার সঙ্গে বৈঠক করেন ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী লীগের অবস্থান জানাতে এই বৈঠক হয় বলে জানিয়েছেন তিনি।

সোমবার ওবায়দুল কাদের দলের অবস্থান জানাতে কথা বলেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সঙ্গে। তিনি যখন বঙ্গভবনে যান, তখন সেখানে ছিলেন প্রধান বিচারপতিও।

বৈঠক থেকে বের হয়ে ওবায়দুল কাদের জানান, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে কথা হলেও প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সেদিন তার কোনো কথা হয়নি।

রিজভী বলেন, ‘তাহলে আওয়ামী লীগ সরকার কি তাদের ক্ষোভ প্রশমিত করার জন্য রাষ্ট্রপতিকে ব্যবহার করছেন? আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাদের দলের সিদ্ধান্ত তাঁকে জানাতে যাওয়া ও প্রধান বিচারপতির সঙ্গে বৈঠক করা, এটি রায়ে পরিবর্তন আনতে চাপ দেয়া হচ্ছে বলে জনগণের মনে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। এটি বিচার বিভাগের স্বাধীনতার ওপর নির্বাহী বিভাগের নগ্ন হস্তক্ষেপ।’

‘ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের পর আওয়ামী লীগের নেতারা যেভাবে বিচারপতিদের হুমকি ধামকি দিচ্ছেন, আবার বৈঠক করছেন, এটাকে দেশবাসী স্বাভাবিক ঘটনা বলে মনে করেন না। তারা বিচার বিভাগকে বিতর্কিত করতে নিজেদের ঘুম হারাম করে ফেলেছেন। এটি শুভ লক্ষণ নয়।’

ওবায়দুল কাদের অলিম্পিক প্রতিযোগিতার ন্যায় দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন বলেও মন্তব্য করেন রিজভী। বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতির সঙ্গে ওবায়দুল কাদেরের বৈঠক শুধু উদ্বেগের নয়, ন্যায়বিচারের ইতিহাসকে কলঙ্কিত করার অশুভ অপচেষ্টারই অংশ।’

‘আওয়ামী লীগ যেভাবে জোর করে রায় পাল্টিয়ে দেয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে তা বিচারবিভাগের স্বাধীনতায় সরাসরি হস্তক্ষেপের সামিল। আওয়ামী লীগ গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করে ম্যানুফ্যাকচার্ড জনমত তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে।’

রিজভী বলেন, ‘মহামান্য রাষ্ট্রপতি দলীয় এমপিদের দ্বারা নির্বাচিত হলেও নির্বাচিত হওয়ার পর রাষ্ট্রপতি প্রতিষ্ঠানটি একটা স্বতন্ত্র মর্যাদা লাভ করে এবং তিনি তখন রাষ্ট্রের অভিভাবকে পরিণত হন, আওয়ামী লীগের নন।’

এসময় বেশ কয়েকটি জেলায় নেতাকর্মীদের ওপর সরকারি দলের নেতাকর্মীরা হামলা করেছেন অভিযোগ করে এর নিন্দা জানান রিজভী।

ঢাকাটাইমস/১৫আগস্ট/বিইউ/ডব্লিউবি