দেশে নকল ডিম ও মাছের অস্তিত্ব নেই

প্রকাশ | ১৭ আগস্ট ২০১৭, ২১:৪৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

দেশের বাজারে নকল ডিম ও মাছের কোনো অস্তিত্ব নেই বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। তারা বলছে, এ নিয়ে এত দিন যা শোনা গেছে তা নিছকই গুজব ও অসত্য।

বৃহস্পতিবার ‘স্বাস্থ্যসম্মত কোরবানির মাধ্যমে জনগণের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণে গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক কর্মশালায় এ কথা জানান নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য অধ্যাপক ড. ইকবাল রউফ মামুন।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ আয়োজিত কর্মশালায় উপস্থাপিত প্রবন্ধে অধ্যাপক ইকবাল রউফ মামুন বলেন, ‘নকল ডিম ও মাছ বানানো কোনোভাবেই সম্ভব নয়। কারণ এগুলো নকল করতে যে প্লাস্টিক লাগবে তা কখনো খাওয়ার উপযোগী হবে না।

এ ছাড়া অত্যধিক উৎপাদন খরচও নকল ডিম কিংবা মাছের বাজারজাতকরণের সম্ভাবনাকে নাকচ করে দেয় বলে জানান এক বক্তা।

নকল ডিমের প্রচারণায় দেশের মানুষ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উল্লেখ করে অধ্যাপক মামুন বলেন, ‘আমাদের সন্তানরা ডিম খাচ্ছে না। তারা পুষ্টি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাদের সৃজনশীলতা নষ্ট হচ্ছে।’

এ সময় ডিমের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক। একটি ডিম থেকে ১১ ধরনের পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায়। সব ধরনের ভিটামিনের উপাদান একটি ডিমে থাকে, যেটা পৃথিবীর আর কোনো খাবারে থাকে না। আর সেটি থেকেই মানুষ বিমুখ হচ্ছে কোনো ধরনের যাচাই-বাছাই ছাড়া।

অধ্যাপক মামুন বলেন, ‘বরং ফাস্টফুড সবচেয়ে বেশি আতঙ্কের বিষয়। এতে পিএএইচের প্রভাব বেশি। পিএএইচ হলো একধরনের ক্ষতিকর পদার্থ যা মানুষের শরীরে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। পোড়া মাংশে এর পরিমাণ বেশি থাকে। আর এই খাবারটিই প্রতিদিন প্রতিনিয়ত খাচ্ছি আমরা। এ থেকে আমাদের সাবধান হতে বলেন তিনি।

আপেল নিয়েও দেশে ভুল ধারণা রয়েছে বলে জানান অধ্যাপক মামুন। আপেল দুই মাসেও কেন পচে না- মানুষের এ ধরণের কৌতূহলের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘এর কারণ আপেলের আবরণটা শক্ত ও ঘন। এটির সৃষ্টির বৈশিষ্ট্যই এ রকম। এ ছাড়া আপেল ইউরোপ-আমেরিকা থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে  যেতে এক মাসের বেশি সময় লেগে যায়। এ কারণে তারা এক ধরনের ওষুধ ব্যবহার করে, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়।’

শাকসবজিতে ফরমালিন দেয়ারও কোনো যুক্তি নেই জানিয়ে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের এই সদস্য বলেন, ‘শাকসবজি যদি ফরমালিনের মধ্যে ডুবিয়েও রাখা হয় তাতেও কাজ হবে না। কারণ শাকসবজিতে প্রোটিন খুব কম থাকে বিধায় এখানে ফরমালিনের কার্যকরিতা নেই। কারণ ফরমালিন প্রোটিনের সাথে বিক্রিয়া করে মিথিলিন ব্রিজ তৈরি করে বিভিন্ন প্রাণীজ নমুনা দীর্ঘদিন অপরিবর্তিত রাখতে পারে।’

কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমরা খাদ্য প্রক্রিয়াজাত করা থেকে শুরু করে খাবার টেবিলে যাওয়া পর্যন্ত নিরাপদ খাদ্য সরবরাহ করতে বদ্ধপরিকর। আমরা সেটি করব।’

বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মাহফুজুল হকের সভাপতিত্বে কর্মশালায় আরো বক্তব্য দেন নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য মাহবুব কবির, একাত্তর টেলিভিশনের পরিচালক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, এফএওর ন্যাশনাল টিম লিডার এ কে এম নুরুল আফসার।

(ঢাকাটাইমস/১৭আগস্ট/এমএম/মোআ)