জয়পুরহাটে ৫০০ চালকল উৎপাদনে যায়নি

শামীম কাদির, জয়পুরহাট
 | প্রকাশিত : ১৭ আগস্ট ২০১৭, ০৭:৫১

এমনিতেই ধানের সংকট, তার ওপর টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে দেশের খাদ্যশস্যের মোকাম জয়পুরহাট জেলায় চালের বাজারে অস্থিরতা নেমে এসেছে। কমতে থাকা চালের দাম এ মাসে ফের বাড়তে শুরু করেছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে চালের দাম আরো বাড়বে বলে জানিয়েছে মিল মালিক ও ব্যবসায়ীরা।

এ ছাড়া জয়পুরহাটের প্রায় ৫০০ চালকল এবার উৎপাদনে যায়নি বলে জানা গেছে। এর মধ্যে চুক্তি না করায় ২৪৪টি চালকলকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে সরকার। তারা দুই বছর চাল সরবরাহ করতে পারবে না। এসব কারণে এই চালের মোকামে সংকট চলছে, যা চালের বাজারে প্রভাব ফেলছে।

জয়পুরহাট জেলার ৫২০টি চালকলের মধ্যে ১০টি অটোমেটিক, বাকি সব হাসকিং মিল। এর মধ্যে বেশ কজন মিল মালিক পুঁজি হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন। তাদের প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে নিলাম হয়ে গেছে।

বাকি যেসব হাসকিং মিল চালু আছে সেগুলোর ৯৬ শতাংশ পুুঁজি সংকট, ধানের দাম বৃদ্ধি ও শ্রমিক না পাওয়া, বৃষ্টি-বন্যার কারণে উৎপাদনে যেতে পারেনি বলে জানিয়েছেন মিল মালিকরা।

পুরানাপৈল এলাকার উজ্জল রাইস মিল, হিচমী এলাকার মহির উদ্দিন রাইস মিলসহ ৫০০টি রাইস মিল চলতি মৌসুমে উৎপাদনে যায়নি। তিন ভাই রাইচ মিলের মালিক মো. কামরুজ্জামান জানান, এ বছর ধানের দাম অনেক বেশি। বেশি দামে ধান কিনে চাল তৈরি করে তেমন লাভ হয় না। শ্রমিক না পাওয়ার পাশাপাশি ব্যবসায় লোকসান খেয়ে সংকটে আছেন তিনি। এসব কারণে তিনি চলতি মৌসুমে চাল উৎপাদনে যেতে পারেননি। মিল মালিকদের সহযোগিতা করার জন্য সরকারকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান এই ব্যবসায়ী।

একই কথা বলছেন মহির উদ্দিন চাল কলের মালিক মহির উদ্দিন। তাদের ব্যবসা মন্দা যাচ্ছে বলে জানান। ধানের দাম গত বছরের চেয়ে প্রতি মণে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা বেড়েছে। এ অবস্থায় ধান কিনে চাল তৈরি করতে খরচ বাড়ছে। এতে তাদের পোষাচ্ছে না। এ ছাড়া রয়েছে ধানের সংকট।

গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে নতুন করে বেকায়দায় পড়ছে মিল মালিকরা। বেশির ভাগ মিলে ধান শুকানো ও চাল উৎপাদনের কাজ বন্ধ। এর সঙ্গে শ্রমিকরা পড়েছেন বেকায়দায়। দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করেন বলে তাদের আয় থাকে না উৎপাদন বন্ধ থাকলে।

কিছু কিছু চালকলে র্অডার থাকলেও তারা বৃষ্টির কারণে কাজ করতে পারছে না। চালকল মালিক বেলাল বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে ধান সিদ্ধ ও শুকাতে পারছি না। তাই চাতাল বন্ধ রয়েছে।’ এমন অবস্থা আরো কয়েক দিন থাকলে চালের বাজার ফের বাড়বে বলে আশঙ্কা করেন তিনি। জুলাই মাসের শুরুতে চাল আমদানি শুল্ক কমানোর ফলে জয়পুরহাট মোকামে চালের দাম বস্তা প্রতি ১০০ থেকে ২০০ টাকা কমেছিল। তবে সেই কমার প্রবণতা এখন আর নেই। বরং এক সপ্তাহে ৩০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে দাম।

জয়পুরহাট মোকামে মোটা চালের বাজার কিছুটা কম থাকলেও মিনিকেট চাল ৫০ কেজি বস্তা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫৩০ টাকা থেকে ২ হাজার ৫৬০ টাকায়। আগের তুলনায় ৫০ টাকা বেশি।

জয়পুরহাট চালকল মালিক সমিতির সভাপতি সামছুল আলম জানান, চলতি মৌসুমে ৯৬ ভাগ হাসকিং মিল মালিক চাতাল বন্ধ রেখেছেন ধান সংকটের কারণে। এর প্রভাবও বাজারে পড়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১৭আগস্ট/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :