জুতা পরে জাতীয় পতাকা তোলায় মুসলিম অধ্যক্ষকে মারধর

প্রকাশ | ১৭ আগস্ট ২০১৭, ২১:২২ | আপডেট: ১৭ আগস্ট ২০১৭, ২১:২৯

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

ভারতের সংবিধানে কোথাও এমন নির্দেশ নেই। এমনকী দেশের প্রধানমন্ত্রীও জুতা পরে জাতীয় পতাকা তোলেন। সেনা কর্মকর্তারাও বাদ যান না। তা হলে তিনি কীভাবে অন্যায় কাজ করলেন? এই প্রশ্নটাই ছুড়েছিলেন মোহাম্মদ ইয়াকিন।কিন্তু লাভ হয়নি। জুতা পরে কলেজে জাতীয় পতাকা তোলার ‘অভিযোগে’ ছাড় পেলেন না তেলঙ্গানা রাজ্যের নিজামাবাদের জুনিয়র সরকারি কলেজের ওই অধ্যক্ষ।

১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবসের দিন তাকে কলেজের ভেতরে হেনস্থা তো করা হলোই, জোর করে বলানো হলো ‘জয় শ্রী রাম’ এবং ‘ভারত মাতা কি জয়’। এখানেই শেষ নয়, ওই অধ্যক্ষকে পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেয়ার হুমকিও দিল হেনস্থাকারীরা। গোটা ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠেছে ভারতীয় জনতা পার্টি(বিজেপি)’র ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের বিরুদ্ধে। ঘটনার কথা জানিয়ে পুলিশে লিখিতভাবে অভিযোগ করেন ইয়াকিন। মঙ্গলবারের এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১৫ জনকে আটক করা হয়েছে।

ঘটনার সূত্রপাত স্বাধীনতা দিবসের সকালে। ওই দিন তেলঙ্গানার নিজামাবাদের জুনিয়র সরকারি কলেজে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করছিলেন প্রিন্সিপাল মোহাম্মদ ইয়াকিন। সেই সময় ভিড়ের ভেতর থেকে কেউ একজন আওয়াজ তোলেন, ‘জুতাটা খুলে পতাকা তুলুন।’ এরপরে আরও কয়েকজন বেশ জোরেই প্রিন্সিপালকে জুতা খুলে পতাকা তোলার কথা বলেন। ততক্ষণে ইয়াকিনের পতাকা তোলা হয়ে গিয়েছে। শুরু হয়েছে জাতীয় সংগীত। এরমধ্যেই হঠাৎ ভিড়ের ভেতর থেকে বেরিয়ে কয়েকজন তাকে আক্রমণ করেন। কেন জুতা খুলে পতাকা তোলা হয়নি সেই অভিযোগে ওই প্রিন্সিপালকে ধাক্কাধাক্কির সঙ্গে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়।

জাতীয় সঙ্গীতের মাঝেই তাকে টেনেহিঁচড়ে সরিয়ে আনা হয়। ইয়াকিনের অভিযোগ, তাকে জোর করা হয় ‘ভারত মাতা কি জয়’ বলার জন্য। সেখানেই থামেনি হেনস্থাকারীরা। মুসলমান ওই শিক্ষককে বলতে বলা হয়, ‘জয় শ্রী রাম’। তাকে জবরদস্তি করা হয়। তিনি তা বলতে রাজি না হওয়ায়, হেনস্থাকারীরা ইয়াকিনকে পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়।

ইয়াকিনের দাবি, তিনি হেনস্থাকারীদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। ভারতীয় আইনে এমন কথা বলা নেই যে, জুতা খুলেই পতাকা উত্তোলন করতে হবে। এমনকী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও জুতো পরে পতাকা উত্তোলন করেন লালকেল্লায়। শুধু তাই নয়, হেনস্থাকারীদের ইয়াকিন সেনা কর্মকর্তাদের উদাহরণও দিয়েছিলেন বলে দাবি করেন।কিন্তু কোনও কথাতেই কাজ হয়নি।

হেনস্থাকারীদের মধ্যে একজন ভিডিও তুলছিলেন। সেই ভিডিওতেই দেখা গিয়েছে, ইয়াকিনকে হেনস্থা করা হচ্ছে। এমনকী তাকে যে বিভিন্ন স্লোগান দিতে বাধ্য করা হয়েছে, সেটাও দেখা গিয়েছে। ‘পাকিস্তান চলে যাও’ বলেও শোনা যায়।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

(ঢাকাটাইমস/১৭আগস্ট/এসআই)