ঠাকুরগাঁওয়ে বন্যায় আমনক্ষেত নষ্ট, বিপাকে কৃষকরা

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৮ আগস্ট ২০১৭, ১১:০৭

বন্যায় ঠাকুরগাঁও জেলার বেশিরভাগ আমনক্ষেতই পানির নিচে। ফলে বেশিরভাগ জমির আমন চারা পচে নষ্ট হয়ে গেছে। পানি নেমে তলিয়ে যাওয়ায় এখন চাষিরা পুরোদমে রোপন শুরু করেছেন। অন্যদের আমনের বীজতলা নষ্ট হওয়ায় কীভাবে নতুন করে আমন ধান লাগাবেন সে চিন্তায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

চলতি বছর ঠাকুরগাঁও জেলায় আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১ লক্ষ ৩৭ হাজার হেক্টর। আষাঢ় ও শ্রাবন মাসে এ জেলায় আমন ধানের চারা রোপন করার কথা। কিন্তু মৌসুমের শুরুতে সামান্য বৃষ্টি হলে তুলনামূলক নিচু জমিতে পানি জমলে চাষিরা আমনের চারা রোপন করেন। তারপর থেকে প্রায় একমাস চলতি বর্ষাকাল ছিল বৃষ্টিশূন্য। এ সময় জেলায় খরা পরিস্থিতি বিরাজ করায় আমন রোপন থমকে দাঁড়ায়। তারপরও অবস্থাসম্পন্ন কৃষকেরা জমিতে শ্যালোমেশিন কিংবা গভীর নলকূপ দিয়ে সেচ দিয়ে আমন ধানের চারা রোপন করে।

কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, শ্রাবনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেক জমিও চাষের আওতায় আসেনি। পরবর্তীতে আগস্টের প্রথম সপ্তাহে বৃষ্টিপাত শুরু হলে কৃষকেরা আমন ধান রোপন শেষ করে।

এদিকে ১০ আগস্ট থেকে শুরু হয় মুসলধারে বৃষ্টি।এতে জেলায় বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। খালবিল, নদী নালার পাশাপাশি বাড়িঘরে পানি উঠে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। বাড়িঘর ছেড়ে লোকজন সরকারি-বেসরকারি স্কুল-কলেজে আশ্রয় নেয়। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যা দুর্গতদের ত্রাণ ও নগদ টাকা সহায়তা দেয়া হয়। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান বন্যার্তদের সহায়তায় এগিয়ে আসে।

ইতোমধ্যে জেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। ৬৫টি আশ্রয়কেন্দ্র হতে লোকজন বাড়ি গেছেন। বন্যার পানির নিচে আমনক্ষেত টানা ৫-৭ দিন তলিয়ে থাকায় আমনের চারায় পচন ধরে বেশিরভাগ ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। কেউ কেউ জমিতে আবার রোপা রোপন শুরু করলেও বেশিরভাগ পড়েছেন বিপাকে।

সদর উপজেলার ঘনিমহেশপুর গ্রামের কৃষক নজিব উদ্দীন জানান, জমিতে সেচ দিয়ে আমন ধানের চারা রোপন করেছি। এতে প্রতি বিঘা জমিতে অতিরিক্ত ২ হাজার টাকা করে খরচ হয়েছে।

কৃষক জহির উদ্দীন জানান, বন্যার আগেই আমন ধান লাগানো শেষ করি। এখন আর চারা বা বিচন কোন কিছুই নেই। বন্যায় জমির লাগানো পচে নষ্ট হয়ে গেছে। এখন নতুন করে জমিতে লাগানোর মতো চারা নেই।

কৃষক আইয়ুব আলী জানান, বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারিভাবে সার বীজ অনুদান না দিলে অনেক কৃষক নতুন করে জমিতে ধান লাগাতে পারবেন না। ফলে ঠাকুরগাও জেলার আমন ধান উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এ ব্যাপারে কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক খন্দকার মাওদুদুল ইসলাম জানান, বন্যায় প্রায় ২০ হাজার হেক্টর জমির চারা পচে নষ্ট হয়ে গেছে। এজন্য কৃষকেরা নতুন করে জমিতে রোপা লাগানো শুরু করেছেন। তারপরও খতিগ্রস্ত কৃষকের খতি পুষিয়ে নিতে সরকারিভাবে সহযোগিতার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সহযোগিতা করা হবে।

(ঢাকাটাইমস/১৮আগস্ট/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :