নালিতাবাড়ীতে ভোগাই নদীর পাড়ে ধস

শেরপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৭ আগস্ট ২০১৭, ১৮:৩৭

শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে ভোগাই নদীর পাড়ে ধস শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত ত্রিশ ফুট গভীরে দেবে গেছে প্রায় দুইশ ফুট ভোগাই নদীর বাঁধ। ফলে আততঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে স্থানীদের মাঝে। এ জন্য অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনকে দায়ী করেছেন স্থানীয়রা।

উপজেলার নয়াবিল গ্রামের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ওই নদীর বাঁধে এ ধস দেখা দিয়েছে।

এলাকাবাসী জানায়, বুধবার ভোর থেকে হঠাৎ নয়াবিল বানিয়াপাড়ায় মানিক মিয়ার বাড়ির সামনে ভোগাই নদীর বাঁধে ধস শুরু হয়। মুহূর্তেই প্রায় ১শ ফুট এলাকার বাঁধ ধসে অন্তত ত্রিশ ফুট নদীর গভীরে ঢুকে যায়। একইভাবে মুকুল মিয়ার বাড়ির সামনে প্রায় ৪০ ফুট বাঁধে ধস নামে ও গভীরে দেবে যায়। এর আগে একই গ্রামের উত্তরাংশে জমিলার বাড়ি সংলগ্ন স্থানে আরও প্রায় ৭০ ফুট বাঁধ ধসে নদীর গভীরে দেবে যায়। এছাড়াও গত ১২ আগস্টের পাহাড়ি ঢলে নদীর উল্টোপাড়ে ফুলপুর এলাকার ক্ষুদিরাম নামে এক নাপিতের বসতবাড়ি নদীগর্ভে তলিয়ে যায়। ফলে ওই পরিবারটি এখন বাস্তুহারা। এসব ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। যে কোন মুহূর্তে আবারো পাহাড়ি ঢল নামলে ধসে যাওয়া ওইসব স্থান দিয়ে আকস্মিক বন্যার আশংকা করছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় দেলোয়ার হোসেন, শের মোহাম্মদ, আক্কাস আলী, শরু শেখসহ আরো অনেকেই অভিযোগ করেন, অপরিকল্পিতভাবে শ্যালো চালিত ড্রেজার বসিয়ে নদীর চর ছাড়াও তীরবর্তী এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করা হয়েছে। এমনকি নদীর তীর ঘেষে সুরঙ্গ করে ও বড় বড় গভীর গর্ত করে বালু উত্তোলন করা হয়েছে। বাধা দিলেও উত্তোলনকারীরা তা মানেনি। ফলে নদী এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছে। আশঙ্কাজনকহারে বাড়ছে নদী ভাঙন, ঘটছে নদী তীরবর্তী এলাকায় ধসের ঘটনা। এতে আবাদী জমিসহ ভিটেমাটি হারাতে বসেছেন আশপাশের মানুষ।

সদ্য ভূমিহীন ক্ষুদিরাম জানান, স্থানীয় প্রভাবশালীরা তার বাড়ির কাছে নদীর তীর ঘেঁষে বালু উত্তোলন করছে। বারবার বাধা দেয়ার পরও যখন সে মানছিল না, একপর্যায়ে ড্রেজারের পাইপ কুপিয়ে টুকরো টুকরো করে ফেলি। এরপরও তারা ক্ষমতার জোরে আমার বাড়ি সংলগ্ন তীরে সুরঙ্গ করে বালু উত্তোলন চালিয়ে যায়। এর ফলে গত ১২ আগস্ট দিনে-দুপুরে ভিটেমাটিসহ সবকিছু নদীগর্ভে তলিয়ে যায়।

নয়াবিল গ্রামের ইউপি সদস্য আজাহারুল ইসলাম বলেন, গত ১৫-২০ বছর আগেও এখানে কোন নদী ভাঙনের ঘটনা ঘটতো না। বর্তমানে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন ও পাহাড়ি ঢলের কারণে এ বছর ভয়াবহ ভাঙন শুরু হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ক্ষুদিরামের ঘর নদীতে তলিয়ে যাওয়ার সময় শেরপুরের জেলা প্রশাসক ও নালিতাবাড়ীর এসিল্যান্ড এখানেই উপস্থিত ছিলেন। সেদিন বন্যা ও পাহাড়ি ঢল পরিদর্শনে এসেছিলেন তারা।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ইউনুছ আলী দেওয়ান জানান, এ বছর পাহাড়ি ঢলের কারণে সৃষ্ট বন্যায় এ ইউনিয়নের ভোগাই নদীর হাতিপাগার ও নয়াবিল গ্রামে দুইটি ভাঙন সৃষ্টি হয় এবং ঢলের পানিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়। ধসে যাওয়া এসব জায়গায় এখনই ব্যবস্থা নেয়া না আগামীতে আরো ক্ষতি হবে।

নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তরফদার সোহেল রহমান জানান, আপাতত বাঁশের খুঁটি ও বালির বস্তা ফেলে প্রাথমিকভাবে পাহাড়ি ঢলের পানি ফেরাতে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এরপর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা হবে।

(ঢাকাটাইমস/১৭আগস্ট/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :