যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন দিনাজপুর, বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট

নিজস্ব প্রতিবেদক, দিনাজপুর
| আপডেট : ১৫ আগস্ট ২০১৭, ১৭:৩২ | প্রকাশিত : ১৫ আগস্ট ২০১৭, ১৭:২১

দিনাজপুরে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে জেলার কমপক্ষে ছয় লাখ মানুষ। অবর্ণনীয় দুর্ভোগ বেড়েছে বানভাসি মানুষের। এ জেলার সাথে গত চার দিন ধরে বিভিন্ন স্থানের সড়ক ও রেল যোগাযোগ বিছিন্ন রয়েছে। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্যের তীব্র সংকট।

এদিকে গত তিন দিনে বন্যায় পানিতে ডুবে, সাপে কাটায় এবং দেয়ালচাপায় জেলায় ১৭ জনের মৃত্যুর কথা স্বীকার করেছেন জেলা প্রশাসক মীর খায়রুল আলম। নিখোঁজ রয়েছে আরও এক শিশু। বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার জন্য সেনাবাহিনী রাতভর বন্যা দুর্গত মানুষের সাহায্যে কাজ করে যাচ্ছে।

চরম দুর্ভোগে আছেন দিনাজপুরের বানভাসি মানুষ। বাড়ি-ঘর ডুবে গিয়ে গৃহহীন হয়ে পড়া এসব মানুষের দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্য সংকট। বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ছয় লাখ মানুষ। প্রশাসন ও বিভিন্ন সংগঠন ত্রাণ সহায়তায় এগিয়ে এলেও তা পর্যাপ্ত নয় বলে অভিযোগ পানিবন্দি মানুষের।

জেলার সব নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পুনর্ভবা নদীর পানি বিপদসীমার ৭৮ সেন্টিমিটার এবং আত্রাই নদীর পানি ৫০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানির তোড়ে শহরের মাহুতপাড়া তুঁতবাগান এলাকায় দিনাজপুর শহররক্ষা বাঁধের ৫০ মিটার ভেঙে গেছে। এছাড়াও দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন স্থানে নদীর বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। গৃহহীন এসব মানুষ আশ্রয় নিয়েছে বিভিন্ন বাঁধ, উঁচু এলাকা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।

জেলার দুই হাজার ৯৩০টি শিক্ষা প্রতষ্ঠানের অধিকাংশই বানভাসি মানুষের আশ্রয়কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বন্ধ রয়েছে শিক্ষা কার্যক্রম।

বন্যায় দিনাজপুরের অধিকাংশ সড়ক ও মহাসড়ক পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় দিনাজপুর জেলার সঙ্গে বিভিন্ন উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। চার দিন ধরে বন্ধ রয়েছে পার্বতীপুর-পঞ্চগড় রেল যোগাযোগ। হিলি স্থলবন্দর পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় শনিবার থেকে বন্ধ রয়েছে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম। বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়ে দিনাজপুর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের গুদাম ঘর। এতে পরীক্ষার খাতাসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্রের ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।

স্থানীয় প্রশাসনকে সহায়তার জন্য সেনাবাহিনীর ৬৬ পদাতিক ডিভিশনের ৫২ জন সদস্য বন্যা দুর্গত মানুষের সাহায্যে কাজ করে যাচ্ছে। বন্যা দুর্গত মানুষকে উদ্ধারসহ বিপুল পরিমাণ গবাদি পশু ও গৃহস্থালি সামগ্রী উদ্ধার করছে তারা। এছাড়াও সেনাবাহিনী ভেঙে যাওয়া বাঁধ নির্মাণ, সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ এবং স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করছে।

দিনাজপুর জেলা প্রশাসক মীর খায়রুল আলম জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই দুই লাখ টাকা এবং ৮০ মেট্রিক টন চাল বন্যাদুর্গতদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও বন্যার্তদের জন্য ৫০ লাখ টাকা এবং ৩০০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ চেয়ে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

বিএনপির মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলগীর এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম মঙ্গলবার বন্যা দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। বন্যায় দুর্গতদের মাঝে বিতরণ করেছেন ত্রাণ সামগ্রী।

(ঢাকাটাইমস/১৫আগস্ট/এসএএস/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :