তবুও থেমে নেই রাজিব, একটু সহযোগিতার আকুতি

এম বেলাল হোসাইন, সাতক্ষীরা
| আপডেট : ১৬ আগস্ট ২০১৭, ১৪:১০ | প্রকাশিত : ১৬ আগস্ট ২০১৭, ০৮:২৫

সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার বড়দল ইউনিয়নের মাদিয়া গ্রামের হতদরিদ্র কার্ত্তিক চন্দ্র গাইনের বড় ছেলে রাজিব গাইন (১৯) বিরল রোগে আক্রান্ত। তার শরীরের বাম দিকটাজুড়ে ছোট বড় অসংখ্য টিউমারের মতো ফোলা মাংসে ঢেকে গেছে। বিশেষ করে হাত ও পিঠের অংশের ফোলা অংশগুলোর আকৃতি দিন দিন বাড়ছে। কিছু দিন পরপর হাতের ফোলা অংশ ফেটে রক্ত বের হয়। সঙ্গে প্রচণ্ড যন্ত্রণা। বাম হাতে তেমন বল পান না।

বিরল রোগে আক্রান্ত রাজিব ঢাকাটাইমসকে জানান, বুঝতে শেখার পর থেকে তার এরকম অবস্থা। শরীরের এরকম অবস্থা নিয়েও থেমে নেই তিনি। প্রতিনিয়ত যন্ত্রণাকে সঙ্গী করে জীবন সংগ্রামে বড়দল আফতাব উদ্দীন কলেজিয়েট স্কুল থেকে ২০১৫ সালের এসএসসিতে জিপিএ ৩.৬০ ও ২০১৭ সালে জিপিএ ৩.৭৫ পেয়ে এইসএসসি পাস করেছেন। স্নাতক শ্রেণিতে ভর্তির জন্য অপেক্ষায় আছেন রাজিব।

জেলপাতুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা শুরু তার। শরীরের অবস্থা ভালো হলে হয়তো আরও ভালোভাবে পড়াশোনা করতে পারতেন তিনি।বেশিক্ষণ পড়লে ঘাড়ের বাম দিকসহ সমস্ত বাম পাশে প্রচণ্ড যন্ত্রণা করতে থাকে।

রাজিবের মা মমতা গাইন ঢাকাটাইমসকে জানান, জন্মের পর থেকেই তার ছেলের এরকম অবস্থা। প্রথমে তার বাম হাতটা অস্বাভাবিক ছিল। খুব নরম ছিল তার বাম হাত। সে সময় সাতক্ষীরা শিশু হাসপাতালে নেয়া হলে বেশ কিছু পরীক্ষা শেষে ডাক্তার জানান, রাজিবের চিকিৎসা সাতক্ষীরাতে নাই।

মা জানান, তার যখন বয়স চার বছর তখন অনেক কষ্টে কিছু টাকা সংগ্রহ করে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতে নেয়া হয়। ভারতের কলকাতার বেলভূমি নার্সিং হোমের ডা. আশিষ মুখার্জীর কাছে একটানা ছয় মাস চিকিৎসা শেষে তার শরীরের অবস্থার উন্নতি হয়। দেশে ফিরে আসার সময় ডাক্তার জানান, ১৫ বছর বয়সে তার একটা অপারেশন করতে হবে। কিন্তু অভাবের সংসারে টাকার অভাবে ছেলেকে আর ভারতে নেয়া সম্ভব হয়নি। কয়েক বছর ভালো থাকার পর তার সমস্ত বাম পাশে টিউমারের মতো হয়ে ফুলতে থাকে।সঙ্গে প্রচণ্ড যন্ত্রণা।

রাজিবের মা জানান, তিন বছ আগে তার হাতের ফোলা অংশ ফেটে রক্ত বের হতে শুরু করলে খুলনা বাদশা মেমোরিয়াল হাসপাতাল ও সার্জিকালে চিকিৎসা নেয়া হয়। সেখানে এক মাস চিকিৎসা শেষে কোনো উন্নতি না হওয়ায় বাড়ি ফিরে আসেন তারা।

খুলনা থেকে ফিরে সর্বশেষ ঢাকা জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতাল, ইউনাইটেড হাসপাতাল এবং বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে চিকিৎসা নেন রাজিব। সেখানেও অবস্থার কোনো উন্নতি না হওয়ায় নিরাশ হয়ে বাড়িতে ফিরেন। তার বারা ঢাকাতে ফেরি করে মাদুর বিক্রি করে যে টাকা আয় করেন সেটা দিয়ে সংসার চালাতেই কষ্ট হয়। তার উপর ছোট ছেলের পড়ার খরচ। এতকিছুর পর তার এ বিরল রোগের চিকিৎসা করা তাদের পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠে না। বাধ্য হয়েই যন্ত্রণায় ছটফট করা ছাড়া রাজিব ও তার পরিবারের আর করার কিছুই নেই।

রাজিবের আকুতি সরকার, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বা কোনো স্বহৃদয় ব্যক্তি যেন তার প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। এই কঠিন যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেছেন। রাজিবের মোবাইল ফোন নম্বর: ০১৭৫০৮০৬৬৫১।

(ঢাকাটাইমস/১৬আগস্ট/প্রতিনিধি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :